আর বসবে না দশম সংসদ

প্রকাশিতঃ 11:27 pm | October 29, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

শেষ হলো দশম জাতীয় সংসদের ২৩তম অধিবেশন। এর মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়েছে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের সময়কার সংসদীয় কার্যক্রমও।

গতকাল রাতে সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্যদের মেয়াদ আরও দশ বছর বাড়ানোসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ আইন প্রণয়ন ও বিল পাসের ঘটনাবহুল এ সংসদের সফল সমাপ্তি ঘোষণা করেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। তার আগে সমাপনী ভাষণ দেন সংসদ নেতা শেখ হাসিনা।

জরুরি সংকটকালীন বা যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি তৈরি না হলে বসবে না বর্তমান সংসদের আর কোনো অধিবেশন- এ ঘোষণা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর সফল সমাপ্তিতে কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানান সংসদ সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে। স্পিকারও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানান তার বক্তব্যে। ২৩তম অধিবেশন সমাপ্তি সংক্রান্ত রাষ্ট্রপতির আদেশ পাঠের মাধ্যমে বিদায় নেন স্পিকার আর সংসদীয় গণতন্ত্র ও উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারের আমলে নেয়া নানা প্রকল্প, উন্নয়ন চেষ্টা ও সাফল্যের কথা তুলে ধরেন। আশা করেন, জনগণ তার মূল্যায়ন করে আবার তাদেরকে ভোট দিয়ে সরকারে পাঠাবে।

ক্ষমতায় ফিরতে পারলে দারিদ্র্যমুক্ত এবং দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণাও দেন প্রধানমন্ত্রী। আঘা ঘণ্টারও বেশি বক্তব্য রাখার পর সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে শেষে তিনি বলেন, ‘আবার আসিব ফিরে/ ধানসিঁড়িটির তীরে/এই বাংলায়/ আবার আসিব ফিরে এই সংসদে।’ প্রধানমন্ত্রীর আগে তার সমাপনী বক্তব্যে বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ সবাইকে মিলেমিশে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সুষ্ঠু করার আহŸান জানান। চলতি সংসদকে সবচেয়ে সফল দাবি করে তিনি বলেন, অতীতে কোনো বিরোধী দল এতটা গঠনমূলক ভূমিকা রাখতে পারেনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্পিকারসহ সংসদের সবার প্রতি তিনিও কৃতজ্ঞতা জানান।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত দশম সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়েছিল ওই বছরের ২৯ জানুয়ারি। সেই হিসাবে আগামী বছরের ২৮ জানুয়ারি এর মেয়াদ শেষ হচ্ছে।

৪১০ কর্মদিবসের দশম সংসদে ১৯৩টি বিল পাস হয়েছে, যা একটি রেকর্ড। এর মধ্যে ২৩তম অধিবেশনে ১৮টি ও ২২তম অধিবেশনে ১৯টি বিল পাস হয়েছে। সংসদ বর্জনের কোনো ঘটনাও এবারের সংসদে ঘটেনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন ৩৩৮ দিন, প্রধানমন্ত্রীর এতোদিন উপস্থিত থাকার ক্ষেত্রেও এটি নতুন রেকর্ড। বিরোধী দলীয় নেতাও উপস্থিত ছিলেন রেকর্ড সংখ্যক ২৪১ দিন।

দশম জাতীয় সংসদের অধিবেশন শুরুর পর থেকে নির্বাচিত মোট ১৫ জন সংসদ সদস্য মারা গেছেন। তাদের মধ্যে গত ২৬ জুলাই আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মোস্তফা রশিদী সুজা ও ১৩ আগস্ট বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য তাজুল ইসলাম মারা গেছেন। পাঁচ কার্যদিবস চলা ২৩তম ও শেষ অধিবেশনের শুরুতেই তাদের স্মরণে শোকপ্রস্তাব গ্রহণ করে জাতীয় সংসদ।

গত ১২ জুলাই সংসদের ২২তম অধিবেশন শেষ হয়। সংবিধান অনুযায়ী একটি অধিবেশন শেষ হওয়ার ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে পরবর্তী অধিবেশন বসার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে সংসদ নির্বাচনের জন্য মেয়াদের শেষ ৯০ দিনে এই বিধানের শিথিলতা রয়েছে। অর্থাৎ ৩১ অক্টোবর থেকে ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত ৯০ দিনের মধ্যে সংসদ বসার বাধ্যবাধকতা থাকছে না। এই সময়কালের মধ্যেই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের বিধান রয়েছে।

আগামী ১ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন (ইসি) রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করার পর প্রথম সপ্তাহেই আগামী সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে বলে কথা রয়েছে। ভোটের হাওয়া

দশম সংসদে মোট ২৩টি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হলেও নবম সংসদে হয়েছিল ১৯টি অধিবেশন।

কালের আলো/ওএইচ

Print Friendly, PDF & Email