জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার অপচেষ্টার আশঙ্কায় বিএসসি এমডি

প্রকাশিতঃ 12:36 pm | October 05, 2024

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

‘বাংলার জ্যোতি’র পর বাংলার সৌরভে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার অপচেষ্টা বলে আশঙ্কা করছেন বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কমডোর মাহমুদুল মালেক।

শনিবার (৫ অক্টোবর) সকালে বিএসসির সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

বিএসসি ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর মাহমুদুল মালেক বলেন, রাত সাড়ে ১২ টায় জাহাজে কোনো কাজ ছিল না। জাহাজে চারটা পয়েন্টে আগুন দেখা যায়। তাই আমাদের আশঙ্কা নাশকতা।

তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে বাংলার জ্যোতিতে আগুন লেগেছিল। এরপর আগুন লাগল বাংলার সৌরভে। তাই আমরা ধারণা করছি, এ ঘটনা জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা হুমকিতে ফেলার অপচেষ্টা। এ ঘটনায় কারা জড়িত তা শনাক্ত করা উচিত।

এমডি জানান, এটি লাস্ট সার্ভিস হওয়ার কথা ছিল বাংলার সৌরভের। নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড ও বন্দরের ৭টি টাগ একযোগে কাজ করে। আগুন নেভানোর দেড় ঘণ্টা পর আবার আগুন ধরে যায়।

তিনি আরও বলেন, বাংলার সৌরভে ১১ হাজার ৫৫ টন অপরিশোধিত তেল ছিল। ৪৮ জন ক্রু ও ওয়াচম্যান ছিল। তাদের জীবিত উদ্ধার করা হয়েছিল। এর মধ্যে বিএসসির স্টুয়ার্ট সাদেক মিয়া হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান। বিএসসির টেকনিক্যাল ডিরেক্টরকে প্রধান করে আট সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

৩০ হাজার টনের একটি বিদেশি জাহাজ চাটারিং করা হয়েছে। এসপিএম চালু হলে লাইটারিং বন্ধ হবে। শুক্রবার (৪ অক্টোবর) দিনগত রাত পৌনে একটার দিকে বাংলার সৌরভে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর ১৯৮৭ সালে ডেনমার্কে তৈরি বিএসসির ‘বাংলার জ্যোতি’ জাহাজটির সামনের দিকে  বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আগুন নেভাতে কাজ করে নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, কোস্টগার্ড, কর্ণফুলী টানেল, বন্দর ও  ফায়ার সার্ভিস। আগুন নেভানোর পর ৩ জনের মরদেহ পাওয়া যায়। তারা হলেন- বিএসসির নিজস্ব মেরিন ওয়ার্কশপের চার্জম্যান চট্টগ্রামের নুরুল ইসলাম, ২৫-৩০ বছর ধরে বিএসসিতে ডেইলিবেসিস কাজ করা কিশোরগঞ্জের মো. হারুণ, বরিশাল মেরিন একাডেমি থেকে পাস করে বের হওয়া ঝিনাইদহের ক্যাডেট সৌরভ কুমার সাহা।

আগুন নেভানোর সময় আহত হন বন্দরের কাণ্ডারী ১০ টাগ বোটের লস্কর মো. সোহেল রানা। তিনি এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বিএসসির এমডি বলেন, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে নাশকতার বিষয় নিশ্চিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বছরে বিপিসির ১২-১৪ লাখ টন অপরিশোধিত তেল পরিবহন করে বিএসসি। বড় জাহাজে বিদেশ থেকে এসব তেল আমদানি করে বহির্নোঙরে আনা হয়। এরপর সাগরে বিএসসির বাংলার জ্যোতি ও বাংলার সৌরভে লাইরারিং করে কর্ণফুলী নদীর ডলফিন জেটিতে ইস্টার্ন রিফাইনারিকে দেওয়া হয়।

কালের আলো/ডিএইচ/কেএ