‘একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় পুলিশকে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন হতে হবে’

প্রকাশিতঃ 10:13 pm | September 05, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় পুলিশকে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, বিপিএম(বার)।

তিনি বলেছেন, বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে অপরাধের ধরণ ও মাত্রা পাল্টেছে। প্রযুক্তিগত অপরাধ বাড়ছে। একবিংশ শতাব্দীর এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় পুলিশকে আধুনিক ও প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন হতে হবে। বাংলাদেশ পুলিশ সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ, সাইবার ক্রাইম, সংঘবদ্ধ অপরাধ দমনে বদ্ধপরিকর।

বৃহস্পতিবার(৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর মিরপুরে পুলিশ স্টাফ কলেজে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

আইজিপি বলেন, ইন্টারপোল আন্ত:দেশীয় অপরাধ মোকাবেলায় বাংলাদেশ পুলিশের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধিতে এগিয়ে এসেছে। ইন্টারপোলের ১৯৪টি সদস্য দেশের সহযোগিতায় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদেরকে পুলিশিং এর বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষ করে তুলছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পুলিশ সদস্যদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ইন্টারপোলের এধরণের উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়।

‘বিশ্বব্যাপী পুলিশ সদস্যদের মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়ের ক্ষেত্রে ইন্টারপোল বিশ্বের সকল দেশের পুলিশের একমাত্র প্রতিষ্ঠান।’

পুলিশ প্রধান বলেন, সবার জন্য নিরাপদ আবাসস্থল হিসেবে গড়ে তুলতে হলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার কোন বিকল্প নেই। ক্রমবর্ধমান আন্ত:দেশীয় অপরাধ দমনে বিভিন্ন দেশের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর বিকল্প নেই। বিভিন্ন দেশের পুলিশের মধ্যে তথ্য আদান প্রদান এবং অভিজ্ঞতা বিনিময়ের ক্ষেত্রে ইন্টারপোলের বিকল্প নেই।

অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে পুলিশের ওপর পরপর চারটি হামলার ঘটনায় কাউকে চিহ্নিত করা গেছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, হামলাগুলোর প্রত্যেকটিই বিশ্লেষণ করছি। যেসব মামলা হয়েছে ,সেগুলো নিয়ে গভীরভাবে তদন্ত চলছে। সঠিকভাবে যাতে তদন্ত হয়, সেজন্য মনিটরিং করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে তদন্ত তদারকির জন্য সহায়ক টিমও গঠন করেছে ডিএমপি। আশা করছি, খুব শিগগিরই প্রত্যেকটি ঘটনার মধ্যে যে যোগসূত্র রয়েছে, তা বের করতে পারবো।

এজন্য বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, ডিএমপি, জঙ্গিবিরোধী সংস্থাগুলো কাজ করছে বলেও জানান তিনি।

মিরপুর পুলিশ স্টাফ কলেজের রেক্টর শেখ মুহম্মদ মারুফ হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইন্টারপোল সিবিটি পরিদফতরের ভারপ্রাপ্ত সহকারি পরিচালক ম্যাগালিঙ্গম ভিমান।

বক্তব্যে ম্যাগালিঙ্গম ভিমান বলেন, আন্ত:রাষ্ট্রীয় অপরাধ দমনে পারস্পরিক সহযোগিতা আরও সুদৃঢ় ও সুসংহত করার উদ্দেশ্যেই আজকের এ প্রশিক্ষণ। যাতে করে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সন্ত্রাস, মানবপাচার, অস্ত্র ও মাদক পাচার এবং দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা এ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কাজে লাগানো যায়।

তিনি বলেন, এ প্রশিক্ষণ এ অঞ্চলের দেশগুলোর পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে পারস্পরিক পেশাগত অভিজ্ঞতা বিনিময়ে সুযোগ ঘটাবে। তিনি বাংলাদেশ পুলিশ, এনসিবি ঢাকা ও পুলিশ স্টাফ কলেজকে এ ধরণের প্রশিক্ষণ আয়োজনে সহায়তা করায় ধন্যবাদ জানান।

সভাপতির বক্তব্যে শেখ মুহম্মদ মারুফ হাসান বলেন, এ কোর্সটি এশিয়া ও দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে সহযোগিতা এবং বন্ধুত্ব সুদৃঢ় করবে এবং এ অঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র পুলিশ স্টাফ কলেজ হিসেবে পুলিশ স্টাফ কলেজ বাংলাদেশ পেশাদার ও দক্ষ পুলিশ বাহিনী গড়ার লক্ষ্যে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।

প্রশিক্ষণ কোর্সটিতে ভারত থেকে দু’জন, ভুটান থেকে এক জন, মালদ্বীপ থেকে এক জন, পূর্ব তিমুর থেকে দু’জন, শ্রীলঙ্কা থেকে এক জন, ফিলিপাইন থেকে এক জন, উজবেকিস্থান থেকে এক জন, ব্রুনাই থেকে দু’জন, জাপান থেকে এক জন, নিউজিল্যান্ড থেকে এক জন ও বাংলাদেশ থেকে পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তাসহ মোট ১৮ জন অংশ নেন।

জিম্বাবুয়ে, সিংগাপুর, ফ্রান্স ও নিউজিল্যান্ড থেকে মোট চারজন বিদেশি প্রশিক্ষক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করেন।

কালের আলো/বিআর/এমএম