ঢাবি রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট নির্বাচন: আ.লীগ ২৪, বিএনপি ১

প্রকাশিতঃ 10:28 pm | January 21, 2018

স্টাফ রিপোর্টার | কালের আলো:  

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট নির্বাচন আওয়ামী লীগ সমর্থিত গণতান্ত্রিক ঐক্য পরিষদ ভূমিধস জয় পেয়েছে। মোট ২৫টি পদের মধ্যে তারা জিতেছে ২৪টিতে। বিএনপি সমর্থিত জাতীয়তাবাদী পরিষদ জিতেছে একটি মাত্র পদে। বাম সমর্থিত প্রগতি পরিষদ কোনো পদেই জিততে পারেনি।

গত ৬, ১৩ এবং ২০ জানুয়ারি এই ভোট হয়েছে। এই ভোটগ্রহণ হয় দেশের বিভিন্ন এলাকায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভোট হয় শনিবার। আজ রবিবার বিকালে ফল প্রকাশ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো উপাচার্য নাসরিন আহমেদ।

তিনি বলেন, ‘ভোট সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এখানে ভোট কারচুপি বা জালিয়াতির কোনো অভিযোগ ওঠেনি।’ এবারের নির্বাচনে ভোটার ছিল ৪৩ হাজার ৯৯৭ জন। এদের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ২২ হাজার ৬৪২ জন।বাতিল হয়েছে ১২৬০টি ভোট।

এই নির্বাচনটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীক হলেও ভোটার ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে সারা দেশেই। এই নির্বাচনে কোনো দলের পক্ষ থেকে প্রভাব বিস্তারের সুযোগ কম থাকে। যদিও নির্বাচন হয় দলের সমর্থনেই।

আজ ফলাফল ঘোষণার সময় একের পর এক আওয়ামী লীগপন্থীর নাম ঘোষণা হতে থাকলে উল্লাস দেখান এবং ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দেয়।

ভোটের পর এক প্রতিক্রিয়ায় সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জিনাত হুদা ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘এই বিজয় মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির বিজয়। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে তার কন্যা দেশনেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃতে আমরা দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাব।’

নিজেদের লক্ষ্য বর্ণনা করে জিনাত হুদা বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ালেখার মান বাড়ানো ও অন্যান্য সকল সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে জ্ঞান গরিমায় এই বিশ্ববিদ্যালয়কে পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপিঠে পরিণত করাই আমার মূল লক্ষ্য।’

এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগপন্থী, বিএনপিপন্থী এবং বামপন্থী প্যানেলের বাইরেও কয়েকজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়াই করেন। মোট প্রার্থীর সংখ্যা ছিল ৮০ জন।

নির্বাচিত এই ২৫ জন বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার কেন্দ্ সিনেটে দায়িত্ব পালন করবেন। সিনেটে মোট সদস্য ১০৫ জন।

বিজয়ী যারা

গণতান্ত্রিক ঐক্য পরিষদ নির্বাচিত প্রার্থীরা হলেন- মো. আতাউর রহমান প্রধান (প্রাপ্ত ভোট ১২ হাজার ৯৬৭), এ. এস. এম. মাকসুদ কামাল (প্রাপ্ত ভোট ১২ হাজার ৪৬), এম. ফরিদ উদ্দিন (প্রাপ্ত ভোট ১১ হাজার ৯৬৮), এ. আর. এম. মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল (প্রাপ্ত ভোট ১১ হাজার ৯২৪), এস. এম. বাহালুল মজনুন (প্রাপ্ত ভোট ১১ হাজার ৫৯৬), মুহাম্মদ আবদুস সামাদ (প্রাপ্ত ভোট ১১ হাজার ৫৬৮), জিনাত হুদা (প্রাপ্ত ভোট ১১ হাজার ৫৫৭), অসীম সরকার (প্রাপ্ত ভোট ১১ হাজার ৩৩৫), এম. ইকবাল আর্সলান (প্রাপ্ত ভোট ১১ হাজার ২২০), সাদেকা হালিম (প্রাপ্ত ভোট ১১ হাজার ১৬৭), মাহফুজা খানম (প্রাপ্ত ভোট ১১ হাজার ১২০), তাজিন আজিজ চৌধুরী (প্রাপ্ত ভোট ১১ হাজার ৮৫), এমরান কবির চৌধুরী (প্রাপ্ত ভোট ১১ হাজার ৩৩), এ. এইচ. এম. এনামুল হক চৌধুরী (প্রাপ্ত ভোট ১০ হাজার ৯২৪), মো. লিয়াকত হোসেন মোড়ল (প্রাপ্ত ভোট ১০ হাজার ৮৩৮), মোঃ আলাউদ্দিন (প্রাপ্ত ভোট ১০ হাজার ৭৮৬), সৈয়দ হুমায়ুন আখতার (প্রাপ্ত ভোট ১০ হাজার ৭৩৯), রামেন্দু (কৃষ্ণ) মজুমদার (প্রাপ্ত ভোট ১০ হাজার ৬৮১), এ. বি. এম. বদরুদ্দোজা (প্রাপ্ত ভোট ১০ হাজার ৬৭২), নিজাম চৌধুরী (প্রাপ্ত ভোট ১০ হাজার ৫২৮), মো. আব্দুল আজিজ (প্রাপ্ত ভোট ১০ হাজার ৫১২), আ. ফ. ম. ইউসুফ হায়দার (প্রাপ্ত ভোট ১০ হাজার ৫০০), মোহাম্মদ আব্দুল বারী (প্রাপ্ত ভোট ১০ হাজার ৪৫২), রঞ্জিত কুমার সাহা (প্রাপ্ত ভোট ৯ হাজার ৯৬৭) এবং মো. নাসির উদ্দিন (প্রাপ্ত ভোট ৯ হাজার ৮১৮)।

এই প্যানেল থেকে হেরেছেন একমাত্র শরীফ আহমেদ সাদী।

জাতীয়তাবাদী পরিষদের নির্বাচিত একমাত্র প্রার্থী হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার।

নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়া আতাউর রহমানের বাক্সে পড়েছে ১২ হাজার ৯৬৭টি ভোট। এ ছাড়া এস এম মাকসুদ কামাল পেয়েছেন ১২ হাজার ৪৬ ভোট। ১১ হাজার থেকে ১২ হাজারের কম ভোট পেয়েছেন ১১ জন।

১০ হাজারের বেশি এবং ১১ হাজারের কম ভোট পেয়েছে নয় জন। আর সবচেয়ে কম ভোট পেয়ে বিজয়ী দুই জন হলেন যথাক্রমে রঞ্জিত কুমার সাতা (৯ হাজার ৯৬৭ ভোট) এবং মো. নাসির উদ্দিন (৯ হাজার ৮১৮ ভোট)

বিএনপি সমর্থিত জাতীয়তাবাদী প্যানেলের একমাত্র বিজয় আ ফ ম ইউসুফ হায়দারের বাক্সে পড়েছে ১০ হাজার ৫০০ ভোট।