‘পুলিশে নিয়োগ দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স’

প্রকাশিতঃ 12:17 am | March 01, 2018

বিশেষ প্রতিবেদক, কালের আলো :

পুলিশে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) নিয়োগের পরীক্ষা আগামী ৪ মার্চ। ময়মনসিংহে এ নিয়োগে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ নুরুল ইসলাম বিপিএম (বার) পিপিএম। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, অসাধুপায় অবলম্বনকারীরা ‘অযোগ্য’ হিসেবেই বিবেচিত হবে।

পুলিশের ভাবমূর্তি ঠিক রাখতেই এ পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া হবে সম্পূর্ণ স্বচ্ছ। শিক্ষাগত যোগ্যতা, শারীরিক, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই কেবলমাত্র মিলবে চাকরি।

একই সঙ্গে এ নিয়োগে উত্তীর্ণ হতে কোন প্রার্থী যেন কোনো প্রতারক বা দালালের খপ্পরে না পরেন সেজন্য ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছে জেলা পুলিশ। স্থানীয় ক্যাবল টিভিতে এ সংক্রান্ত প্রচারণা চালানো হচ্ছে। একই সঙ্গে এ সংক্রান্ত জেলা পুলিশ সুপারের (এসপি) বাণী ইতোমধ্যেই জেলার প্রতিটি মসজিদের ইমামের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়েছে।

আগামী শুক্রবার (০২ মার্চ) জুম্মার নামাজের খুতবার পর মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে জেলা পুলিশ সুপারের (এসপি) আহবান পড়ে শোনাবেন প্রতিটি মসজিদের ইমাম।

পুলিশে নিয়োগ বাণিজ্য ও অনিয়ম ঠেকাতে জেলা পুলিশ সুপারের (এসপি) এমন হার্ডলাইন জনমনে প্রশংসিত হয়েছে।  জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও নিয়োগ দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনসচেতনতা তৈরিতে প্রচার প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

ময়মনসিংহবাসীর উদ্দেশ্যে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) আহবান জানিয়ে সেখানে বলেছেন, কনস্টেবল(পুরুষ /নারী) পদে নিয়োগের লক্ষ্যে প্রার্থীদের শারীরিক মাপ ও শারীরিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ।

সরকার নির্ধারিত পরীক্ষা ফি-১০০(একশত) টাকা ব্যতীত আর কোন অর্থের প্রয়োজন নেই। শারীরিক, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া সাপেক্ষে সম্পূর্ণ মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। কোন প্রার্থী কোন প্রকার আর্থিক লেনদেনের সাথে জড়িত হলে সেই প্রার্থী অযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবে।’

তিনি লিখেছেন, ‘কোন প্রকার আর্থিক লেনদেনে জড়িত হয়ে প্রতারিত হবেন না। এ নিয়োগকে কেন্দ্র করে কোন প্রার্থী, পুলিশ সদস্য বা অন্য কোন ব্যক্তি আর্থিক লেনদেনে জড়িত হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ নুরুল ইসলাম বিপিএম (বার) পিপিএম দৈনিক কালের আলোকে বলেন, ‘লিখিত পরীক্ষাও এবার আরো কঠোরভাবে মনিটরিং করা হবে। প্রার্থীরা যখনই চাকরি দেওয়ার নামে অনৈতিক প্রস্তাব পাবেন, সাথে সাথে আমাদেরকে এ সম্পর্কে জানাতে পারবেন। কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে তা যাচাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমনকি নিয়োগ পাওয়ার পরও কারো বিরুদ্ধে অসদুপায় অবলম্বনের অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধেও প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।’

চাকরি প্রার্থীদের প্রতি এসপি’র পরামর্শ
শারীরিক বাছাই পরীক্ষায় টিকতে হলে বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী যোগ্যতা এবং শারীরিক ফিটনেস থাকতে হবে। লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে মেধা এবং অধ্যবসায় প্রয়োজন। যোগ্যতা এবং প্রস্তুতি থাকলে নিয়োগ প্রক্রিয়ার সবগুলো ধাপেই সহজে উত্তীর্ণ হতে পারবেন। নিজের আত্মবিশ্বাস থাকলে অযথা কেন অবৈধ পন্থা অবলম্বনের চিন্তা করবেন!

ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ নুরুল ইসলাম আরো বলেছেন, ‘পুলিশে চাকরি পেতে অবৈধ টাকা লেনদেন করবেন না। গুজবে কান না দিয়ে প্রত্যেক ধাপের জন্য নিজের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিন। অনৈতিক প্রস্তাব পেলে তাতে সাড়া না দিয়ে বরং আমাদের কাছে অভিযোগ করুন। প্রস্তুতি এবং আত্মবিশ্বাস থাকলে নিজ যোগ্যতায় বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে চাকরি পাওয়া সম্ভব।’

Print Friendly, PDF & Email