উন্নত সড়ক যোগাযোগে ‘মডেল’ বাংলাদেশ

প্রকাশিতঃ 10:41 am | March 31, 2022

এম.আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, অ্যাকটিং এডিটর :

‘তলাবিহীন ঝুড়ি’র অপবাদ কাটিয়ে বাংলাদেশ এখন দক্ষিণ এশিয়ার উদীয়মান অর্থনীতি। দারিদ্র্য জয় করে বিশ্বের বুকে উন্নয়নের রোল মডেল। স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারেও সামিল করেছে নিজেদের। বাঙালি জাতির চির আরাধ্য পুরুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ বিনির্মাণে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে সমন্বিত কার্যকর মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়িত হচ্ছে। ফলশ্রুতিতে অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর মতোই সড়ক অবকাঠামোয় এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

মহান স্বাধীনতার ৫১ বছরের পূর্তির মাহেন্দ্রক্ষণে বিশ্বমানের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে চলেছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ)। সড়ক ও মহাসড়কসমূহ নির্মাণে স্বচ্ছতার পাশাপাশি গুণগত মান বজায় রাখতে ‘শুন্য সহিষ্ণুতা’ নীতি বজায় রেখেছেন অধিদপ্তরটির প্রধান প্রকৌশলী এ, কে, এম, মনির হোসেন পাঠান।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলামের কার্যকর দিক নির্দেশনায় সময়োপযোগী টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য বাস্তবায়নে তিনি সুদৃঢ় নেতৃত্বে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন।

২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সড়ক অবকাঠামো গড়ে তোলার মাধ্যমে বাংলাদেশের উন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষে এই প্রধান প্রকৌশলী যোজন যোজন এগিয়ে চলেছেন। সমন্বিত পরিকল্পনায় অসামান্য অর্জনকল্পে তিনি সকলকে উৎসাহিত করছেন ‘টিম ওয়ার্ক’র মাধ্যমে অগ্রসর হতে।

সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আওতায় দেশে মোট ২২ হাজার ৪১৮ দশমিক ৯৫ কিলোমিটার মহাসড়ক রয়েছে। ইতোমধ্যে দেশের গুরুত্বপূর্ণ অনেকগুলো মহাসড়ক চারলেনে উন্নীত হয়েছে। দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও গতিময় ও সহজতর করেছে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-ময়মনসিংহ চারলেন মহাসড়ক। কয়েকটি মহাসড়ককে চারলেন থেকে আটলেনে উন্নীত করার কাজ চলমান রয়েছে। নিরাপদ সড়ক নেটওয়ার্ক বাস্তবায়নে সওজ বদ্ধপরিকর।

পাশাপাশি আধুনিক দৃষ্টিনন্দন সড়কও উপহার দিয়েছে এই অধিদপ্তর। ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রামের হাওরের বিশাল জলরাশির বুকচিরে তাঁরা নির্মাণ করেছে ২৯ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ অলওয়েদার সড়ক। হাওরের অথৈ জলরাশির ভেদ করে দিগন্তে হারিয়ে যাওয়া সড়কটি দেখলে মনে হতে পারে সমুদ্রের বুকে ভাসমান এক পথ। সকাল ও সন্ধ্যায় হাওরের মাঝে এই সড়কের রূপ অনবদ্য।
‘ভাটির শার্দুল’ রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের একান্ত ইচ্ছে অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে কিশোরগঞ্জ জেলার তিন উপজেলার মধ্যে সারা বছর চলাচলের সুবিধা নিশ্চিত করেছে। অভিভূত হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও।

এই অলওয়েদার সড়কের ভিডিও চিত্র দেখে বিমুগ্ধ বিস্ময়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘ইশ! এই সড়কে কবে যে যাব। আমার মনটা পড়ে থাকলো। এই সড়ক দিয়ে গাড়িতে করে যাব। প্রেসিডেন্টও চান আমি যেন সরাসরি যাই। আমি যাবো, করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে এই সড়ক দেখতে যাবো।’

সূত্র জানায়, এছাড়াও বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় কমিয়ে অর্থ সাশ্রয়েরও নজির স্থাপন করেছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। নতুন প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়নের পাশাপাশি বিদ্যমান সড়কসমূহের সংস্কারের কাজও চলমান রয়েছে।

একই সঙ্গে দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সেতু ও কালভার্ট উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজেও নিজেদের কর্মদক্ষতার স্বাক্ষর রেখে চলেছেন সওজ’র প্রকৌশলীরা। এই অধিদপ্তরের অধীনে বর্তমানে প্রায় ২২ হাজার ৪১৮ দশমিক ৯৫ কিলোমিটার সড়ক, ৩ হাজার ৫৪৮টি ব্রিজ, ৮৫৬টি বেইলি ব্রিজ, ১৪ হাজার ৮১৪টি কালভার্ট রয়েছে। এই অধিদপ্তরের আওতায় বর্তমানে ১৮৫ টি প্রকল্প চলমান রয়েছে।

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) প্রধান প্রকৌশলী এ, কে, এম, মনির হোসেন পাঠান মানসম্পন্ন ও টেকসই কাজ বাস্তবায়নে প্রকৌশলীদের পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নেও গুরুত্ব দিচ্ছেন। সড়ক অবকাঠামোর স্থায়ীত্ব বাড়াতে তিনি মনোনিবেশ করেছেন টেকসই উন্নয়নের কাক্সিক্ষত মাত্রা অর্জনে। এছাড়াও সরকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে সরকার নতুন নতুন যেসব পরিকল্পনা ও প্রকল্প গ্রহণ করছে সেগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে নিজের দৃঢ় অঙ্গীকারের কথা জানিয়েছেন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) এই প্রধান প্রকৌশলী।

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আওতাধীন চলমান উন্নয়ন প্রকল্পসহ সকল মেরামত ও সংস্কার কাজ যেন স্পেসিফিকেশন ও নকশা অনুযায়ী যথাযথ মানে, গুণে ও প্রতিটি দফার নির্ধারিত পরিমাণে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ হয় সেই বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা প্রদান করেছেন প্রধান প্রকৌশলী এ, কে, এম, মনির হোসেন পাঠান।

উন্নয়নমূলক কাজসমূহ চলাকালীন সময়ে জনগণের দুর্ভোগ যেন যথাসম্ভব সহনশীল সীমার মধ্যে থাকে সেই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে তিনি সজাগ দৃষ্টি রাখতে বলেছেন। এছাড়াও আসন্ন ঈদ-উল-ফিতরের সময় জনসাধারণের নিরবচ্ছিন্ন ও আরামদায়ক যাতায়াত নিশ্চিতকরণের লক্ষে ইতোমধ্যেই সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আওতাধীন সকল ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক মেরামতের জন্য প্রধান প্রকৌশলী মাঠ পর্যায়ে নির্দেশ প্রদান করেছেন।

জানতে চাইলে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) প্রধান প্রকৌশলী এ, কে, এম, মনির হোসেন পাঠান দৈনিক সন্ধানী বার্তাকে বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’র স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ ও গতিশীল নেতৃত্বে বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

সরকারের রূপকল্প বাস্তবায়নে দেশের সড়ক নেটওয়ার্কে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধনের লক্ষে মাননীয় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং সচিব মো. নজরুল ইসলাম মহোদয়ের নেতৃত্বে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’

কালের আলো/এসবি/এমএম

Print Friendly, PDF & Email