ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বিকাশে খেলার মাঠের বিকল্প নেই: মেয়র আতিক

প্রকাশিতঃ 6:25 pm | September 29, 2022

নিজস্ব প্রতিবদক, কালের আলো:

ঢাকার মিরপুরে একটি খেলার মাঠ জবরদখল থেকে উদ্ধারের পর ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, তার কাছে খবর আছে মাঠটি দখলের পাঁয়তারা হচ্ছে এখনও। মিরপুরের প্যারিস রোড সংলগ্ন এই মাঠটি উদ্ধারের পর খেলার মাঠ হিসেবে ঘোষণা দেন মেয়র।

তিনি বলেন, আমাদের আগামীর ভবিষ্যৎকে যদি গড়তে হয়, সুস্থ সমাজ, সুস্থ ওয়ার্ড, সুস্থ শহর গড়তে গেলে আমাদের খেলার মাঠের কোনো বিকল্প নেই। আমাদের আজকের পরিকল্পনা হচ্ছে আমি আজকেই এখনই কাজ শুরু করে মাঠটা পরিষ্কার করব।

বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে মিরপুর-১১ নম্বরের প্যারিস রোড সংলগ্ন খেলার মাঠ পুনঃরুদ্ধারের দাবিতে কয়েকটি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাসহ স্থানীয় জনগণ অনশন করেন। সেখানে উপস্থিত হয়ে মেয়র আতিক মাঠটি উদ্ধার করে এসব কথা বলেন।

মেয়র আতিক বলেন, ‘ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বিকাশের জন্য খেলার মাঠের বিকল্প নেই। এই মাঠটি এখনো খেলার জায়গা আছে। এখানে এই মাঠ দখলে এভাবে যে পাঁয়তারা হচ্ছে, এটা আমি শুনেছি এবং আমার কাছে ম্যাসেজও আছে। সুস্থ সমাজ গড়তে হলে অবশ্যই আমাদের উন্মুক্ত স্থান রাখতে হবে। পাবলিক স্পেস রাখতে হবে। ঢাকা শহরে কিন্তু পাবলিক স্পেস নাই। সব দখল হয়ে যাচ্ছে। যেগুলো ছিল সেগুলো ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা চেষ্টা করছি।’

তিনি বলেন, ‘অনেকে প্রেশার দিচ্ছে যে, এখানে ইমিডিয়েটলি যেন স্থাপনাগুলো তৈরি করা হয়। আমাদেরকে দেখতে হবে আগামীর ভবিষ্যৎ যে শিশুরা আছে তাদের কী অবস্থা। আমার কাউন্সিলর আমাকে বারবার বলছে এই ওয়ার্ডের কথা। ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা বলছেন এখানে আমরা চেষ্টা করছি, মেয়র মহোদয় আপনারা একটু আসুন।’

ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘আমাদের আগামীর ভবিষ্যৎকে যদি গড়তে হয় সুস্থ সমাজ, সুস্থ ওয়ার্ড, সুস্থ শহর গড়তে গেলে আমাদের খেলার মাঠের কোনো বিকল্প নাই। আমাদের আজকের পরিকল্পনা হচ্ছে- আমি আজকেই এখনই কাজ শুরু করে মাঠটা পরিস্কার করব।’

আজকে আমি এখনই কাজ শুরু করে মাঠটা পরিষ্কার করব। শিশুদেরকে নিয়ে এখানে ফুটবল-ক্রিকেট খেলব। এটাই হচ্ছে আমার পরিকল্পনা।

এখানে ন্যাশনাল হাউসিং সোসাইটির মূল নকশার মধ্যে খেলার মাঠ রয়েছে। নতুন ড্যাপ সরকার যেটা প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন করেছেন, রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পর গেজেট হয়েছে। গেজেটের মধ্যে এটা উন্মুক্ত স্থান। যেখানে উন্মুক্ত স্থান, উন্মুক্ত খেলার মাঠ এখানে কিভাবে কে বা কারা কাদের জোরে এখানে তারা বিল্ডিং করবে এটা জনগণও দেখতে চায়, আমিও দেখতে চাই, সকলে দেখতে চায়।

এক প্রশ্নের জবাবে মেয়ের আতিক বলেন, আজকে আমরা মেয়েদের বা ছেলেদের বলি, মেয়েরা কিন্তু ফুটবলে সাফ জয় করে এসেছে। চ্যাম্পিয়ন হয়ে এসেছে। আমাদের ছেলেরা বলছে আমাদেরকে আরো বেশি মাঠ দেওয়া হোক। শিশুরা বলছে মাঠ দেওয়া হোক। একটা সুস্থ জাতি যদি তৈরি করতে হয় তাহলে খেলার মাঠের কোনো বিকল্প নাই। পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলা। খেলাধুলা এবং পড়াশোনার দুটি কিন্তু একটি আরেকটির সঙ্গে জড়িত। তোমরা শুধু পড়াশোনা করবে, খেলাধুলা করবে না, সেটা কিন্তু হবে না।

অন্য এক প্রশ্নের জবাব মেয়র আতিক বলেন, আমরা দেখতে চাই ড্যাবের ভিতরে কোন কোন জায়গাগুলো আছে যেটা উন্মুক্ত জায়গা হিসেবে চিহ্নিত করা। ড্যাবের ভেতরে যে জায়গাগুলো উন্মুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করা থাকবে সেই জায়গাগুলো অবশ্যই আমরা উন্মুক্ত করে ফেলব।

জানা যায়, মাঠটি মিরপুর ১৯৬৫ সালের পরিকল্পনায় খোলা জায়গা হিসেবে রাখা ছিল। যা পরে বস্তিতে রূপান্তর হয়। পরে ১৯৯৬ সালে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ জায়গাটি ৩২টি আবাসিক প্লটের জন্য বরাদ্দ করে। কিন্তু এখানে মালিকরা বাড়ি করতে গেলে বস্তিবাসীরা মামলা করেন।

প্লট মালিকরা জানিয়েছেন, ২০১৭ সালে রায় পাওয়ার পর আদালতের আদেশে বস্তি উচ্ছেদ হলেও তারা আর কখনও বাড়ি করতে পারে নাই।

কালের আলো/ডিএস/এমএম

Print Friendly, PDF & Email