খালেদার মুক্তির মেয়াদ বাড়ল ৬ মাস

প্রকাশিতঃ 6:18 pm | September 15, 2020

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ আরো ছয় মাস বাড়িয়েছে সরকার। এসময় খালেদা জিয়া নিজ বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন এবং দেশের বাইরে যেতে পারবেন না বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে দাখিল করা আবেদন এবং আইন ও বিচার বিভাগের আইনগত মতামতের আলোকে ‘দ্য কোড অব ক্রিমিন্যাল প্রসিডিউর’ এর ধারা-৪০১(১) এ দেওয়া ক্ষমতাবলে দু’টি শর্তে (বাসায় থেকে চিকিৎসা ও বিদেশ না যাওয়া) তার (খালেদা জিয়ার) দণ্ডাদেশ ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ছয় মাসের জন্য স্থগিত করা হলো।

প্রথম দফা মুক্তির মেয়াদ শেষ হলে গত ২৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে স্থায়ী মুক্তি চেয়ে আবেদন করা হয়। এছাড়া বিএনপি নেত্রীকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করানোর বিষয়েও তার পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে সেই দাবি বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। এরপর গত ৩ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানো সংক্রান্ত ফাইলে মতামত দিয়ে তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনারা নিশ্চয় জানেন খালেদা জিয়ার ভাই স্বাক্ষরিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ছয় মাসের জন্য তাকে বাসায় থেকে চিকিৎসা সুবিধাসহ অন্য সুবিধার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। আবারো ছয় মাস শেষের কাছাকাছি এলে খালেদার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার একটি আবেদন করেন আমার কাছে। তারপর আমি আইন মন্ত্রণালয়ের ব্যাখা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছিলাম। তাতে প্রধানমন্ত্রী বিবেচনা করে খালেদার মেয়াদকাল আরো ছয় মাস বাড়িয়েছেন। এতে আগে যে শর্তগুলো ছিল সেগুলো বহাল রাখা হয়েছে।

‘শর্তগুল হলো খালেদা জিয়া ঢাকার বাসায় থেকে চিকিৎসাসেবা নেবেন। এসময়ে তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। তারা আবেদনে অনেক কিছুই চেয়েছেন। তবে প্রধানমন্ত্রী যেগুলো বিবেচনা করেছেন সেগুলো আপনাদের জানালাম। এছাড়া তিনি তো এখনও জেলেবন্দি, শুধু বাসায় অবস্থান করছেন। ’

বিএনপির পক্ষ থেকে তারা বারবার বলছে খালেদার চিকিৎসা দেশে সম্ভব না এজন্য বিদেশ নিতে হবে। এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এগুলো কোর্টের বিষয়। সেখান থেকে তাকে অনুমতি দেবে কিনা সেটা কোর্ট সিদ্ধান্ত নেবে। আমাদের যেটুকু করণীয় সেটা তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে করেছি। এছাড়া আমাদের কোনো ডাক্তার বলেনি যে খালেদার চিকিৎসা বাংলাদেশে চলবে না।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ আদালত। রায় ঘোষণার পর খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রাখা হয়। এরপর ৩০ অক্টোবর এ মামলায় আপিলে তার আরও পাঁচ বছরের সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করেন হাইকোর্ট। একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন একই আদালত। রায়ে সাত বছরের কারাদণ্ড ছাড়াও খালেদা জিয়াকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।

কালের আলো/এসআর/কেএমএস

Print Friendly, PDF & Email