মোবাইল কলরেট কম তাই শুল্ক বাড়ানো হয়েছে : এনবিআর চেয়ারম্যান

প্রকাশিতঃ 9:15 pm | June 12, 2020

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

বর্তমানে কলরেট অনেক কম তাই মাত্র ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে, যা ব্যয়ের সক্ষমতা মানুষের আছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।

তিনি বলেন, মোবাইলে অপ্রয়োজনীয় কথা বলার প্রবণতা বেড়ে গেছে। তবে কথা বলার প্রবণতা কমানোর জন্য কলরেটে আরও ৫ শতাংশ শুল্ক বসানো হয়নি।

শুক্রবার (১২ জুন) নতুন অর্থবছরের (২০২০-২১) প্রস্তাবিত বাজেট-উত্তর এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

মোবাইল কলরেটে সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ কেন করা হলো এমন প্রশ্নের জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের একটা সমস্যা হচ্ছে কোনো কিছুর ওপর ডিউটি বাড়ানো হয় সেটা ২ পয়সা বাড়ানো হলো না দুই টাকা বাড়ানো হলো সেটা বিবেচনা না করে প্রথমেই আপত্তি আসে। মোবাইল চার্জের ক্ষেত্রে এই ভ্রান্ত ধারণা তৈরি হয়েছে। মোবাইলের কল রেট অনেক বেড়ে যাবে সাধারণ মানুষ সে ধারণা করছেন। হয়তো সে সুযোগ মোবাইল অপারেটররা নেওয়ার চেষ্টা করবে।

তিনি বলেন, যে সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হয়েছে সেটা হলো বর্তমানে ১০ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। সেখানে মাত্র ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। অর্থাৎ ১ টাকায় মাত্র ৫ পয়সা বাড়ানো হয়েছে। এজন্য কলরেট অনেক বেড়ে যাবে সাধারণ মানুষের কথা বলার ব্যয় বেড়ে যাবে এরকম আমরা মনে করি না। সাধারণ মানুষের সেই সক্ষমতা আছে। এই ৫ শতাংশ ব্যয় তারা বহন করতে পারবে।

তিনি বলেন, বর্তমানে মোবাইল কলরেটের হার এত কম যে অপ্রয়োজনীয় কথা বলার পরিমাণ বেড়ে গেছে। এতে কথা বলতে বলতে হাঁটতে হাঁটতে দুর্ঘটনার পরিমাণ বেড়ে গেছে। এটি শুধু এই প্রবণতা রোধ করবে সেটা নয়। তবে আমরা কথা বেশি বলাকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এ শুল্ক বাড়াইনি। বরং কলরেট খুব কম। তাই এক্ষেত্রে মাত্র ৫ শতাংশ শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। এতে এমন কোনো ক্ষতি হবে বলে মনে করি না।

রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রার বিষয়ে তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের প্রভাব থাকলে তাহলে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য অবশ্যই চ্যালেঞ্জ। করোনার প্রভাব না থাকলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের চেষ্টা করা যাবে। আমরা (এনবিআর) সেই চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত আছি।

তিনি আরও বলেন, রাজস্ব আয় বাড়ানোর ক্ষেত্রে আমাদের ব্যর্থতা রয়েছে। সেটা আমরা মেনে নিচ্ছি। এর পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। যেমন আমরা কর হার বাড়িয়ে রেভিনিউ বাড়ানোর চেষ্টা করেছি। আমাদের যত দ্রুত সম্ভব করের নেট বাড়াতে হবে। তাহলে দ্রুত রজস্ব আয় বাড়বে আর কমবে করের হার।

প্রস্তাবিত ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে রাজস্ব আয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা। এরমধ্যে এনবিআর থেকে আসবে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। বাকি ৪৮ হাজার কোটি টাকা আসবে এনবিআর বহির্ভূত খাত থেকে। এছাড়া মোবাইল সিম বা রিম কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে সেবার বিপরীতে সম্পূরক শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। নতুন কর হারে মোবাইল সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) ১৫ শতাংশ, সম্পূরক শুল্ক ১৫ শতাংশ ও সারচার্জ ১ শতাংশ হলো। ফলে মোট করভার দাঁড়াবে ৩৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের বাজেটে মোবাইল সিম বা রিম কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে সেবার বিপরীতে সম্পূরক শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছিল।

সংবাদ সম্মেলনে আরও অংশ নেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নান, অর্থসচিব আব্দুর রউফ প্রমুখ।

কালের আলো/এসবি/এমএম

Print Friendly, PDF & Email