সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া
প্রকাশিতঃ 7:14 pm | September 12, 2022

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
জাতীয় সংসদের উপনেতা ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়াও তার দীর্ঘদিনের সহকর্মী আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও বিরোধী দলীয় নেতারাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, একাদশ জাতীয় সংসদের সংসদ উপনেতা এবং ফরিদপুর-২ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম এই সংগঠকের রুহের মাগফেরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন স্পিকার।
ওবায়দুল কাদের
জাতীয় সংসদের উপনেতা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন দলটির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বিবৃতিতে তিনি মরহুমার আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন, সহকর্মী ও গুণগ্রাহীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
শিক্ষামন্ত্রী
সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
রোববার (১২ সেপ্টম্বর) রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো শোকবার্তায় শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী ছিলেন সততা ও নিষ্ঠার মূর্ত প্রতীক।
তিনি সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান ।
তথ্যমন্ত্রী
বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। এক শোক বার্তায় তিনি প্রয়াতের আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
ড. হাছান তার শোকবার্তায় বলেন, সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে দেশ এমন একজন রাজনীতিককে হারালো, যিনি পুরোটা জীবন আওয়ামী লীগের জন্য নিবেদিত ছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর সংকটময় মুহূর্তে আওয়ামী লীগকে সংগঠিত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৭৬ সাল থেকে দশ বছর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও ১৯৮৬ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এর আগে ১৯৬৯ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ফরিদপুর-২ আসন থেকে চার বার নির্বাচিত হয়ে ২০০৯ সাল থেকে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তিনবার জাতীয় সংসদের উপনেতা সাজেদা চৌধুরী স্বাধীনতা উত্তরকালে দেশ গঠনে প্রত্যন্ত এলাকার জনমানুষের নেতা হিসেবেও বড় ভূমিকা রেখেছেন। আমরা তার আত্মার চিরশান্তি কামনা করি।
এলজিআরডি মন্ত্রী
সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। এক শোকবার্তায় মন্ত্রী মরহুমার বিদেহী রুহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
ডেপুটি স্পিকার
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো. শামসুল হক টুকু আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
পরিকল্পনা মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী
জাতীয় সংসদের উপনেতা ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান ও প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী
সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞান প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। এক শোকবার্তায় মন্ত্রী মরহুমার রুহের মাগফেরাত কামনা করেন ও তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
পরিবেশমন্ত্রী
গভীর শোক প্রকাশ করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। এক শোকবার্তায় মন্ত্রী মরহুমার রুহের মাগফেরাত কামনা করেন ও তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী মরহুমার বিদেহী রুহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী
সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। এক শোকবার্তায় প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা একজন মেধাবী, দেশপ্রেমিক ও আপসহীন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদকে হারালাম।
শোকবার্তায় তিনি প্রয়াতের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
ডেপুটি স্পিকার মরহুমার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন এবং তার শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
আমির হোসেন আমু
সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য, ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু।
জাহাঙ্গীর কবির নানক
বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, জাতীয় সংসদের উপনেতা ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলের সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক।
এক শোকবার্তায় তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃতাধীন সময় থেকে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করার ক্ষেত্রে প্রয়াত সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর অবদান অনস্বীকার্য। তার এ অবদান জাতি কোনোদিন ভুলবে না।
সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী ১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন উল্লেখ করে নানক বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর দলের দুঃসময়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক প্রদত্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্বও পালন করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘দেশ ও জাতির কল্যাণের জন্য নিরলস কাজ করে গেছেন এ মহান মানুষটি। তার মৃত্যুতে দেশ এবং জাতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। তাঁর অসাধারণ নেতৃত্বগুণ ও নির্মোহ ব্যক্তিত্ব আমাদের চলার পথের পাথেয় হয়ে থাকবে।’
শোক বার্তায় জাহাঙ্গীর কবির নানক সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
জিএম কাদের
সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এবং বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের। এক শোকবার্তায় প্রয়াতের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন তিনি। পাশাপাশি শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন জাপা চেয়ারম্যান।
জিএম কাদের বলেন, ‘সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী ছিলেন দেশপ্রেমিক নেতা। দেশ ও মানুষের কল্যাণে অসামান্য অবদান রেখেছেন তিনি। মহান মুক্তিযুদ্ধে তার অবদান স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। তার মৃত্যুতে রাজনীতির মাঠে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে তা সহসাই পূরণ হওয়ার নয়। সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে দেশ এক বরেণ্য রাজনৈতিক অভিভাবককে হারালো।’
এদিকে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নুও।
চিফ হুইপ
সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর ই আলম চৌধুরী। তিনি প্রয়াতের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
কাজী নাবিল আহমেদ
সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ। তিনি প্রয়াতের বিদেহী আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে শোকার্ত পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা প্রকাশ করেছেন।
এক শোক বার্তায় কাজী নাবিল আহমেদ বলেছেন, ‘সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যতে জাতি একজন ত্যাগী নিষ্ঠাবান রাজনৈতিক নেতাকে হারালো, যে ক্ষতি আমাদের সবার জন্য অপূরণীয়। আমি সর্বশক্তিমান আল্লাহর নিকট তার বিদেহী আত্মার শান্তির জন্য মাগফিরাত কামনা করছি।’
এর আগে রোববার রাত ১১টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন তিনি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।
সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী ১৯৫৬ সালে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগ দেন। ১৯৬৬ সালে আওয়ামী লীগের ঘোষিত ছয় দফা আন্দোলন যখন তুঙ্গে তখন বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে স্বামী ভাষাসৈনিক মরহুম গোলাম আকবর চৌধুরীসহ চার ছেলে-মেয়েকে নিয়ে ঢাকায় আগমনের পর রাজপথ কাঁপানো আন্দোলন-সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েন সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। নারী আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করায় ১৯৬৯ সালে মহিলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন তিনি।
১৯৭০ সালে নির্বাচিত সাতজন মহিলা এমএনএর মধ্যে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী ছিলেন অন্যতম। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পাশাপাশি ১৯৮১ সালে দলের জাতীয় সম্মেলনে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি করার ক্ষেত্রে এবং তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী ও তার স্বামী মরহুম গোলাম আকবর চৌধুরীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী ১৯৯৬ থেকে ২০০১ মেয়াদে সরকারের পরিবেশ ও বনমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
স্বাধীনতা পদকসহ অসংখ্য দেশীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী একাদশ জাতীয় সংসদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সপ্তম বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে তৃতীয়বারের মতো সংসদ উপনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
কালের আলো/ডিএস/এমএম