গ্রাম-গঞ্জের বর্জ্যকেও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় আনতে কাজ করছে সরকার: এলজিআরডি মন্ত্রী

প্রকাশিতঃ 5:27 pm | March 20, 2022

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম বলেছেন, শহরের পাশাপাশি প্রত্যন্ত গ্রাম-গঞ্জে উৎপন্ন বর্জ্যকেও একটি সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মধ্যে আনতে কাজ করছে সরকার।

রোববার (২০ মার্চ) রাজধানীর সিরড্যাপ মিলতায়নে আয়োজিত ‘সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন শেয়ারিং’ বিষয়ক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, মানুষের সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি বর্জ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশে অতীতে যে পরিমাণ বর্জ্য উৎপাদন হতো তার পরিমাণ বহুগুণ বেড়েছে। কারণ মানুষের অর্থনৈতিক সক্ষমতা বেড়েছে। মানুষের আয় বাড়লে ভোগ বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। আর ভোগ বাড়লে ময়লা-আবর্জনাও বৃদ্ধি পাবে।

তিনি জানান, বর্জ্য সকল দেশের জন্যই একটি চ্যালেঞ্জ। বর্জ্যকে একটি সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় আনতে স্থানীয় সরকার বিভাগের নেতৃত্বে কাজ চলছে। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন নিয়ে ঢাকা দুই সিটি কর্পোরেশন, গাজীপুর, চট্টগ্রামে, নারায়নগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের শুরুর ব্যবস্থা করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সকল সিটি কর্পোরেশন এবং জেলা-উপজেলা ও পৌরসভাতেও বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ করা হবে। উন্নত বিশ্ব যেভাবে বর্জ্য কালেকশন করে ইনসিনারেশনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে সেই ফর্মুলা ফলো করেই আমাদের দেশেও কাজ করা হচ্ছে।

নদী-নালা, খাল-বিল, লেক ও খালসহ যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলা থেকে সবাইকে বিরত থাকার আহবান জানিয়ে মো. তাজুল ইসলাম বলেন, গ্রামেও এখন প্রচুর ময়লা-আবর্জনা উৎপন্ন হয়। গৃহস্থলী, শিল্প-কলকারখানা, কনস্ট্রাকশন বর্জ্য, মেডিকেল বর্জ্য। ময়লা-আবর্জনাতে ক্ষতিকারক অনেক উপাদান থাকে যা মানুষের স্বাস্থ্যের হানিকর হতে পারে। বিশেষ করে মেডিকেল বর্জ্য।

তিনি আরও বলেন, ঢাকা উত্তর ও সিটি কর্পোরেশনে প্রতিদিন প্রায় তিন হাজার টন, চট্টগ্রামে দুই হাজার পাঁচ শো টন, গাজীপুর দুই হাজার টন এবং নারায়ণগঞ্জে প্রচুর বর্জ্য উৎপন্ন হচ্ছে। এসব বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজ চলছে। এতে করে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে।

সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন-এসটিএস-এ ময়লা-আবর্জনা রাখায় প্রচুর দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। এতে করে পথচারী এবং আশপাশের বসবাসরত মানুষের ব্যাপক সমস্যা হয়। তাই দুর্গন্ধ যেন না ছড়ায় এবং প্রযুক্তিগত বিকল্প ব্যবস্থার সুযোগ আছে কিনা তা পর্যালোচনা করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটিয়ে দেশকে সোনার বাংলায় পরিণত করা। কিন্তু ৭৫ এর ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে শহীদ করার পর সে স্বপ্নের পথ রুদ্ধ হয়ে পড়ে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন-বাস্তবে রুপ দিতে কাজ শুরু করেন। স্বাধীনতার পর এতো অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ যে উন্নয়ন অর্জন করেছে তা বিশ্বে বিস্ময় সৃষ্টি করেছে। দেশ পরিচিত পেয়েছে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে।

দেশ উন্নত হলে এর সুফল জনগণই পাবে। দেশের ক্ষতি হলে এর ফলাফল দেশের নাগরিকেই ভোগ করতে হবে। তাই দেশের উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সকল ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান মন্ত্রী।

স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি।

এছাড়া জাইকার কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ, স্থানীয় সরকার বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, সকল সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিব, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞজন উপস্থিত ছিলেন।

কালের আলো/এসবি/এমএম

Print Friendly, PDF & Email