পদ্মা জয়ে ফুরফুরে আওয়ামী লীগ

প্রকাশিতঃ 10:43 am | July 06, 2022

এম.আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, অ্যাকটিং এডিটর :

স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মাধ্যমে সংযোগ, যোগাযোগ ও সম্ভাবনার অনন্ত দুয়ার খুলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আত্মবিশ্বাসের এই সোনালি দখিন দরজা দেশের আত্মমর্যাদা, সামর্থ্য এবং সক্ষমতার উজ্জ্বল প্রমাণ হিসেবেই মানছেন সতের কোটির বাংলাদেশ।

ফলত বেশ ‘নির্ভার’ ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। কেন্দ্র থেকে তৃণমূল- দলটির নেতা-কর্মীরা উচ্ছ্বসিত ও ফুরফুরে মেজাজেই রয়েছেন।

দলটির নেতারাও মনে করছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে পদ্মা সেতুর মতোন ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এই স্থাপনার দৌলতে আওয়ামী লীগের ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা আরও বেড়েছে।

পদ্মার দু’পাড়ের অভাবনীয় সংযোগ ভোটের মাঠে নিয়ে আসবে ইতিবাচক ফলাফল। একই সঙ্গে রাজধানীতে মেট্রোরেল, চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু টানেলসহ মেগা প্রকল্পসমূহ উদ্বোধন ভোটারদের প্রভাবিত করবে। সহজ করবে টানা চতুর্থবার আওয়ামী লীগের বিজয়কে।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের ভাষ্য হচ্ছে- পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পরপরই আওয়ামী লীগ দ্বিগুণ শক্তিতে উজ্জীবিত হয়ে উঠেছে। পদ্মা জয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে যে আবেগ, উচ্ছ্বাস, অনুভূতি লক্ষ্য করা গেছে তাতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা উচ্ছ্বসিত এবং আবেগাপ্লুত। বিপরীতে পদ্মা সেতু ইস্যুতে বিএনপি রীতিমতো ধরাশায়ী হয়েছে। ফলে সামনের দিনগুলোতে তাদের আর মাঠ গরম করার সুযোগ বা সম্ভাবনাও ক্ষীণ হয়ে গেছে।

‘পদ্মা সেতু’ আওয়ামী লীগের ভোটব্যাংকের জন্য বড় রকমের একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে চিহ্নিত হবে, বলছিলেন আওয়ামী লীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতা।
তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে ঢাকাকে সংযুক্ত করার ফলে ২১ জেলা আওয়ামী লীগের জন্য ইতিবাচক ফলাফল নিয়ে আসবে। এর ফলে এই ২১ জেলায় আওয়ামী লীগের বিজয় অনেক সহজ হবে।’

দলটির মধ্যম সারির একজন নেতা বলছেন, ‘বিএনপির ৭ নেতাকে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে দাওয়াত দেওয়া হয়েছিল, বিএনপি নেতারা সেখানে যাননি। এর মধ্য দিয়ে তারা পদ্মা সেতুর উপকারভোগীদের কাছ থেকে নিজেদেরকে বিচ্ছিন্ন করেছে তারা। শুধু তাই নয়, পদ্মা সেতু নিয়ে আওয়ামী লীগ তার প্রচারণায় সুস্পষ্টভাবে দেখাতে পেরেছে যে, বিএনপি পদ্মা সেতু চায়নি। এর ফলে ভোটের হিসাব-নিকাশে আওয়ামী লীগের জন্য বড় ধরনের লাভ হয়েছে। শুধু তাই নয়, সাধারণ মানুষ যারা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন বিষয়ে সমালোচনা করতো তারাও এখন মনে করছে আওয়ামী লীগ পারে। এতো বড় পদ্মা সেতু যখন করেছে তখন এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখা দরকার।’

আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলছেন, সামনের দিনগুলোতে আরও চমক অপেক্ষা করছে। খুব শিগগির অনেকগুলো মেগা প্রকল্পের দ্বার উন্মোচন হতে যাচ্ছে। বিশেষ করে মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল এবং হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল বাংলাদেশের চেহারা পাল্টে দিবে এবং এসব হবে আওয়ামী লীগের নির্বাচনের বড় ধরনের ট্রাম্পকার্ড।

দলীয় সূত্র জানায়, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই একের পর এক মেগা প্রকল্প সফলভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ভোটের মাঠে চালকের আসনে থাকবে। এসব মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে দলটি তরুণ ভোটারদেরও মন জয় করতে সক্ষম হবে।

এই নতুন ভোটাররা সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, দেশ গঠনে আওয়ামী লীগের ভূমিকা, মুক্তিযুদ্ধে আওয়ামী লীগের অবদান, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ বিষয়গুলো পড়াশোনা করেও জেনেছে। রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগ এখন বিষয়গুলো তাদের কাছে কেবল নতুন করে উপস্থাপন করছে। অন্যদিকে মাঠের বিরোধী বিএনপিসহ তাদের সমমনাদের সহিংস রাজনীতি, স্বাধীনতা যুদ্ধ ও পরবর্তীতে তাদের ভূমিকা সবই জানে দেশের তরুণ সমাজ। সে কারণে তরুণরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকবে।

তাদের মন জয় করতে নানাভাবেই কাজ করে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে তিনি তরুণদের নিয়ে ভাবছেন। তথ্যপ্রযুক্তির ভিতরে তাদের কীভাবে প্রবেশ করানো যায় সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। ডিজিটাল বাংলাদেশ উপহার দিয়েছেন। তরুণদের নিয়ে বিভিন্ন সভা-সেমিনার ও সিম্পোজিয়াম করছেন। টেলিভিশনে তরুণদের নিয়ে মতবিনিময়, মুক্ত আলোচনাও করছেন।

এছাড়াও আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) তরুণ ভোটারদের টার্গেট করে ‘ইয়ং বাংলা’ প্লাটফর্ম তৈরি করেছে। এর সঙ্গে হাজার হাজার তরুণ-তরুণী সম্পৃক্ত। এই প্লাটফর্মের আওতায় তরুণদের উৎসাহিত করতে ‘জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড’ দেওয়া হচ্ছে। এই অ্যাওয়ার্ড কর্মসূচিতে তরুণদের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলেন এবং তাদের উৎসাহিত করেন সজীব ওয়াজেদ জয়।

কালের আলো/এসবি/এএএএমকে

Print Friendly, PDF & Email