সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, প্লাবিত সব এলাকা
প্রকাশিতঃ 10:50 am | May 18, 2022

সিলেট প্রতিবেদক, কালের আলো:
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসাম ও মেঘালয়ের পাহারি ঢলে থেমে থেমে পানি বেড়ে সিলেট নগরীসহ বেশির ভাগ এলাকাই এখন ভাসছে বন্যায়। এ ছাড়া নদী উপচে পানি উঠে গেছে নগরীর বেশির ভাগ এলাকায়।
জেলা প্রশাসনের হিসেবে সিলেটের ছয়টি উপজেলা বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যার্তদের সহায়তায় দ্বিতীয় দফায় চাল ও শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, সিলেটে নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্লাবিত হয়েছে কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, জকিগঞ্জ, জৈন্তাপুর ও সিলেট সদর উপজেলা। জেলার ১৩টি উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দী রয়েছে বলে স্থানীয় মানুষজন ও জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন।
স্থানীয় লোকজন বলেন, এক সপ্তাহ ধরে ভারতের উজান থেকে পাহাড়ি ঢল নামছে। পাশাপাশি সিলেটে ভারী বৃষ্টিও হচ্ছে। এতে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলায় বন্যা হয়েছে। জেলার প্রধান দুটি নদী সুরমা ও কুশিয়ারাসহ অন্য নদ-নদীর পানি উপচে একের পর এক এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। জেলা ও উপজেলার সঙ্গে সংযোগ স্থাপনকারী অন্তত ১০টি সড়ক তলিয়ে গেছে। ডুবে গেছে ফসলের খেত, ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। অসংখ্য বাসাবাড়িতেও পানিতে ঢুকেছে।
বুধবার (১৮ মে) সরেজমিনে দেখা গেছে, সিলেট নগরের অন্তত ২০টি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকায় হাঁটু থেকে কোমরসমান পানি রয়েছে।
জনপ্রতিনিধি ও প্লাবিত এলাকার মানুষজন বলেন, পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় জনদুর্ভোগ বেড়েছে। উপজেলা সদরের সঙ্গে অনেক গ্রামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। স্কুল-কলেজ, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়ায় কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এ অবস্থায় সিলেটকে বন্যা দুর্গত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করার জন্য বিভিন্ন সংগঠন দাবি তুলেছে।
তাঁরা আরও বলেন, ভারত থেকে নেমে আসা ঢলেই মূলত এ বন্যা দেখা দিয়েছে। আজ সকালেও কয়েক দফা ভারী বৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে যেখানে হাঁটু পানি ছিল, সেখানে দেখা দিয়েছে কোমরসমান পানি। বাড়িতে পানি ঢুকায় গবাদিপশু কোথায় রাখবেন, এ নিয়েও অনেক গৃহস্থ চিন্তায় রয়েছেন। প্লাবিত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে। দ্রুত প্লাবিত এলাকায় সরকারি ত্রাণ পৌঁছানোর দাবিও জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিধায়ক রায় চৌধুরী বলেন, বন্যাকবলিতদের জন্য নগরে ১৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এ ছাড়া দুটি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। শুকনো খাবার বিতরণেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
অপরদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আগামী ২৩ জুন পর্যন্ত সিলেটে বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। যে কারণে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এর আগে তলিয়ে গেছে কানাইঘাট, সদর, জকিগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, ফেঞ্চুগঞ্জ ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বেশির ভাগ এলাকা। অনেকে অবস্থান নিয়েছেন আশ্রয়কেন্দ্রে।
কালের আলো/ডিএস/এমএম