অঞ্চল ভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
প্রকাশিতঃ 6:08 pm | May 22, 2022

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
দেশের বিভিন্ন এলাকার প্রকৃতিগত পার্থক্যের উল্লেখ করে অঞ্চল ভিত্তিক যথাযথ উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের কিন্তু একেক এলাকা একেক রকম এটাও মাথায় রাখতে হবে। যে কোনো উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য বাংলাদেশকে আরও ভালো করে চিনতে হবে, জানতে হবে।
রবিবার (২২ মে) সকালে তাঁর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ‘ডেল্টা গভর্নেন্স কাউন্সিলের প্রথম সভায় দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার এই ব-দ্বীপের জনগণকে নিরাপদ করতে এবং জনগণকে উন্নত জীবন দিতে ‘ডেল্টা প্ল্যান-২১০০’ গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, দেশের অর্জিত বিশাল সমুদ্র এলাকা ডেল্টা প্ল্যানে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, যমুনা সেতু নির্মাণের সময় যমুনা নদীর প্রসস্থতা বিবেচনায় না এনে নদীর ওপর মাত্র ৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সেতু নির্মাণ করা ছিল ভুল সিদ্ধান্ত। যা পদ্মা সেতুতে করা হয়নি। ফলে, সেতুটি দীর্ঘ হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমি পদ্মা সেতু ছোট করতে দেইনি। আমরা নদীর সাথে বাফার জোন রেখে সেতু নির্মাণ করেছি। সুতরাং, সেতুটি (দেশের) দীর্ঘতম সেতু হয়ে উঠেছে।’
‘কিন্তু, আমি মনে করি, যমুনার উপর সেতুকে ৪ কিলোমিটারে নামিয়ে আনা একটি ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। যেহেতু এর নকশা এবং পরিকল্পনা আগে করা হয়েছিল, তাই সেখানে আমাদের আর কিছু করার ছিল না। আমি কেবল এতে রেললাইন অন্তর্ভুক্ত করতে পারি,’ বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন জাপান সফরে গিয়েছিলেন, তখন তিনি যমুনা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের বিষয়ে জাপান সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেন এবং তারপরে জাপান একটি সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য একটি দল পাঠায়। সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষা ১৯৭৪ সালে শুরু হয়েছিল।
সুতরাং, যমুনা নদীর উপর বাংলাদেশের একটি সুনির্দিষ্ট সম্ভাব্যতা প্রতিবেদন রয়েছে, তিনি বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণের সময় তার সরকার পদ্মা নদীর উপর একটি সম্ভাব্যতা সমীক্ষা চালিয়েছিল।
সরকার প্রধান বলেন, যে সম্ভাব্যতা প্রতিবেদনে সেতু প্রকল্প সাইটের বিভিন্ন স্থানে শক্তিশালী পদ্মা নদীর গভীরতার পার্থক্য পাওয়ায় তিনি সেতুর নকশা নতুন করে প্রণয়ন করান।
তিনি বলেন, ‘নতুন ভাবে আমি নকশা করিয়েছি। আমি এখানে কোন গোঁজামিল দিতে দেইনি। যদিও এটি সময় নিয়েছে, তারপরেও নকশা পাল্টে যেখানে যতটুকু ওজন নিতে পারবে সেভাবেই নকশা করেই এটা করা।’
শেখ হাসিনা বলেন, দেশের প্রতিটি বর্ষা মৌসুমে যমুনা ও পদ্মাসহ নদীর প্রবাহ ও তলদেশের মাটির চরিত্র পরিবর্তন হয়। যেহেতু এখানে বাংলাদেশের পরিস্থিতি অন্যান্য দেশের মতো নয়, তাই এই পার্থক্য মাথায় রেখে সঠিকভাবে পরিকল্পনা নিতে হবে।
কৃষিমন্ত্রী ড. মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, প্রধান সমন্বয়ক (এসডিজি বিষয়ক) জুয়েনা আজিজ এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।
কালের আলো/ডিএসবি/এমএম