নিজের শিশুকে অপরহণ করে হত্যা, বাবাসহ আটক ২

প্রকাশিতঃ 6:35 pm | July 01, 2020

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার মাতুয়াইল এলাকা থেকে নিজের তিন বছর সাত মাস বয়সী ছেলেশিশু মাহিমকে অপহরণের পর হত্যার অভিযোগে বাবাসহ দুজনকে আটক করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)।

বুধবার (০১ জুলাই) বিকালে এই তথ্য জানিয়েছেন র‌্যাব-১০ এর কোম্পানি কমান্ডার উপ-পরিচালক আলী রেজা রাব্বী। তিনি জানান, গত ২৯ জুন শিশু মাহিমের বাবা অভিযোগ করেন তার সন্তান ২৭ জুন অপহরণের শিকার হয়েছে। যাত্রাবাড়ি থানায় জুলহাস সাধারণ ডায়রি করে।

অভিযোগ পাওয়ার পর অভিযান চালিয়ে গত ৩০ ‍জুন জুয়েল ব্যাপারী নামে এক যুবককে গ্রেফতার করে র‌্যাব। সে অপহরণে বিষয়টি স্বীকার করে এবং এর সঙ্গে শিশুর বাবা জুলহাস জড়িত থাকার কথা জানায়। পরে জুলহাসকেও মাতুয়াইল দরবার শরীফ মোড় এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়।

র‌্যাব-১০ এর উপ-পরিচালক আলী রেজা রাব্বী জানান, জুলহাস ও জুয়েলকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা ভিকটিমকে অপহরণ করে জুসের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হত্যার কথা স্বীকার করে।

র‌্যাবের তদন্ত কর্মকর্তারা জানায়, ভিকটিমের বাবা জুলহাস আগে থেকেই যৌতুকের দাবিসহ বিদেশ যাওয়ার জন্য চার লাখ টাকা চেয়ে আসছিল শ্বশুরের কাছে। টাকা না পেয়ে বিভিন্ন সময় স্ত্রীকে নির্যাতন করে সে। পারিবারিক কলহ এবং শ্বশুর বাড়ি হতে টাকা না পেয়ে ক্ষোভে নিজ সন্তানকে হত্যার জন্য প্রতিবেশী জুয়েলকে নিয়ে পরিকল্পনা করে জুলহাস। পরিকল্পনা অনুযায়ী, গত ২৬ জুন জুয়েল ঘুমের ওষুধ (৮টি ট্যাবলেট) কিনে জুলহাসকে দেয়। ২৭ জুন বেলা সাড়ে ১২টার দিকে প্রতিবেশী জুয়েল শিশু মাহিমকে তার বাসার সামনে থেকে ফুসলিয়ে মাতুয়াইল বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে যায়। এরপর জুলহাস ও জুয়েল মিলে মাহিমকে ডেমরার দেইল্লা নামে নির্জন এলাকায় নিয়ে জুসের সঙ্গে ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ায়। এরপর তারা শিশু মাহিমের মৃত্যু নিশ্চিত করে তার লাশ মাতুয়াইলের মৃধাবাড়ি ময়লার ডিপো সংলগ্ন গ্রিন মডেল টাউন এলাকায় কাশবনের ভেতর বালু চাপা দেয়। এরপর নিজ বাড়িতে চলে যায় জুলহাস ও জুয়েল।

জুলহাস ২৯ জুন যাত্রাবাড়ি থানায় সাধারণ ডায়েরি করে। র‌্যাব-১০ এর কর্মকর্তারা জানান, শিশু অপহরণ হয়েছে এটা প্রমাণ করার জন্য ২৯ জুন জুয়েলকে দিয়ে মুক্তিপণ চেয়ে নিজের মোবাইলে একটি ম্যাসেজ পাঠায় জুলহাস। আসামিদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ৩০ জুন রাত সাড়ে ১০টার দিকে মাহিমের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মাহিমের মা বাদী হয়ে যাত্রাবাড়ি থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। এই মামলায় জুলহাস ও জুয়েলকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

কাএর আলো/এসবি/এমএম

Print Friendly, PDF & Email