বাবার সহযোগিতায় তুহিনকে খুন করে চাচা

প্রকাশিতঃ 9:24 pm | October 15, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে পাঁচ বছরের শিশু তুহিন মিয়াকে বীভৎসভাবে হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর জন্য ঘুমন্ত এই শিশুকে হত্যার জন্য বাবা বাছির মিয়াই কোলে করে নিয়ে যান। পরে চাচা এবং চাচাতো ভাই মিলে তুহিনকে নৃশংসভাবে হত্যা করেন।

মঙ্গলবার(১৫ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাতটার দিকে সুনামগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান নিজ কার্যালয়ের সাংবাদিকদের জানান এসব তথ্য।

সংবাদ সম্মেলনে মিজানুর রহমান বলেন, ‘পৃথিবীতে শিশুর জন্য সবচেয়ে নিরাপদ স্থান বাবার কোল। কিন্তু তুহিনকে বাবার কোলেই হত্যা করা হয়েছে। পরে তার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ কেটে ফেলা হয়। এরপর পেটে দুটি ছুরি ঢুকিয়ে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়।’

ভারপ্রাপ্ত এসপি জানান, শিশু তুহিনকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন তার চাচা ও চাচাতো ভাই। তারা সুনামগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

এই হত্যার বর্ণনা দিয়ে মিজানুর রহমান বলেন, ‘রাত আড়াইটার দিকে বাবা আব্দুল বাছির তুহিনকে কোলে করে ঘরের বাইরে নিয়ে যান। পরে চাচা নাছির উদ্দিন ও চাচাতো ভাই শাহরিয়ার তুহিনকে খুন করেন। পরে তুহিনের কান ও লিঙ্গ কেটে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়।’ পূর্বশত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই তুহিনকে খুন করা হয় বলে পুলিশকে জানান তার বাবা ও চাচা।

এর আগে তুহিন হত্যার ঘটনায় তার বাবাসহ তিনজনকে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। বিকালে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শ্যামকান্ত সিনহা তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

বিকালে পুলিশ তুহিনের বাবা আবদুল বাছির (৪০), চাচা আবদুল মছব্বির (৪৫) ও প্রতিবেশী জমসের আলীকে (৫০) তিন দিনের রিমান্ডে পায়। একই সময় আদালতের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন তুহিনের আরেক চাচা নাসির উদ্দিন (৩৪) ও চাচাতো ভাই শাহরিয়ার (১৭)। এই পাঁচজন সোমবার দুপুর থেকে পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন।

সোমবার সকালে দিরাই উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের কেজাউরা গ্রামে রাস্তার পাশে কদম গাছের ডালে ঝুলন্ত অবস্থায় তুহিনের লাশ উদ্ধার করা হয়। সে সময় তুহিনের পেটের মধ্যে ঢোকানো ছিল দুটি ছুরি। ডান হাত গলার সঙ্গে থাকা রশির ভেতরে ঢোকানো ছিল। কেটে নেওয়া হয়েছিল শিশুটির কান ও যৌনাঙ্গ।

দেশজুড়ে তোলপাড় করা বীভৎস এই হত্যাকাণ্ডে সোমবার রাতে দিরাই থানায় ১০ জনের নামে মামলা করেন তুহিনের মা মনিরা বেগম। এদিন দুপুরেই তুহিনের বাবাসহ সাতজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পুলিশ।

কালের আলো/এনআর/এমএম

Print Friendly, PDF & Email