যমুনায় যেতে চায় ফেরত প্রবাসীরা, আটকে দিলো পুলিশ
প্রকাশিতঃ 12:56 pm | June 22, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
‘দেশ চলে প্রবাসীদের টাকায়, অথচ তাদের চিনে না উপদেষ্টারা’—এমন প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে অবস্থান নিয়েছেন কয়েক ডজন ফেরত প্রবাসী। তারা সবাই মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ‘জুলাই ২৪ আন্দোলন’ চলাকালে গ্রেপ্তার হয়ে কারাবরণ শেষে দেশে ফিরেছেন।
রোববার (২২ জুন) সকালে তারা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করতে চাইলে পুলিশ তাদের আটকে দেয়।
এ অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ভুক্তভোগীদের দাবি, ‘জুলাই ২৪ আন্দোলনে’ সংযুক্ত আরব আমিরাতে আটক হওয়া বাংলাদেশিদের আবার ফেরত পাঠাতে সরকার নিষ্ক্রিয়তা দেখিয়েছে। কারাবাস শেষে দেশে ফিরে তারা সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হয়েছেন, পেশা হারিয়েছেন, পরিবারে আর্থিক সংকটে পড়েছেন। অথচ, সরকার বা বাংলাদেশ দূতাবাস তাদের পাশে দাঁড়ায়নি বলে অভিযোগ করেছেন তারা।
এসময় প্রবাসফেরত আন্দোলনকারীরা চারটি প্রধান দাবি তুলে ধরেন। সেগুলো হলো —
১. জুলাই ২৪ আন্দোলনের মামলায় আমিরাত কারাগারে আটক সব বাংলাদেশিকে দ্রুত মুক্ত করে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।
২. জুলাই ২৪ আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত সব প্রবাসীকে ‘জুলাই প্রবাসী যোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে।
৩. এই আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে দেশে ফেরা প্রবাসীদের যৌক্তিক ক্ষতিপূরণসহ পুনর্বাসন করতে হবে।
৪. সব ভুক্তভোগী রেমিট্যান্স যোদ্ধাকে রাষ্ট্রীয় তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
উপস্থিত ব্যক্তিরা জানান, তারা মধ্যপ্রাচ্যে বছরের পর বছর খেটে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতি সচল রেখেছেন। অথচ রাজনৈতিক সংকটে তারা নিপীড়নের শিকার হলেও সরকার তাদের পাশে দাঁড়ায়নি। অনেকেই বলেন, আমরা অপরাধী নই, কিন্তু আমিরাতে আন্দোলনের ঘটনায় আমাদের গ্রেপ্তার করে মাসের পর মাস জেলে রাখা হয়। এখন দেশে এসেও শান্তিতে নেই।
রবিউল ইসলাম নামে এক প্রবাসী বলেন, আমিরাতে আন্দোলনের সময় গ্রেপ্তার হওয়া অনেকেই শুধু পথচারী ছিলেন। পুলিশের নির্বিচার ধরপাকড়ের শিকার হয়ে তারা ফেঁসে যান। সরকারকে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি দেখতে হবে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, যারা দেশের রেমিট্যান্স যোদ্ধা হিসেবে পরিচিত, তাদের সম্মান জানাতে হলে সরকারকে অবশ্যই প্রবাসফেরত এই ভুক্তভোগীদের পাশে দাঁড়াতে হবে।
আবার অনেকেই অভিযোগ করেন, তারা একাধিকবার প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও সাড়া পাননি। দেশের বিভিন্ন স্থানে ফিরে গিয়েও সামাজিকভাবে বঞ্চিত হয়েছেন।
এ প্রতিবেদন (সাড়ে ১২টা) লেখা পর্যন্ত তাদের সড়কে অবস্থান করতে দেখা গেছে।
কালের আলো/এসএকে