মানবাধিকার সহায়তাই ওএইচসিএইচআর মিশন  মূল লক্ষ্য

প্রকাশিতঃ 2:37 pm | July 19, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

মানবাধিকারের প্রসার ও সুরক্ষায় সহায়তা দেওয়ায় ওএইচসিএইচআর মিশন কার্যালয়ের মূল লক্ষ্য। শনিবার (১৯ জুলাই) অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া এক সংবাদ বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদারের পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকার ও জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের (ওএইচসিএইচআর) মধ্যে একটি তিন বছরের সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে।

এ সমঝোতার আওতায় বাংলাদেশে একটি মিশন কাজ করবে, যার লক্ষ্য হবে মানবাধিকারের প্রসার ও সুরক্ষায় সহায়তা প্রদান। এ মিশনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে সরকারি প্রতিষ্ঠান ও নাগরিক সমাজের সংগঠনগুলোকে প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহায়তা দেওয়া। এটি বাংলাদেশকে তার জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক দায়িত্ব পালনে সহায়তা করবে—সংস্থানগত সক্ষমতা বৃদ্ধি, আইনি সহায়তা এবং প্রাতিষ্ঠানিক শক্তিশালীকরণের মাধ্যমে।

সংবাদ বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে ঘটে যাওয়া গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের পরিপ্রেক্ষিতে জবাবদিহিতা ও সংস্কারের ধারাবাহিক অঙ্গীকার হিসেবে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা স্বীকার করি, জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাগুলোর ধারণাগত দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বাংলাদেশের কিছু মহলে উদ্বেগ রয়েছে। বাংলাদেশ একটি সংস্কৃতিমূলক ও ধর্মীয় মূল্যবোধে সমৃদ্ধ সমাজ। অনেক নাগরিক মত দিয়েছেন, যে কোনো আন্তর্জাতিক অংশীদারত্ব যেন দেশের সাংস্কৃতিক ও সামাজিক মূল্যবোধকে সম্মান করে। সে কারণে ওএইচসিএইচআর এর এই মিশন শুধু গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধ ও প্রতিকার এবং পূর্ববর্তী সরকারের অধীনে সংঘটিত অপরাধসমূহের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার বিষয়েই কেন্দ্রীভূত থাকবে। এটি বাংলাদেশের প্রচলিত আইন, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কাঠামোর বাইরে কোনো সামাজিক অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য কাজ করবে না।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আমরা আশা করি, মিশনটি সর্বদা স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করবে এবং স্থানীয় অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা বজায় রাখবে। জাতিসংঘ বাংলাদেশে কাজ করার সময় দেশের সংস্কৃতি ও ধর্মীয় বাস্তবতাকে পূর্ণ সম্মান প্রদর্শনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, এই সমঝোতায় বাংলাদেশের সার্বভৌম কর্তৃত্ব বজায় থাকবে। সরকার যদি মনে করে যে এই অংশীদারত্ব আর জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়, তবে প্রয়োজন হলে সমঝোতা স্মারক থেকে সরে আসার অধিকার সংরক্ষণ করে।

যদি পূর্ববর্তী সরকারের সময় এমন একটি দপ্তর বাংলাদেশে থাকত, যখন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও গণহত্যা নির্বিচারে ঘটেছে, তাহলে অনেক অপরাধ হয়ত যথাযথভাবে তদন্ত, নথিভুক্ত এবং বিচার হতো। আজকের আমাদের মানবাধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতি অবশ্যই আদর্শবাদে নয় বরং ন্যায়বিচারে ভিত্তি করে গড়ে উঠতে হবে।

সরকার এই অংশীদারত্বকে একটি সুযোগ হিসেবে দেখছে—যার মাধ্যমে আমাদের প্রতিষ্ঠানসমূহ শক্তিশালী হবে এবং নাগরিক সুরক্ষা নিশ্চিত হবে, আমাদের মূল্যবোধে পথপ্রদর্শিত হয়ে, আমাদের আইন দ্বারা পরিচালিত হয়ে এবং জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থেকে।

কালের আলো/এএএন