ফাঁস নতুন ষড়যন্ত্র, ক্ষমতায় যেতে ভারতের দ্বারস্থ বিএনপি!

প্রকাশিতঃ 11:12 am | June 19, 2018

বিশেষ প্রতিবেদক, কালের আলো :

সংসদের বাইরে থাকা রাজনৈতিক দল বিএনপি মুখে যতই ভারত বিরোধীতা করুক না কেন তলে তলে তারা ভারতের সমর্থন নিয়েই ক্ষমতার মসনদ দখল করতে চায়। সম্প্রতি দলটির একাধিক নেতার ভারত সফর এবং দলীয় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ভারতের তাছে সুষ্ঠু-অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের আকুতি আড় চোখেই দেখছেন স্থানীয় জনসাধারণ। তারা বিএনপি’র এমন ডাবল স্ট্যান্ডার্ডকে রাজনৈতিক দেউলিয়াপনার নামান্তর বলেও মনে করছেন।

জানা যায়, আওয়ামী লীগ ভারতের কাছে দেশ বিক্রি করে দিচ্ছে অনেক দিন যাবতই এমন অভিযোগ করে আসছে খালেদা-তারেকের নেতৃত্বাধীন বিএনপি। মূলত এমন অভিযোগের মধ্যে দিয়ে সুপরিকল্পিতভাবেই রাজনৈতিক অঙ্গণে একটি বিশৃঙ্খলা তৈরির পরিকল্পনা করে আসছে দলটি।

কিন্তু এতোদিন ভারতের বিরোধীতার মাধ্যমে মুখে ফেনা তোলা দলটি এবার নিজেরাই একই বিতর্কে জড়াচ্ছে। দেশ নয়, ক্ষমতাই দলটির একমাত্র টার্গেট হওয়ায় প্রয়োজনে ভারতের সঙ্গে তারা অঙ্গীকারনামায় যেতেও প্রস্তুত।

তবে বিএনপি’র ক্ষমতার সময়ে ভারতে অস্থিতিশীল করতে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনকে পৃষ্ঠপোষকতা ও দশ ট্রাক অস্ত্রের চালানের বিষয়টি ঘটে যাওয়ায় ভারত কোন অবস্থাতেই আস্থা রাখতে পারছে না বিএনপি’র ওপর। ফলে দলটির ভারত সফরকারী নেতারা কোন প্রকার গ্রিণ সিগন্যাল ছাড়াই আশাহত হয়ে দেশে ফিরেছেন বলে মত বিশ্লেষকদের।

সূত্র মতে, ভারতকে নিয়ে বিএনপি তাদের মনোভাবে পরিবর্তন এনেছে। আর এটার মূল কারণ যে কোনভাবে ক্ষমতার স্বাদ গ্রহণ করা। মূলত ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়তেই জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দলটি। এ নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা ও কানাঘুষা চলছে।

একই সূত্র জানায়, সম্প্রতি লন্ডন সফরকালে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিবিসি স্টুডিওতে এক সাক্ষাতকারে বলেছেন, বিএনপি ভারতের কাছে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়। ফখরুলের এমন বক্তব্যের সূত্র ধরে রাজনৈতিক অঙ্গণে তোলপাড় শুরু হয়েছে।

এ নিয়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে ধুন্ধুমার সমালোচনা। দলটির মহাসচিবের এমন বক্তব্য প্রকারান্তরে ভারতের কাছে দেশ বিক্রি করে দেয়ার পরিকল্পনারই নামান্তর বলে মনে করছেন দেশের সাধারণ মানুষ।

জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেউ কেউ বলছেন, সরকার পতনের একের পর এক ব্যর্থ আন্দোলন করে দলটির শীর্ষ নেতারা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। এখন তারা পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসার নীল নকশা আঁটছে।

এজন্য তারা ভারতকে অঙ্গীকারনামাও দিচ্ছে। প্রতিবেশি রাষ্ট্রের কাছে তাঁরা যেভাবে ধর্ণা দিচ্ছে তা স্পষ্টতই ইঙ্গিত করছে, দেশ নয়, ক্ষমতায় যেতেই মরিয়া দলটি।

দেশের স্থানীয় জনসাধারণের কারো কারো মতে, বিএনপি মূলত পাকিস্তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে ভারত বিরোধিতা ও ভারত বিদ্বেষকে সম্বল করে বাংলাদেশের রাজনীতির মাঠে নিজেদের সরব রাখার অব্যাহত চেষ্টা চালিয়ে এসেছে এতোদিন।

আবার একই সঙ্গে দেশের একান্ত অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে অযাচিতভাবে ভারতের কাছে তারা ধর্ণা দিচ্ছে, যার ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের মানুষ বিভ্রান্তিতে থাকছে এবং গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এটা দেশের জন্য অসামান্য ক্ষতি করছে। ধর্মকে তারা রাজনীতির মাঠে এনে ধর্ম ও রাজনীতি দু’টোরই ক্ষতি করছে।

কোন কোন সূত্র বলছে, ভারত কোন অবস্থাতেই বিএনপিকে বিশ্বাস করতে চায় না। সর্বশেষ বাংলাদেশ সফরকালে বিএনপি’র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ খালেদার কাছে জানতে চেয়েছিলেন ‘আপনার ছেলেকে নিয়ে কী ভাবলেন?’ সুষমার এমন বক্তব্য বিএনপি’র প্রতি ভারতের মনোভাব অপরিবর্তনীয় বলেই মনে করেন বিশ্লেষকরা।

কারো কারো মতে, ভারত দশ ট্রাক অস্ত্রের কথা কোনদিন ভুলবে না। তাছাড়া বিএনপি’র জঙ্গি অর্থায়ন, জামায়াতপ্রীতিই ভারত-বিএনপি’র সম্পর্ক আজীবন সন্দেহের দৃষ্টিতেই রাখবে। একই সঙ্গে বিএনপি নেতাদের ভারত সফর আশার গুড়েবালি ছাড়াই কিছুই নয়।

কালের আলো/এএ

** দ্রুত খবর জানতে ও পেতে কালের আলো’র ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে রাখুন: KalerAlo/Facebook