জামায়াতের সমাবেশে কি যাচ্ছেন বিএনপি নেতারা?
প্রকাশিতঃ 11:13 am | July 19, 2025

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, কালের আলো:
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতীয় সমাবেশ করছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। সারাদেশ থেকে দশ লাখ নেতাকর্মী সমাবেশে যোগ দেবেন সেই প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন দলটির নেতারা। নেতাকর্মী, নির্বাহী কমিটি, শহীদ পরিবারসহ আমন্ত্রিত পেশাজীবীরাও থাকবেন সমাবেশে। আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বিএনপি, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের। তারাও সমাবেশে বক্তব্য দেবেন এমনটা জানিয়েছে জামায়াত। তবে বিএনপির কোনো প্রতিনিধি দল কর্মসূচিতে যোগ দেবে কি না তা নিয়ে এখনও স্পষ্ট কোনো বার্তা মেলেনি।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাত পর্যন্ত বিএনপির কারও জামায়াতের সমাবেশে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়নি। বিএনপির সঙ্গে আন্দোলন করা সমমনা দলগুলোর নেতাদেরও সমাবেশে যোগ দেয়ার সম্ভাবনাও কম।
বিএনপির লিঁয়াজো কমিটির নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা সমাবেশে যোগ দেওয়ার বিষয়টি পরিষ্কার করেননি।
বিএনপির মিডিয়া সেল সূত্রে জানা গেছে, জামায়াতের পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তবে লিঁয়াজো কমিটির দুজন শীর্ষ নেতার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বললে তারা সমাবেশে না যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন।
জামায়াত সূত্রে জানা গেছে, বিএনপিসহ ফ্যাসিবাদবিরোধী সব রাজনৈতিক দলকে সমাবেশে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সেইসঙ্গে ভিন্ন ধর্মাবলম্বী সম্প্রদায়ের নেতাদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
সমাবেশের বিষয়ে জানতে চাইলে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছরে এবং বিশেষ করে ফ্যাসিবাদ আমলে দীর্ঘ প্রায় ১৭ বছর জামায়াতে ইসলামীর ওপর অসংখ্য জুলুম-অত্যাচার করা হয়েছে। এখন একটি পরিবেশ তৈরি হয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর কথা বলার সুযোগ তৈরি হয়েছে। প্রথমবারের মতো সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশ করার মধ্য দিয়ে আমরা নিজেদের সেইভাবে প্রমাণিত করতে চাই।
তিনি বলেন, বিরাট আকৃতির মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে, যেখানে ৩০০ জনের মতো মানুষ বসতে পারেন। এরই মধ্যে বিএনপিসহ ফ্যাসিবাদবিরোধী সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিকে সমাবেশে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে সমান সুযোগ নিশ্চিত করা ছাড়াও জামায়াতের দাবির মধ্যে রয়েছে- সব গণহত্যার বিচার, প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার, জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন, অভ্যুত্থানে নিহত ও আহতদের পরিবারের পুনর্বাসন, আনুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচন ও প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করা।
জানা গেছে, বিএনপি বর্তমান পদ্ধতিতে নির্বাচন চেয়ে আসছে। অন্যদিকে জামায়াতসহ একাধিক রাজনৈতিক দল পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চাইছে। যা নিয়ে বিএনপির সঙ্গে এসব দলের মতবিরোধ চলছে। সমাবেশে বিএনপির অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত হলে এটা বড় কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
এরআগে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে সমাবেশ করা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ জামায়াতসহ সব দলকে আমন্ত্রণ জানালেও বিএনপিকে দাওয়াত দেয়নি।
সমাবেশ উপলক্ষে নিজেদের প্রস্তুতির বিষয়ে গোলাম পরওয়ার জানিয়েছেন, আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য মঞ্চের পেছনে গ্রিনরুমের ব্যবস্থা করা হয়েছে। গোটা মাঠে বসার জন্য ত্রিপল দেয়া থাকবে। মঞ্চে প্রায় তিন শ চেয়ার থাকবে। জাতীয় নেতৃবৃন্দ, শহীদ পরিবারের সদস্যবৃন্দ, নির্বাহী পরিষদের সদস্যদের জন্য মঞ্চে আসন থাকবে এবং আসনগুলো সুনির্দিষ্ট থাকবে।
তিনি জানান, মঞ্চের সামনে দুইদিকে ছয় শ অতিরিক্ত চেয়ার থাকবে, যেখানে আরও আমন্ত্রিত অতিথি, জুলাই যোদ্ধা যারা আহত এবং কিছু শহীদ পরিবার, সাংবাদিক, আমন্ত্রিত অতিথি জেলা আমিররা আসন গ্রহণ করবেন।
কালের আলো/এমডিএইচ