স্মার্টকার্ড প্রকল্পে অনিয়ম, বিশ্বব্যাংকের কালো তালিকায় টাইগার আইটি

প্রকাশিতঃ 10:05 am | July 31, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে বাংলাদেশের স্মার্টকার্ড প্রকল্পের কাজ পাওয়ার উদ্দেশে উৎকোচ প্রদানের প্রস্তাব ও অনাকাঙ্খিত হস্তক্ষেপের অভিযোগ টাইগার আইটি বাংলাদেশ লিমিটেড এবং প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিয়াউর রহমানের নাম কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।

ফ্রান্সের স্মার্টকার্ড সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান অবার্থুর টেকনোলজিসের সঙ্গে স্থানীয় সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে টাইগার আইটি কাজ করছিল। তবে ফরাসি ওই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি বাতিল হওয়ার পর বিশ্ব ব্যাংক এই প্রকল্পে অর্থায়নে অনাগ্রহ দেখানোয় এখন সরকারি অর্থায়নেই ১০ কোটি নাগরিককে স্মার্টকার্ড দিতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। ফলে বাদ পড়েছে অবার্থুর ও টাইগার আইটি উভয়ই।

স্মার্টকার্ড মুদ্রণ সংক্রান্ত প্রকল্পের কাজে প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ‘অশুভ আঁতাত, দুর্নীতি ও প্রভাব বিস্তারের’ প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়ে তাদের কালো তালিকাভুক্ত করে বিশ্বব্যাংক। উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কাজ দেওয়ার কথা থাকলেও বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নের এই প্রকল্পের কাজ পেতে টাইগার আইটি বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের ঘুষ দেওয়ার ষড়যন্ত্র করেছিল বলে বিশ্বসংস্থাটি অভিযোগ তুলে।

বিশ্বব্যাংকের বোর্ড সভায় গত ২৪ এপ্রিল টাইগার আইটিকে কালো তালিকা ভুক্ত করার সিদ্ধান্তটি হয়। প্রতিষ্ঠান হিসেবে টাইগার আইটিকে সাড়ে ৯ বছর এবং প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধারকে সাড়ে ৬ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়। অর্থাৎ এই সময়ের জন্য বিশ্ব ব্যাংক সংশ্লিষ্ট কোনো কাজে তাদের নেওয়া হবে না।

জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি-ইউএনডিপি ও বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় ‘আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যান্সিং এক্সেস টু সার্ভিস (আইডিইএ)’ প্রকল্পের আওতায় ২০১১ সালের জুলাইয়ে নয় কোটি নাগরিককে উন্নতমানের জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার চুক্তি করেছিল ইসি।

এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে স্মার্টকার্ড উৎপাদন-বিতরণে ফ্রান্সের প্রতিষ্ঠান অবার্থুর টেকনোলজিসের সঙ্গে ৮০০ কোটি টাকার চুক্তি করে ইসি। এর মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৬ সালের জুনে। পরে মেয়াদ ১৮ মাস বাড়িয়ে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়। কিন্তু ফ্রান্সের ওই কোম্পানির কাজে দেরি দেখে অপেশাদারিত্বের অভিযোগ এনে ২০১৭ সালে ইসি তাদের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়। সিদ্ধান্ত নেয়, বাংলাদেশি কোনো প্রতিষ্ঠানকে ওই কাজ দেওয়া হবে।

ফরাসি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি বাতিল হওয়ার পর প্রকল্পে অর্থায়নে অনাগ্রহ দেখায় বিশ্ব ব্যাংক। এরপর সরকারি অর্থায়নে এখন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে দেশীয় রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি।

কালের আলো/এআর/এমএম

Print Friendly, PDF & Email