জি এম কাদেরের চেয়ার কেউ রক্ষা করতে পারবে না : রাঙ্গা

প্রকাশিতঃ 4:06 pm | October 23, 2022

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

জাতীয় পার্টি (জাপা) অফিস থেকে দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে ‘জুতাপেটা’ করে তাড়ানো হবে বলে হুঁশিয়ার দিয়েছেন সংসদের বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা।

তিনি বলেছেন, বেগম রওশন এরশাদের চেয়ারের পাশে তিনি (জি এম কাদের) আর বসতে পারবেন না। রওশন এরশাদের পাশের চেয়ারে বসবেন অন্য কেউ। সে ব্যবস্থা করা হয়েছে। জি এম কাদেরের চেয়ার কেউ রক্ষা করতে পারবে না। ওই সময় পার্টি অফিস থেকে জি এম কাদেরকে জুতাপেটা করে তাড়ানো হবে।

রবিবার (২৩ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন হলে জাতীয় পার্টি (রওশনপন্হী) আয়োজিত উপজেলা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় রাঙ্গা এসব কথা বলেন।

মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, ‘আগামী ২৬ নভেম্বর জাতীয় কাউন্সিলের মাধ্যমে জাতীয় পার্টির নেতৃত্বের পরিবর্তন হবে। সেখান থেকে বিদায় নেবে জিএম কাদের। জিএম কাদেরের সঙ্গে তিন জন এমপি ছাড়া আর কেউ নেই। আগামী ২৬ নভেম্বর রওশন এরশাদের ডাকা জাতীয় কাউন্সিলের আগেই এমপিরা কোন দিকে, তা স্পষ্ট হয়ে যাবে। তাই এ বিষয় নিয়ে সংশয় থাকবেন না। সময়মতো আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছে যাবো। বনানী ও কাকরাইল অফিস আমাদের হবে। জিএম কাদেরকে ওখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে।’

তিনি বলেন, ‘জাতীয় পার্টির অবৈধ চেয়ারম্যান হিসেবে জিএম কাদের আছেন। তিনি জাতীয় পার্টির সাইনবোর্ড ব্যবহার করে মনোনয়ন বাণিজ্য করছেন। সম্ভাব্য প্রার্থীদের কাছ থেকে ৫ কোটি করে টাকা নিচ্ছেন। আবার বিএনপির জোটে যাবেন, সে জন্য তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকবেন, সেখান থেকেও টাকা নিচ্ছেন। দুই নৌকায় পা রেখে রাজনীতি হয় না। জিএম কাদের তাই করছেন। আমি প্রশ্ন করতে চাই, জিএম কাদের সাহেব, আপনার কত টাকা প্রয়োজন? সরকারের মন্ত্রী থাকা অবস্থায় অনেক সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন। টাকাগুলো কী করেছেন?’

সরকারের মন্ত্রী থাকা অবস্থায় জি এম কাদের অনেক সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন মন্তব্য করে জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ বলেন, ‘জি এম কাদের সাহেব আপনার কত টাকা প্রয়োজন? টাকাগুলো কী করছেন?’

রাঙ্গাঁ বলেন, ‘জি এম কাদের কখনো রাজনীতিবিদ ছিলেন না। তিনি ছিলেন পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের একজন কর্মচারী।সেখান থেকে তিনি রাজনীতিতে এসেছেন।পেট্রোলিয়াম করপোরেশন থেকে দুর্নীতির দায়ে তার চাকরি চলে যায়।অথচ তিনি নিজেকে ক্লিন ইমেজ হিসেবে দাবি করেন। নামের পেছনে জনবন্ধু লেখেন। তার নির্বাচনী নিজ এলাকায় জনশত্রু হিসেবে পরিচিত।’

জি এম কাদেরকে জাপার অবৈধ চেয়ারম্যান বলেও দাবি করেন দলটি থেকে সম্প্রতি বহিষ্কার হওয়া রাঙ্গাঁ। বলেন, ‘জাতীয় পার্টির সাইনবোর্ড ব্যবহার করে মনোনয়ন বাণিজ্য করছেন জি এম কাদের।সম্ভাব্য প্রার্থীদের কাছ থেকে ৫ কোটি করে টাকা নিচ্ছেন’

‘আবার বিএনপির জোটে যাবেন, সে জন্য তাদের কাছ থেকেও টাকা নিয়েছেন। আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকবেন সেখান থেকেও টাকা নিচ্ছেন।দুই নৌকায় পা রেখে রাজনীতি হয় না। জি এম কাদের তাই করছেন।’

রাঙ্গাঁ আরও বলেন, ‘জি এম কাদের এরশাদ সাহেবের মৃত্যুবার্ষিকী পালন করতে চান না।কারণ এরশাদ সাহেব তাকে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে পাঁচবার বহিষ্কার করেছিলেন।সেই ক্ষোভ থেকে এরশাদ সাহেবের চিহ্ন মুছে ফেলতে চাচ্ছেন তিনি।’

বিরোধী দলের এই চিফ হুইপ আরও বলেন, ‘জিএম কাদের কখনও রাজনীতিবিদ ছিলেন না। তিনি ছিলেন পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের একজন কর্মচারী। সেখান থেকে তিনি রাজনীতিতে এসেছেন। পেট্রোলিয়াম করপোরেশন থেকে দুর্নীতির দায়ে তার চাকরি চলে যায়। অথচ তিনি নিজেকে ক্লিন ইমেজ হিসেবে দাবি করেন। নামের পেছনে জনবন্ধু লেখেন, তার নির্বাচনি নিজ এলাকায় জনশত্রু হিসেবে পরিচিত।’

আলোচনা সভায় কাজী মামুনুর রশিদ বলেন, ‘জিএম কাদেরের চারপাশে রয়েছে চাটুকারের দল। তারা জাতীয় পার্টিকে বাণিজ্যের প্লাটফর্ম বানিয়েছেন। এই কালো থাবা থেকে জাতীয় পার্টিকে মুক্ত করতে হবে। জাপার দলীয় গঠনতন্ত্রে যেসব কালোধারা রয়েছে, তা সংশোধন করা হবে আগামী জাতীয় কাউন্সিলে। দল থেকে যাদের বহিষ্কার করা হয়েছে, তাদের দলে ফিরিয়ে আনা হবে।’

সাবেক এমপি জিয়াউল হক মৃধা বলেন, ‘রওশন এরশাদ দল সংস্কার করার জন্য জাতীয় কাউন্সিল ডেকেছেন। আর জিএম কাদের জাতীয় পার্টিকে তার পিতৃ সম্পত্তি পেয়েছে বলে মনে করেন। আসলে এটি তার পিতৃ সম্পত্তি নয়। এটি এরশাদের সম্পত্তি। ভাইয়ের সম্পত্তি কখনও ভাই পায় না। এরশাদ সাহেবের সম্পত্তি পাবেন তার স্ত্রী রওশন এরশাদ।’

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রওশনপন্থী নেতা এস এম আলম। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন কাজী মামুনুর রশিদ, জিয়াউল হক মৃধা (বহিষ্কৃত), অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন, এম এ গোফরান, অধ্যাপক নুরুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, অধ্যাপক ইকবাল হোসেন রাজু প্রমুখ।

কালের আলো/এসবি/এমএম

Print Friendly, PDF & Email