ভাষার কারণে বাংলাদেশি কর্মীর কোটা অপূর্ণ : কোরীয় রাষ্ট্রদূত
প্রকাশিতঃ 11:04 pm | March 20, 2024
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
সুযোগ থাকলেও কোরীয় ভাষায় দক্ষতার অভাবে বাংলাদেশি কর্মীরা সেদেশে নিয়োগের কোটা পূরণ করতে পারেনি। বুধবার (২০ মার্চ) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে সৌজন্য বৈঠকে এ তথ্য তুলে ধরেন ঢাকায় দেশটির রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক।
বৈঠকের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত জানান, ভাষা শেখার সমস্যার কারণে বাংলাদেশ গত বছর (২০২৩ সালে) ১০ হাজার ২০০ জনের কোটা পূরণ করতে পারেনি।”
তবে বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কোরিয়া যেতে আগ্রহী শ্রমিকদের ভাষার সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশে দু’টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) মনোনীত করেছে বলে বৈঠকে তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, এ দুই কেন্দ্রে কোরিয়ার প্রশিক্ষকরা ভাষা ও প্রযুক্তির প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিতে পারবেন।
কোরিয়ার এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেম (ইপিএস) স্কিমের অধীনে বাংলাদেশি দক্ষ কর্মীদের কোটা বাড়ানোর জন্য কোরিয়াকে ধন্যবাদ জানানোর প্রেক্ষাপটে এ তথ্য পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে দেন রাষ্ট্রদূত।
২০২২ সালে বাংলাদেশ থেকে সর্বোচ্চ সংখ্যক ৫ হাজার ৮৯১ কর্মী এবং ২০২৩ সালে ৪ হাজার ৮০৪ জন কর্মী যাওয়ার কথা এর আগে জানিয়েছিল কোরীয় দূতাবাস।
এদিনের বৈঠকে অবকাঠামো, হালকা প্রকৌশল এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন খাতে দক্ষিণ কোরিয়াকে আরও বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “পররাষ্ট্রমন্ত্রী দক্ষিণ কোরিয়াকে বাংলাদেশে অন্যতম প্রধান বিদেশি বিনিয়োগকারী হিসেবে বর্ণনা করে দেশের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির ওপর আলোকপাত করেন।
“এবং হালকা প্রকৌশল, ইলেকট্রনিক্স, হোম অ্যাপ্লায়েন্সেস, অবকাঠামো উন্নয়ন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিসহ নানা ক্ষেত্রে আরও বিনিয়োগকে স্বাগত জানান।”
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে রাষ্ট্রদূতের বৈঠকে অর্থনৈতিক কূটনীতির বিষয়াদি প্রাধান্য পেয়েছে।
“বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি বৃদ্ধি, কোরিয়া পরিচালিত প্রকল্প, চুক্তি, প্রযুক্তি বিনিময়সহ দ্বিপাক্ষিক বিষয়সমূহ বিশদভাবে আলোচিত হয়।”
হাছান মাহমুদ রাষ্ট্রদূতকে বলেন, বাংলাদেশ দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে অর্থনৈতিক অংশীদারি চুক্তির (ইপিএ) মতো পদক্ষেপ নেওয়ার কথা সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে সরকার।
বাংলাদেশের এলডিসি থেকে উত্তরণের পর সহযোগিতার ধারাবাহিক বৃদ্ধির জন্য করণীয় নিয়েও আলোচনা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
চট্টগ্রামে মেট্রোরেল প্রকল্পের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শুরু করার জন্য তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা-কোইকা’কে ধন্যবাদ দেন এবং প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল দ্রুত সরবরাহের ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও রাষ্ট্রদূত তৈরি পোশাক খাতে ব্যবহারের জন্য কৃত্রিম তন্তু, দক্ষতা ও প্রযুক্তি বিনিময়, দ্বৈত কর পরিহার, বিমান পরিষেবা চুক্তির সংশোধন, উচ্চ-পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক সফর এবং সরাসরি ও যৌথ বিনিয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশের শিল্পখাত বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্পের আরও আধুনিকায়নের মাধ্যমে দু’দেশের সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে ঐক্যমত প্রকাশ করেন।
কালের আলো/ডিএস/এমএম