ভারতীয় আধিপত্যবাদীদের সঙ্গে সম্পাদিত সব অসম চুক্তি বাতিল করতে হবে

প্রকাশিতঃ 7:58 pm | May 16, 2025

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক, কালের আলো:

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, ভারতীয় আধিপত্যবাদীদের সঙ্গে এ যাবত সম্পাদিত সব অসম চুক্তি বাতিল করতে হবে। ভারতের পানি আগ্রাসন নীতি রুখতে সর্বত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

ফারাক্কা লং মার্চ দিবস উপলক্ষ্যে শুক্রবার (১৬ মে) বিকেল ৩টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত সর্বদলীয় গণসমাবেশে এ কথা বলেন তিনি। আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি (আইএফসি) ও বাংলাদেশ ফারাক্কা কমিটি যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক ফ্রন্ট, জাতীয় গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, ভাসানী অনুসারী পরিষদ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশ কর্মজীবী দলসহ আরও কয়েকটি সংগঠন।

সর্বদলীয় গণসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইএফসি, নিউইয়র্কের চেয়ারম্যান সৈয়দ টিপু সুলতান।

আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাবেক ঢাকা কলেজের ভিপি মীর সরাফত আলী সপু, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জুনায়েদ সাকি, এনসিপির কেন্দ্রীয় সংগঠক আসাদ বিন রনি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, জাতীয় গণফ্রন্টের সমন্বয়ক কমরেড টিপু বিশ্বাস, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক জসিম উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

সর্বদলীয় গণসমাবেশের প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, বাংলাদেশের ৫৭টি অভিন্ন আন্তর্জাতিক নদীর মধ্যে ভারত-বাংলাদেশ আন্তঃসীমান্ত ৩৬টি নদীর ওপর ভারত সরকার আন্তর্জাতিক পানি বণ্টন চুক্তি আইন লঙ্ঘন করে ৫৪টি অবৈধ বাঁধ নির্মাণ করেছে। যার ফলে বাংলাদেশের নদীর পানি শুকিয়ে জনপদ মরুভূমিতে পরিণত হচ্ছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে কৃষকরা ঠিকমতো চাষ করতে পারে না। পানির অভাবে প্রকৃতি, জীববৈচিত্র্য, আমাদের মৎস্য সম্পদ, জলবায়ু হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। আবার বর্ষা মৌসুমে বাঁধের গেট খুলে দিয়ে তারা আমাদের পানিতে ডুবিয়ে মারার পরিকল্পনা করে যাচ্ছে বছরের পর বছর ধরে।

তিনি আরও বলেন, ভারতীয় আধিপত্যবাদীদের সঙ্গে এ যাবত সম্পাদিত সব অসম চুক্তি বাতিল করতে হবে। ভারতের পানি আগ্রাসন নীতি রুখতে সর্বত্র প্রতিবাদ গড়ে তুলতে হবে।

এছাড়াও ঢাকা কলেজের সাবেক ভিপি, বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মীর সরাফাত আলী সপু বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছর ভারত বাংলাদেশে আওয়ামী পুতুল সরকারকে দিয়ে তার চূড়ান্ত আধিপত্য বিস্তার করে রেখেছিল। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা আবার নতুন বাংলাদেশ করার স্বপ্ন দেখছি।

তিনি বলেন, ১৯৭৬ সালের আজকের এই দিনে মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ফরাক্কা লং মার্চের ডাক দেন। তারা ডাকে সাড়া দিয়ে লাখ লাখ জনতা ফারাক্কা অভিমুখে রওনা দেয়। তারপর শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের উদ্যোগে তা জাতিসংঘে উপস্থাপন করা হয়।

মীর সরাফাত আলী সপু বলেন, প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করে অথবা যুদ্ধ করে আমরা আমাদের পানির ন্যায্য হিসেবে আদায় করে ছাড়ব।

গণসমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ঐতিহাসিক ফারাক্কা লংমার্চের অবিসংবাদিত নেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী দৌহিত্র আজাদ খান ভাসানী। তিনি বলেন, পিন্ডির জিঞ্জির ছিন্ন করেছি, দিল্লির দাসত্ব মেনে নেব না, মেনে নেওয়া যায় না (মাওলানা ভাসানী)। প্রয়োজনের যুদ্ধ করে লড়াই করে আমরা আমাদের পানির ন্যায্য হিসাব আদায় করে ছাড়ব।

গণসমাবেশ থেকে পরিবেশ বিধ্বংসী ফারাক্কা বাঁধসহ ভারত-বাংলাদেশ অভিন্ন প্রত্যেকটি নদীর ওপর থেকে বাঁধ সরিয়ে বাংলাদেশকে পানির ন্যায্য হিস্যা বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য ভারতীয় মোদি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান সর্বদলীয় নেতাকর্মীরা।

কালের আলো/এসএকে