চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হোন: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিতঃ 3:14 pm | December 05, 2021

নিজস্ব সংবাদদাতা, কালের আলোঃ

শিক্ষাজীবন শেষ করে চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হতে তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, পাস করেই চাকরির পেছনে না ছুটে, নিজেরা উদ্যোক্তা হতে হবে এবং অন্যকে চাকরি দেওয়ার সুযোগ তৈরি করতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, উদ্যোক্তা তৈরি করার জন্য আওয়ামী লীগ সরকার সব ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে।

রবিবার (৫ ডিসেম্বর) নবম জাতীয় এসএমই পণ্য মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এই আহ্বান জানান। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, তরুণ সমাজকে শিক্ষার সুযোগ করে দিয়েছি। কারিগরি শিক্ষা এবং ভোকেশনাল ট্রেনিংয়েরও সুযোগ করে দিয়েছি। পাশাপাশি কম্পিউটার ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে অনলাইনে সব রকম ব্যবসা বাণিজ্য যাতে করতে পারে সে ব্যবস্থাও করে দিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার যুব সমাজের কল্যাণে স্টার্টআপ প্রোগ্রাম নিচ্ছে এবং এ জন্য বাজেটে আলাদা টাকাও বরাদ্দ আছে। কাজেই উদ্যোক্তা হতে চাইলে, যে কেউ হতে পারে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখন ব্রডব্যান্ড সুবিধা প্রায় ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। মোবাইল ফোন সবার হাতে হাতে পৌঁছে গেছে।

ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে যোগাযোগ খুব সহজ হয়ে গেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ক্রয়-বিক্রয়, পণ্যমান—সবকিছু জানার একটা সুযোগ হচ্ছে। বাজার সম্পর্কে জানার সুযোগ হচ্ছে। বাজারের চাহিদা ও পণ্যের মূল্য সম্পর্কে জানার সুযোগ হচ্ছে। এ সুবিধাগুলো কিন্তু এখন চলে এসেছে। যার ফলে আমি মনে করি আমাদের মানুষের আর কষ্ট করার কোনো অর্থ হয় না। একটু স্ব-উদ্যোগে কাজ করলেই কিন্তু নিজেরা উদ্যোক্তা হতে পারেন এবং নিজেরা কাজ করতে পারেন।

মুজিববর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্‌যাপনকালে দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়নের অঙ্গীকার পুণর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আজকে শতভাগ বিদ্যুৎ যখন দেওয়া হচ্ছে, পাশাপাশি যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যপক উন্নয়ন আমরা করে দিয়েছি। আর, একটা জায়গায় বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা যদি থাকে, তাহলে সেখানে পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে কোনো সমস্যা হয় না।

আমাদের দেশে কাঁচামালের সহজলভ্যতা রয়েছে, সে বিবেচনাতেও দেশে শিল্প গড়ে উঠতে পারে বলে অভিমত ব্যক্ত করে সরকারপ্রধান বলেন, এতে করে আমার নিজের দেশে যেমন বাজার সম্প্রসারণ হচ্ছে এবং মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বাড়ছে, সেইসঙ্গে বিদেশেও আমরা রপ্তানি করতে পারব, আমাদের রপ্তানি পণ্য বৃদ্ধি পাবে। সেজন্য আমাদের পণ্যগুলো যাতে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হয় সেদিকে দৃষ্টি দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

মারাত্মক করোনাভাইরাস আক্রমণের কারণে ১৯ মাস বিরতির পর এসএমই ফাউন্ডেশন এবারের মেলার আয়োজন করেছে। ২০২০ সালের মার্চ মাসে শেষ এসএমই মেলার আয়োজন করেছিল, যখন দেশে করোনভাইরাস সংক্রমণের প্রথম কয়েকটি কেস শনাক্ত হওয়ার পরে দ্রুত গুটিয়ে যায়।

১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলমান এ মেলায় প্রথম বারের মতো ১০টি ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) অংশ নিচ্ছে। পাশাপাশি সারা দেশ থেকে বাছাই করা ৩০০ এসএমই প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে, যাদের প্রায় ৬০ শতাংশ নারী উদ্যোক্তা।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে বিশেষ অতিথি এবং অনুষ্ঠানে সভাপতি শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন জাতীয় এসএমই পুরস্কার ২০২১ বিজয়ী চার উদ্যোক্তার হাতে ক্রেস্ট, সনদ ও চেক তুলে দেন।

বিশেষ অতিথি এবং আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা, এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন এবং এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন ড. মো. মাসুদুর রহমান বক্তৃতা দেন।

কালের আলো/টিআরকে/এসআইএল