অতি উৎসাহী সেই কর্মকর্তার জন্যই বিব্রতকর অবস্থায় মেয়র আতিক!

প্রকাশিতঃ 12:23 pm | June 10, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো :

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৯তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে ডিএনসিসি আয়োজিত তেজগাঁও সাতরাস্তা সংলগ্ন মেয়র আনিসুল হক সড়কে পরিচ্ছন্নতা অভিযান ও দেয়ালচিত্রণকালে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের কাগজের টুকরা পরিষ্কার রাস্তায় ছড়ানো নিয়ে ঘটেছিল লঙ্কাকান্ড।

আরো পড়ুন: মেয়র হিসেবে আতিকের প্রথম ঈদ, বললেন অনেক অজানা কথাই

অনেকেই না জেনে প্রথম দিকে ভুল বুঝতে শুরু করেছিলেন ডিএনসিসি’র মেয়র আতিকুল ইসলামকেই। পরবর্তীতে জানা গেলো, পরিচ্ছন্নতা অভিযানের সময় পরিষ্কার রাস্তায় পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের কাগজের টুকরা ছড়ানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) নির্বাহী প্রকৌশলী ও অতিরিক্ত প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) এস এম শফিকুর রহমান।

আরো পড়ুন: ফোক গানেও পারদর্শী মেয়র আতিকুল ইসলাম!

ওই সময়েই তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেন মেয়র আতিকুল ইসলাম। ঘটনার তিনমাস পর আবারো বিষয়টিকে সামনে এনেছেন নগর পিতা নিজেই। ডিবিসি নিউজের ঈদের বিশেষ ‘সংবাদ সম্প্রসারণ’ অনুষ্ঠানে সঞ্চালক শারমিন চৌধুরী’র এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র হিসেবে বিব্রতকর পরিস্থিতির ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়েই অবধারিতভাবেই যেন উঠে আসে চলতি বছরের ১৭ মার্চের সেই ঘটনাটি।

আরো পড়ুনঃ উন্নয়ন কাজে কেন ভোগান্তি, প্রশ্ন মেয়র আতিকুল ইসলামের

সেইদিনের ঘটনা প্রবাহ তুলে আনতে গিয়ে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আপনারা জানেন যে আমি দায়িত্ব নেই গত ১০ মার্চ। ১৭ মার্চে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে, আমরা তেজগাঁওয়ে রোডে চারুকলা থেকে ১৮৬ জন শিক্ষার্থীকে নিয়ে আসি। তারা ওয়ালগুলোতে পেইন্টিং করছিল।

তখন আমার প্রথম প্রোগ্রাম, সিটি করপোরেশনের সবাইকে বললাম এটা আমার জন্য সম্পূর্ণ নতুন একটা প্রোগ্রাম। চলো সবাই মিলে রাস্তাগুলোকে কীভাবে ক্লিন করা যায়; সবাই আসলো। আমিও ক্লিন করতে গেলাম। গিয়ে দেখলাম রাস্তায় ময়লা, তখন তা পরিস্কার করলাম।

পরে সোস্যাল মিডিয়া ও গণমাধ্যমগুলোতে দেখলাম যে বলা হচ্ছে, মেয়র ময়লা ফেলে সেগুলো পরিস্কার করছেন। এটা অবশ্যই বিব্রতকর, কারণ আমি ওই মেন্টালিটি নিয়ে যাইনি। আমি গিয়েছি ময়লাটাকে পরিস্কার করা জন্য। বাট আমাদের সিটি করপোরেশনের কিছু অতি উৎসাহী লোক আগেই ময়লা ফেলে গেছে। সে যদি বলত এটা প্রতীকি তাহলে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হত না।

‘আমি তাদের বললাম তোমরা কেন করলে এটা। তারা বলল, স্যার ময়লা খুঁজে পাইনি। পরে তাদের সেই ডিপার্টমেন্টগুলো থেকে বাদ দেয়েছি। আর এই অতি উৎসাহী লোকগুলোর জন্যেই সমস্যাগুলো হয়, আমাকে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হলো’ যোগ করেন ডিএনসিসি’র এই মেয়র।

এ বক্তব্য শেষ করতে গিয়ে দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ‘আমি লোক দেখানো কাজ করিনা। রিয়েল কাজ করাতেই মজা। বিজিএমইতে অনেক কাজ করেছি। রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ঘটনাসহ বিভিন্ন কাজ করেছি, কিন্তু লোক দেখানো কাজ আমি করে সন্তুষ্ট হইনা। আমি রিয়েল কাজ করি। যে কাজটা করবো সেটা সবার জন্যই করবো।

নাগরিকরা যত তথ্য দিচ্ছেন ততই সুবিধা
সঞ্চালক জানতে চান, আপনাদের (মেয়র) বক্তব্য বা বিভিন্ন কাজ নিয়ে সর্বত্রই সমালোচনা হয়। বিশেষ করে গণমাধ্যমে সমালোচনা হয়। এসব সমালোচনা নিয়ে কখনো বিরক্ত হন কি না? জবাবে ডিএনসিসি’র মেয়র বলেন, ‘আপনি দেখেছেন আমরা নগর অ্যাপস করেছি। যার মাধ্যমে সমস্যাগুলো ক্লিক করলেই আমাদের কাছে চলে আসবে।

আমরা চাই সমস্যাগুলো আমাদের সামনে তুলে ধরুন। আমরা সমাধান করবো এবং করতে হবে। টিভির মাধ্যমে জেনেছি, নগর অ্যাপসের মাধ্যমে জানছি তখনই সমস্যার সমাধান করা হচ্ছে। সুতরাং, আপনারা যত বেশি তথ্য দিচ্ছেন তত কিন্তু আমার সুবিধা হচ্ছে।

সহ্য করতে পারেন না মশা, জ্যামে হেঁটে চলেন
চমক জাগানিয়া আরেকটি তথ্য উপস্থাপন করেন মেয়র আতিকুল ইসলাম। তিনি জানান, মশা একদম সহ্য করতে পারেন না এ নগর পিতা। বলেন, ‘মশার সাউন্ডটাও সহ্য করতে পারিনা। আমি যখন বিএনসিসি করতাম তখন ট্যান্টের ভিতরে মশারি টানিয়ে থাকতাম।

আর ট্রাফিক জ্যামও সহ্য করতে পারিনা। জ্যাম থাকলে গাড়ি থেকে নেমে হাঁটা শুরু করে দেই। আর মেয়র হিসেবে এই দু’টো হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। আর এগুলো আমাদের অবশ্যই ওভারকাম করতে হবে।’

কালের আলো/এমআর/এএএমকে

Print Friendly, PDF & Email