শেখ কামালের জন্মদিনে বশেফমুবিপ্রবির উপাচার্যের বাণী

প্রকাশিতঃ 4:25 pm | August 05, 2020

ডেস্ক রিপোর্ট, কালের আলো:

১৯৪৯ সালের ৫ আগস্ট বাঙালির মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের কোল আলোকিত করে জন্ম নেন বাংলাদেশের আধুনিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ, বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল।

‘৭৫ এর ১৫ আগস্ট ঘাতকের বুলেট তাঁর প্রাণ কেড়ে না নিলে হয়তো আজ শেখ কামালের বয়স হতো ৭১ বছর।

কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য যে, সাংগঠনিকভাবে দক্ষ ও দূরদর্শীদৃষ্টি সম্পন্ন বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের এই উজ্জ্বল নক্ষত্রকে হারিয়েছি।

শেখ কামাল ছিলেন একজন স্বনামধন্য ক্রীড়াবিদ ও সংগঠক এবং ষাটের দশকের অন্যতম তরুণ রাজনৈতিক নেতা। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি জেনারেল আতাউল গনি ওসমানীর এডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

তৎকালীন ঢাকার প্রধান প্রধান ক্লাবের হয়ে ক্রিকেটসহ অন্যান্য খেলায় সুনামের সাথে নিয়মিত অংশ নিয়েছেন।

সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও তাঁর উজ্জ্বল উপস্থিতি ছিলো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালেও ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। নাটক, খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে তিনি ছিলেন তৎকালীন ঢাকার যুব সমাজের মধ্যমণি। তাঁর ভরপুর প্রাণশক্তি তিনি সঞ্চারিত করেছিলেন সতীর্থ বন্ধু-স্বজন এবং নবীন বাংলাদেশের যুবশক্তির মাঝে।

তাঁর মধ্যে প্রাণিত হয়ে উঠেছিলো বঙ্গবন্ধুর আদর্শের শিখা এবং ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের অতুল সম্ভাবনা। আর এসব দেখেই তাঁর বিরুদ্ধে নানা গুজব রটাতে শুরু করে স্বাধীনতা বিরোধীরা। এর মধ্যে ব্যাংক ডাকাতির কথা উল্লেখযোগ্য। আসল কথা হচ্ছে, সেদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিনি ব্যাংক ডাকাতি রুখতে গিয়েছিলেন।

একজন রাষ্ট্রপ্রধানের ছেলে টাকা আয় করতে ব্যাংক লুট করতে হবে কেন? সুতরাং বোঝায়ই যায়- এটি মিথ্যা। স্বাধীনতার পর থেকেই দেশে-বিদেশে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীরা অপপ্রচার, মিথ্যা রটনা, কুরুচিপূর্ণ অভিযোগ তুলে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে তীব্র ষড়যন্ত্র শুরু করে।

আর এমনই এক আক্রমণের শিকার হন শেখ কামাল। কিন্তু আজ মিথ্যার আঁধার ছিন্ন করে জাতির সামনে উদ্ভাসিত বাংলার কৃতি সন্তান শেখ কামালের জীবন ও কর্ম।

১৫ আগস্টের কাল রাতে ঘাতকের বুলেট শেখ কামালের জীবন কেড়ে নিলেও জাতি প্রতিদিন তাঁর আদর্শের মশাল হাতে এগিয়ে যাচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ক্রীড়া ক্ষেত্রে যে অভূতপূর্ব সাফল্য বয়ে এনেছে তা সূচিত হয়েছিল শেখ কামালের হাত ধরেই।

আগস্ট মাস বাঙালির জীবনে শোকের। শেখ কামালের জন্ম আগস্টের ৫ তারিখে। আমরা তাঁকে হারিয়েছিও এই আগস্টে। এই শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। এদেশের তরুণেরা তাঁর আদর্শ ধারণ করে গড়ে তুলবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা।

বর্তমানে বিশ্বজুড়ে মহামারি করোনার থাবা। জাতীয় জীবনের এই ক্রান্তিলগ্নে আমরা গভীর ভালোবাসায় স্মরণ করি বীর মুক্তিযোদ্ধা, ক্রীড়া সংগঠক শহীদ শেখ কামালকে।

শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি বঙ্গবন্ধু, বঙ্গমাতাসহ তাঁর পরিবারের সকল শহীদ সদস্যবৃন্দকে । তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। আজকের বাংলাদেশে জাতি গঠনের যে লড়াই চলছে, সেই সংগ্রামের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত শেখ কামাল। জন্মদিনের এই ক্ষণে তাঁর প্রতি জানাই শ্রদ্ধাঞ্জলি।

অধ্যাপক ড. সৈয়দ সামসুদ্দিন আহমেদ
ভাইস-চ্যান্সেলর
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
মেলান্দহ, জামালপুর-২০১২

Print Friendly, PDF & Email