কপাল পুড়া সাবের চৌধুরীকে নিয়ে কী বললেন ওবায়দুল কাদের
প্রকাশিতঃ 3:33 am | February 23, 2018

কালের আলো রিপোর্ট:
ভোটের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের কৌশলগত অবস্থান বোঝাতে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আদর্শ নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও আসন জয়ের জন্যই ১৯৯৬ সালে সাবের হোসেন চৌধুরীকে মনোনয়ন দিয়েছিল তার দল।
একই কারণে তৎকালীন যুবদল নেতা হাজী সেলিমকেও সে সময় নৌকার প্রার্থী করা হয় বলে জানিয়েছেন তিনি।
ঢাকায় একদল ভারতীয় সাংবাদিকের সঙ্গে আলোচনায় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, “আমি তো মাঝে মাঝে বলি, আমাদের ঢাকা সিটিতে আমাদের দীর্ঘদিনের ত্যাগী পরীক্ষিত নেতা মোজাফফর হোসেন পল্টুকে বাদ দিয়ে নবাগত সাবের হোসেন চৌধুরীকে ’৯৬-এ মনোনয়ন দিয়েছিলাম। তখনও অনেক প্রশ্ন ছিল, তিনি আদর্শের মধ্যে পড়ছিলেন না।”
যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর আত্মীয় ব্যবসায়ী সাবের চৌধুরী ১৯৯৬ সালের ওই নির্বাচনে ঢাকা-৬ আসনে জয়ী হয়ে শেখ হাসিনার সরকারের উপমন্ত্রী হয়েছিলেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতিও ছিলেন তিনি।
২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসের কাছে হেরে যান সাবের, ক্ষমতা হারায় আওয়ামী লীগও। এরপর রাজনীতিতে আরও উন্নতি হয় সাবের চৌধুরীর, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের পাশাপাশি দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার রাজনৈতিক সচিব হয়েছিলেন তিনি।
তবে ২০০৭ সালে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে শেখ হাসিনা বন্দি হওয়ার পর দলীয় প্রধানের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় তার। এখন আওয়ামী লীগের কোনো পদে না থাকলেও দলটির সাংসদ তিনি। ২০১৫ সালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পার্লামেন্ট সদস্যদের সংগঠন ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) সভাপতি হন তিনি।
সাবের চৌধুরীর মতো হাজী সেলিমকেও একই কারণে মনোনয়ন দেওয়ার কথা তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, “দেখুন, ডাক্তার মোস্তফা জালাল মহিউদ্দীন দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত-ত্যাগী নেতা। তাকে বাদ দিয়ে আমরা হাজী সেলিমকে মনোনয়ন দিয়েছিলাম।
“সেই ইলেকশনের এক সিটের জন্য আ স ম রব, তারপর জাতীয় পার্টির সঙ্গে আমাদের জোট করতে হয়েছিল।”
আওয়ামী লীগকে সন্দেহের চোখে দেখার আগে এ বিষয়গুলো ভেবে দেখার অনুরোধ করেন তিনি।
কাদের বলেন, “আমরা আমাদের শিকড় থেকে সরে যাইনি। এগুলো না করলে আমরা ক্ষমতায় আসতে পারতাম না।”
১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর ২১ বছর রাষ্ট্রক্ষমতার বাইরে থাকার কারণে আওয়ামী লীগকে অনেক বিষয়ে ছাড় দিতে হয়েছিল বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, “আমি বলতে চাই, একুশ বছর আমরা ক্ষমতায় ছিলাম না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে হত্যার পর থেকে পাকিস্তানি ধারায় বাংলাদেশটাকে নিয়ে যাওয়ার প্রবণতা শুরু হয়েছিল।
“একুশ বছর পর ক্ষমতায় এসে রাতারাতি সব আদর্শকে ধারণ করা সম্ভব হয় না।”
১৯৯৬ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায়ে তাদের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীও আন্দোলনে ছিল।
ওবায়দুল কাদের বলেন, “সেটা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছে। পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটা কাগজে আমি দেখেছি, তাদের বিভিন্ন প্রশ্ন আছে জিঙ্গাসা আছে। কিন্তু, দেখুন কিছু করতে হলে আমাদের তো ক্ষমতায় আসতে হবে।
“এন্টি ফোবিয়া এত তীব্র ছিল… এসবের মধ্যে বঙ্গবন্ধুকন্যা কিন্তু পিছপা হননি। আমরা কৌশলগত জোট করেছি বলেই ক্ষমতায় আসতে পেরেছি।”
কালের আলো/এসএস