ইয়াছিন আরাফাত, কালের আলো:

আজ ১ ডিসেম্বর, ২০২৪। বছর ঘুরে আবারও এসেছে বাঙালির অহংকার আর গৌরবের বিজয়ের মাস। ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসটি বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ ডিসেম্বরের ১৬ তারিখেই বাঙালি জাতির চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। হানাদারমুক্ত হয় প্রিয় মাতৃভূমি। নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সেই যুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ আর দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে ধরা দেয় হাজার বছরের স্বপ্নের স্বাধীনতা। হাজার বছরের ইতিহাসে বাঙালি তাঁর আত্মপরিচয়, স্বাধীনতা ও স্বাধীন পতাকা পেয়েছিল এই মাসটিতেই। পুরো এই মাস জুড়ে থাকবে নানা অনুষ্ঠান। মহান এই বিজয়ের মাস উদযাপনে জাতীয় কর্মসূচির পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীন জাতি হিসেবে সমগ্র বিশ্বে আত্মপরিচয় লাভ করে বাঙালিরা। অর্জন করে নিজস্ব ভূখণ্ড আর সবুজের বুকে লাল সূর্য খচিত নিজস্ব জাতীয় পতাকা। ভাষার ভিত্তিতে যে জাতীয়তাবাদ গড়ে উঠেছিল, এক রক্তক্ষয়ী জনযুদ্ধের মাধ্যমে ঘোষিত স্বাধীনতা পূর্ণতা পায় এই দিনে। মুক্তিযুদ্ধের ধারাবাহিকতায় ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করে স্বাধীনতাকামী অদম্য বাঙালির কাছে। অর্জিত হয় চূড়ান্ত বিজয়।

১৯৭১ সালের এই মাসে সুদীর্ঘ ২৩ বছরের শোষণ-বঞ্চনা আর অত্যাচার-নির্যাতনের বিরুদ্ধে ৯ মাস যুদ্ধ করে বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয় দামাল বাঙালি। মুক্তিযুদ্ধের পুরো ৯ মাস ধ্বংসযজ্ঞ চালালেও ডিসেম্বরে এসে পাকিস্তানি বাহিনী এই দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শেষ করে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করতে তৎপর হয়। তালিকা করে একে একে হত্যা করা হয় দেশের খ্যাতিমান শিক্ষক, সাহিত্যিক, চিকিৎসক, সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবীদের। শেষতক এই ডিসেম্বর মাসেই পর্যুদস্ত হয় হানাদারবাহিনী। রচিত হয় নতুন ইতিহাস। বাংলার আকাশে উদিত হয় নতুন সূর্য।

প্রতি বছরের মতো এবারও বিজয়ের মাসে দেশবাসী বিজয়ের আনন্দে উচ্ছ্বসিত হবে। শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও শোকে মুহ্যমান হয়ে মাথা নোয়াবে অগণিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি। নানা আয়োজনে সবার চেতনায় ধ্বনিত হবে মুক্তিযুদ্ধের বিজয়গাথার স্মৃতিচারণ আর বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।

কালের আলো/ওয়াইএ/এমকে