নারায়ণগঞ্জে শামীম ওসমানপন্থীদের সশস্ত্র হামলার ছবি প্রকাশ

প্রকাশিতঃ 6:42 pm | July 03, 2025

কালের আলো ডেস্ক:

নারায়ণগঞ্জ শহরে ঘটে যাওয়া এক নৃশংস সশস্ত্র হামলার ঘটনাকে ঘিরে আবারও আলোচনায় উঠে এসেছে একসময়ের ক্ষমতাসীন দলের আলোচিত নেতা শামীম ওসমানের নাম। প্রায় এক বছর পর সেই রোমহর্ষক ঘটনার কিছু অভাবনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ আলোকচিত্র সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে। এই ছবিগুলো ধারণ করেছিলেন সাহসী আলোকচিত্রী পারভেজ আসিফ আহমেদ উচ্ছা।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) নিজের ফেসবুকে বেশকিছৃ ছবিসহ পোস্ট দেন প্রবাসী অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের খান সামি।

ওই পোস্টের তথ্য অনুযায়ী, ১৯ জুলাই শামীম ওসমানের প্রত্যক্ষ নেতৃত্বে এবং তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী অয়ন ওসমান, তানভীর আহম্মেদ টিটু, খোকন সাহা, এসএম রানা, শাহ নিজাম, সালাউদ্দিন চৌধুরী বিটু ও কাওসার আহমেদের মদদে এক সশস্ত্র হামলার ঘটনা সংঘটিত হয় নারায়ণগঞ্জ শহরে। তারা দেশি-বিদেশি অস্ত্র হাতে ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি করতে থাকে। হামলার সময় বিভিন্ন স্থানে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, সাধারণ মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে।

ঘটনার সময় সাংবাদিক পারভেজ আসিফ তার নিজস্ব ক্যামেরায় ওই সব দৃশ্য ধারণ করছিলেন। আলোকচিত্র ধারণের সময় তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়ে ওসমানপন্থী বাহিনী। এতে তিনি আহত হন। তবে জীবনবাজি রেখে তিনি কিছু গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত ক্যামেরায় ধারণ করতে সক্ষম হন।

প্রকাশিত ছবিগুলোর মধ্যে দেখা যাচ্ছে— চাষাড়া মোড়, কালীরবাজার ও আশপাশের সড়কে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের বেশ কিছু নেতাকর্মী প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে ঘোরাফেরা করছে। কারো কারো হাতে আগ্নেয়াস্ত্র, কারো কাছে দা, চাপাতি ও লাঠি—স্পষ্ট সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ছবি। এসব ছবি একটি পূর্ণাঙ্গ হামলা পরিকল্পনার ইঙ্গিত বহন করে।

ছবিগুলোতে দেখা যাচ্ছে, শার্ট ও গেঞ্জি পরে থাকা একাধিক ব্যক্তি অন্যদের গুলি করার নির্দেশ দেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই গুলির শব্দ ও চিৎকারে এলাকা কেঁপে ওঠে। সাধারণ মানুষ তখন দিগবিদিক ছোটাছুটি শুরু করেন।

ঘটনার পর দীর্ঘ এক বছর এই ছবিগুলো জনসমক্ষে আনা হয়নি। নিরাপত্তার কারণে পারভেজ আসিফ আত্মগোপনে চলে যান। সম্প্রতি নিরাপদ অবস্থানে থেকে তিনি ছবিগুলো প্রকাশ করেন, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। নাগরিক সমাজ এবং সাংবাদিক মহলে এই সাহসিকতাকে স্বাগত জানানো হচ্ছে।

মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, এসব চিত্র একদিকে যেমন রাজনৈতিক সন্ত্রাসের নগ্ন প্রকাশ, তেমনি সাংবাদিকতার ঝুঁকি ও নৈতিক দায়ের জ্বলন্ত উদাহরণ। তারা অবিলম্বে ঘটনার স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত এবং দোষীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।

৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে শামীম ওসমান ময়মনসিংহের একটি চোরাই পথ দিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশে প্রবেশ করেন। রাতের আঁধারে তিনি বোরকা পরে পালিয়ে যান বলে গুঞ্জন রয়েছে। পরবর্তীতে তাকে দিল্লিতে গিয়ে মাজারে রাতে কান্নাকাটি করার ছবি সামাজিক মাধ্যমে দেখা গেছে।

কালের আলো/এএএন