আগস্ট থেকে করের বোঝা বাড়বে এমন উদ্বেগ না ছড়ানোর আহ্বান: পরিবেশ উপদেষ্টা
প্রকাশিতঃ 5:59 pm | July 20, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
আগস্ট থেকে করের বোঝা বাড়বে এমন উদ্বেগ না ছড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। বিষয়টি এখনও সরকারের আলোচনার টেবিলে আছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
রোববার (২০ জুলাই) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এসব কথা জানান।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, যদি ভোক্তা পর্যায়ে স্থায়িত্ব বজায় রাখা যায়, তাহলে আরও টেকসই বিনিয়োগ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। শিল্প খাতে পানি ব্যবহারের নীতিমালা নিয়ে কাজ করছে সরকার। এছাড়া নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে অগ্রগতি আনতে উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
তিনি আরও বলেন, সরকার টোবাকো নীতি নিয়ে কাজ করছে। পরিবর্তন আনা হলে সব স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। দেশের অভ্যন্তরে যেসব প্রাকৃতিক সম্পদ আছে তার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার দিকে জোর দিয়েছে সরকার। সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব জ্বালানির দিকে সবার নজর দেওয়া উচিত।
টেক্সটাইল ও জ্বালানি খাতকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, শিল্প খাতে পানির ব্যবহার নিয়ে নীতিমালার যে খসড়া হয়েছে তা চূড়ান্ত করার সময় এসেছে। ভূগর্ভস্থ পানি কেউ যেন আর বিনামূল্যে না নেয়, তার যথাযথ মূল্য নির্ধারণ করতে হবে। একবার যখন শিল্পকারখানাগুলো এর মূল্য পরিশোধ করবে, তখন তারা পানির ব্যবহার নিয়েও দায়িত্বশীল হবে।
তিনি আরও বলেন, টেক্সটাইল খাতে এখনও কিছু বিষাক্ত রাসায়নিক ব্যবহার হচ্ছে যা রফতানিমুখী পণ্যে না হলেও স্থানীয় বাজারে ব্যবহৃত হচ্ছে। এ বিষয়ে একটি বাধ্যতামূলক কেমিক্যাল ব্যবস্থাপনা বিধিমালা থাকা জরুরি— এটি জনস্বাস্থ্যের প্রশ্ন।
জ্বালানি বিষয়ে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সরকার নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিমালা গ্রহণ করেছে; যেখানে ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রত্যেক সরকারি দফতরে নবায়নযোগ্য জ্বালানির সংযোগ বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। এটি শুধু একটি নীতিগত অঙ্গীকার নয়, বাস্তবায়নের শুরু।
জলবায়ু ন্যায়বিচারের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম শিকার হলেও এর দায় আমাদের নয়। তাই একটি ন্যায্য বৈশ্বিক টেকসই ব্যবস্থার প্রয়োজন।
তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন নিয়ে চলমান আলোচনার বিষয়ে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সরকার সকল অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেবে। জনস্বাস্থ্যের বিষয়টি এখানে অগ্রাধিকার পাবে। সিঙ্গাপুরের মতো সফল মডেল আমাদের অনুপ্রেরণা হওয়া উচিত, যেখানে আইন লঙ্ঘনের হার মাত্র ৫ শতাংশ।
তিনি আরও বলেন, টেকসই বিনিয়োগকে শুধু উৎপাদকের দায় হিসেবে দেখলে চলবে না। এর ব্যয় ন্যায্যভাবে ক্রেতা ও উৎপাদক— উভয়ের মধ্যে ভাগ করে নেওয়া উচিত, যাতে আমাদের অর্থনীতির ভিত্তি যারা তৈরি করছেন; সেই লাখ লাখ শ্রমিকের ন্যায্য সুরক্ষা নিশ্চিত হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অ্যামচ্যাম সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ, অ্যামচ্যামের সাবেক সভাপতি ও অর্থনীতিবিদ ফরেস্ট ই কুকসন এবং অ্যামচ্যাম সহ-সভাপতি ও শেভরন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট এরিক এম ওয়াকার। রিকাভার, শেভরন বাংলাদেশ ও ফিলিপ মরিস এর প্রতিনিধিরা তাদের পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ নিয়ে পাওয়ার পয়েন্টে উপস্থাপনা করেন।
কালের আলো/এমডিএইচ