নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘট প্রত্যাহার

প্রকাশিতঃ 7:33 pm | October 22, 2020

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাসে নৌযান শ্রমিকদের চলমান অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার(২২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে সরকার, নৌযান মালিক ও শ্রমিকদের ত্রিপক্ষীয় বৈঠক শেষে শ্রমিকরা ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আকতারুল ইসলাম জানান, বেতন-ভাতার সুযোগ-সুবিধাসহ বিভিন্ন দাবিতে নৌযান শ্রমিকরা গত সোমবার মধ্য রাত থেকে ধর্মঘট চালিয়ে আসছিলেন। বৈঠকে তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে শ্রমিকরা ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন।

এদিকে নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের বরিশাল জেলার সহসভাপতি একিন আলী মাস্টার সন্ধ্যায় বলেন, ‘ঢাকায় আমাদের কেন্দ্রীয় নেতারা বৈঠক করেছেন। সেখানেই আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্র থেকে এই খবর মোবাইল ফোনে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাহ আলম আমাদের জানিয়েছেন। আমরা আমাদের সংগঠনের নেতাকর্মীদের এই তথ্য জানিয়ে দিয়েছি। বিস্তারিত হয়তো আরো পরে জানাতে পারব।’

এ বিষয়ে আজ দুপুরে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, নৌশ্রমিকদের মূল দাবি খোরাকি ভাতা—অবশ্যই তাদের ন্যায্য দাবি। এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। ভাতাটা ন্যায্য। এর আগেও শ্রমিকরা ধর্মঘটে গিয়েছিল। আলোচনা করে সমাধান হয়েছে। শ্রমিকরা অসহায়। তারা শ্রম দিয়ে উপার্জন করে জীবিকা নির্বাহ করে।

বেতন-ভাতার সুযোগ-সুবিধাসহ ১১ দফা দাবি আদায়ে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের আওতাধীন আটটি সংগঠনের ডাকা এই ধর্মঘট গত সোমবার রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে শুরু হয়।

শ্রমিক ফেডারেশনের ১১ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- ১. বাল্কহেডসহ সব নৌযান ও নৌপথে চাঁদাবাজি-ডাকাতি বন্ধ করা। ২. ২০১৬ সালে ঘোষিত গেজেট অনুযায়ী নৌযানের সর্বস্তরের শ্রমিকদের বেতন প্রদান। ৩. ভারতগামী শ্রমিকদের ল্যান্ডিং পাস এবং মালিক কর্তৃক খাদ্যভাতা প্রদান। ৪. সব নৌযান শ্রমিকের সমুদ্র ও রাত্রিকালীন ভাতা নির্ধারণ। ৫. এনডোর্স, ইনচার্জ, টেকনিক্যাল ভাতা পুনর্নির্ধারণ। ৬. কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় নিহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ ১০ লাখ টাকা নির্ধারণ। ৭. প্রত্যেক নৌশ্রমিককে মালিক কর্তৃক নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র ও সার্ভিস বুক প্রদান। ৮. নদীর নাব্য রক্ষা ও প্রয়োজনীয় মার্কা, বয়া ও বাতি স্থাপন। ৯. মাস্টার/ড্রাইভার পরীক্ষা, সনদ বিতরণ ও নবায়ন, বেআইনি নৌচলাচল বন্ধ করা। ১০. নৌপরিবহন অধিদপ্তরের সব ধরনের অনিয়ম ও শ্রমিক হয়রানি বন্ধ এবং ১১. নৌযান শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

কালের আলো/এসবি/এমএম

Print Friendly, PDF & Email