মিরপুরে উদ্বোধনের অপেক্ষায় নতুন ফ্লাইওভার
প্রকাশিতঃ 10:21 pm | January 08, 2023

কালের আলো রিপোর্ট:
মিরপুরের ইসিবি চত্বর থেকে কালশী মোড় পর্যন্ত তৈরি হয়েছে নতুন ফ্লাইওভার। ২০১৮ সালের ৯ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি, একনেকে প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়। এই ফ্লাইওভারের দৈর্ঘ্য প্রায় ২ কিলোমিটার। নির্মাণের সময়কাল নির্ধারণ করা হয় ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের আগেই প্রকল্পের কাজ শেষ করতে সক্ষম হয়েছে দায়িত্বপ্রাপ্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত করা হয়েছে ১ হাজার কোটি টাকায় নির্মিত নতুন এই ফ্লাইওভারটি। এরপর জনসাধারণের জন্য এটি খুলে দেওয়া হবে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রণালয়ের এই প্রকল্পটির স্বত্বাধিকারী সংস্থা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। উদ্বোধনের পর থেকে প্রকল্পের সার্বিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করবে ডিএনসিসি।
এই ফ্লাইওভার চালুর মধ্যে দিয়ে রাজধানীবাসীর নির্বিঘ্ন চলাচল নিশ্চিত হবে। বিশেষ করে মিরপুর, পল্লবী, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, উত্তরা, মহাখালী ও রামপুরার মধ্যে সড়ক যোগাযোগ সহজতর হবে। বাড়বে সড়কে যানবাহনের ধারণক্ষমতা। মিরপুর থেকে ১০ থেকে ১৫ মিনিটে অনায়েসেই বিমানবন্দর এলাকায় যাওয়া সম্ভব হবে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
জানা যায়, মিরপুর থেকে বিমান বন্দর, উত্তরা ও টঙ্গী হয়ে উত্তর দিকে যাওয়ার জন্য কালশী হয়ে জিয়া কলোনির সড়ক দিয়ে নতুন সড়ক নির্মাণ করা হয়। পরবর্তী সময়ে ক্যান্টনমেন্ট এলাকার ওপর দিয়ে ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হয়। রাস্তা ও ফ্লাইওভার নির্মাণের পর থেকে মিরপুর এলাকা থেকে এ সড়কের ব্যবহার অনেকাংশে বেড়ে যায়। ২০১৮ সালের জানুয়ারির হিসাব বলছে, ওই সময় প্রায় প্রতিদিন ৬০-৭০ হাজার যানবাহন এই সড়ক ব্যবহার করে। এছাড়া, রাস্তার দুই পাশে বিভিন্ন বাণিজ্যিক ও আবাসিক ভবন, হাসপাতাল, ক্লিনিক গড়ে উঠেছে। শুধু তাই নয়, মিরপুর ১২ নম্বর এলাকায় স্থাপিত মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (এমআইএসটি), ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ (এনডিসি), স্টাফ কলেজ, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) এবং মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের বহুসংখ্যক শিক্ষার্থী ওই সড়কে যাতায়াত করেন। এখানে বাংলাদেশ ন্যাশনাল হাউজিং অথরিটির অধীনে প্রায় ৬ হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে কিছু ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এবং কিছুর কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সামনের দিনগুলোতে এ এলাকায় যান চলাচল আরও বাড়বে।
উত্তরা থেকে মিরপুর-পর্যন্ত পূর্ব-পশ্চিম সংযোগকারী সড়কের অপ্রতুলতার জন্য উত্তরা, রামপুরা কিংবা মহাখালীর অধিবাসীরা মিরপুর যাওয়ার জন্য এই সড়ক ব্যবহার করে। এই প্রেক্ষাপটে ভবিষ্যতে ট্রাফিক বিবেচনায় এনে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে। দায়িত্বপ্রাপ্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নির্ধারিত সময়ের আগেই প্রকল্পের কাজ শেষ করে।
ডিএনসিসি সূত্র জানায়, এই প্রকল্পের আওতায় প্রায় ২ কিলোমিটার ফ্লাইওভার (১ দশমিক ৭ কিলোমিটার) নির্মাণের পাশাপাশি সড়ক, ফুটপাত এবং ড্রেনের উন্নয়ন কাজও করা হয়েছে। ৩ দশমিক ৭ কিলোমিটার সড়ক, ফুটপাত প্রশস্তকরণ, সড়ক বিভাজক তৈরি এবং ড্রেন নির্মাণ ও কমিউনিকেশন ডাক্টও তৈরি করা হয়েছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রায় সাড়ে ১৩ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়।
এ প্রসঙ্গে ডিএনসিসি অংশের দায়িত্বপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মাদ আরিফুর রহমান বলেন, ‘সরকারের উদ্যোগে জনবান্ধব এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। মানসম্মত নির্মাণ কাজ নিশ্চিত করা হয়েছে।’ প্রকল্পটি উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এর ফলে মিরপুরের বাসিন্দাদের চলাচল অনেক সহজ হবে। আগের তুলনায় অনেক কম সময়ে চলাচল করতে পারবেন এখানকার বাসিন্দারা।’
কালের আলো/এসবি/এমএম