ভাব নিলে ডিএমপিতে চাকরি করতে পারবেন না : ডিএমপি কমিশনার
প্রকাশিতঃ 7:57 pm | October 26, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো :
জনগণের পুলিশ হতে জনগণের সঙ্গে মিশতে হবে বলে মনে করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শফিকুল ইসলাম। একই সঙ্গে সাধারণ মানুষের সঙ্গে ভাব না নিতে তিনি নিজ বাহিনীর কর্মকর্তাদের সতর্কও করেছেন।
আরও পড়ুনঃ পুলিশী সেবায় জনগণের সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ : ড.মইনুর রহমান চৌধুরী
ডিএমপি কমিশনার বলেছেন, ‘পুলিশের কিছু কর্মকর্তাদের ভেতরে ভাবটা এমন থাকে, যে আমি বাদশা আপনি আমার প্রজা। এই বোধ নিয়ে কেউ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের চাকরি করতে পারবে না।’
শনিবার (২৬ অক্টোবর) রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে ‘কমিউনিটি পুলিশিংডে’ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
ডিএমপি কমিশনার শুধু সমালোচনা না করে পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করতে নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘কোনো পুলিশ সদস্য স্থায়ীভাবে এক জায়গায় থাকবে না, বদলি হয়ে যাবেন। সেই পুলিশ সদস্যকে তথ্য দিয়ে বা সরাসরি সহযোগিতা করলে সমাজের স্থায়ী উপকার হবে। সহযোগিতা না পেলে সমাজের লোকজনই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

নাটক, কবিতা ও কথার মাধ্যমে সমাজকে যেভাবে প্রভাবিত করা যায়, তা লাঠি দিয়ে করা সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘সমাজের সবাইকে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত করতে হবে। সন্তানদের খেলাধূলায় যুক্ত করতে হবে। তা না করতে পারলে সন্তানদের মাদক, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ থেকে রক্ষা করা সম্ভব নয়।’
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘বাসযোগ্য একটি সমাজ গড়া এবং নিজের ও সন্তানের নিরাপত্তা কখনও একা গড়া সম্ভব নয়। এজন্য সবাইকে পুলিশের সঙ্গে একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে। আপনার আশপাশে বিভিন্ন অপরাধ ঘটলে সেটি পুলিশকে জানান।
এতে আপনি, পুলিশ ও সমাজের সবাই উপকৃত হবেন। আর যদি নিজে চুপ করে থাকেন তবে সমাজের সবারই ক্ষতি হচ্ছে। সুন্দর সমাজ গড়ার জন্য আপনারা এক কদম এগোলে আমরা দশ কদম এগিয়ে যাবো’, যোগ করেন শফিকুল ইসলাম।

ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘জনগণের ট্যাক্সের টাকা দিয়ে আমাদের মাথার টুপি থেকে পায়ের জুতা পর্যন্ত সবকিছুই সরকার দিচ্ছে। এমনকি আমার সন্তানের লেখাপড়া ও পেটের রুটিরুজি সবকিছুই আপনাদের টাকায় হচ্ছে। অথচ পুলিশের কিছু কর্মকর্তাদের ভেতরে ভাবটা এমন থাকে, যে আমি বাদশা আপনি আমার প্রজা। এই বোধ নিয়ে কেউ ঢাকা মেট্রেপলিটন পুলিশের চাকরি করতে পারবে না।
তিনি বলেন, ‘এই মহানগরীর প্রতিটি মানুষের যে সম্মান, শ্রদ্ধা, ও সুন্দর আচরণ পাওয়ার কথা, সেটি যদি পুলিশের কোনো পর্যায় থেকে আপনারা না পান, তবে আমাদের জানাবেন। আমরা এ ধরনের লোকদের পুলিশের দায়িত্ব দিয়ে ডিএমপিতে রাখবো না।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক মো. মইনুর রহমান চৌধুরী। অনুষ্ঠানে নাট্যজন ইনামুল হক, ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম, কৃষ্ণ পদ রায়, মীর রেজাউল আলম ও আবদুল বাতেন বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে কমিউনিটি পুলিশে যুক্ত ৮জন সাধারণ নাগরিক এবং ১৬ জন পুলিশ সদস্যকে পুরস্কৃত করা হয়। এর আগে দিবসটি উপলক্ষে ঢাকা মহানগর পুলিশের সদর দপ্তর থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাও বের হয়। শোভাযাত্রাটি রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
কালের আলো/আরইএ/এমএইচএ