সমন্বয়হীনতায় ‘ভুল’ গণবিজ্ঞপ্তি দিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর!

প্রকাশিতঃ 5:47 pm | April 07, 2020

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সোমবার(০৬ এপ্রিল) ধর্ম মন্ত্রণালয় বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে, মসজিদে জামাতে ইমামসহ ৫ জনের বেশি মানুষ যেন উপস্থিত না থাকে। আর শুক্রবারের জুমার নামাজের ক্ষেত্রে ১০ জনের বেশি মানুষ যেন না থাকে। এর পরদিন আজ মঙ্গলবার(০৭ এপ্রিল) দেশের জাতীয় দৈনিকগুলোতে একটি গণবিজ্ঞপ্তিত প্রকাশিত হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের। বিজ্ঞপ্তির একটি অংশে বলা হয়েছে, বিদেশ ফেরত ব্যক্তি অথবা জ্বর,হাঁচি, কাশি আক্রান্ত ব্যক্তিদের মসজিদে না যেতে পরামর্শ প্রদান করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

অথচ গতকালই ধর্ম মন্ত্রণালয় বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন মসজিদে জামাত ও জুমা নিয়ে। সেখানে একদিন পর পুরাতন তথ্যের গণবিজ্ঞপ্তিতে প্রচার করা হয়েছে জাতীয় দৈনিকগুলোতে।

এসব কর্মকান্ডকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সমন্বয়হীনতাকেই দায়ী করছেন বিশ্লেষকরা। তারা বেশ কিছুদিন ধরেই বলছেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যেকোনো ঘটনার থেকে এগিয়ে না চলে বহু পেছনে ছুটছেন। দেশের এই সঙ্কটকালীন সময়ে তাদের মধ্যে সমন্বয় জরুরি। কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সেটা গায়ে মাখছেন না। এ সমালোচনাগুলো শুনে সংশোধিত হওয়ার কোনো প্রচেষ্টাও তাদের মধ্যে নেই। এর একটি বড় প্রমাণ হলো আজকের গণবিজ্ঞপ্তি।

গণবিজ্ঞপ্তিটা আজ প্রকাশ হলেও গতকাল সোমবার ধর্ম মন্ত্রণালয় নির্দেশনায় স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, মসজিদগুলো ইমামসহ ৫ জনের বেশি নামাজ আদায় করতে পারবেন না। আর জুমার দিন ইমামসহ ১০ জনের বেশি থাকতে পারবেন না। মসজিদের মাধ্যমে যেন করোনা ভাইরাস সংক্রমিত না হয় যে ব্যাপারে এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে আলেম ওলামারা। অথচ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আজ যে বিজ্ঞপ্তিটা প্রকাশ করেছে সেখানে বলা হলো, শুধু বিদেশ ফেরত ব্যক্তি অথবা জ্বর, হাঁচি, কাশি আক্রান্ত ব্যক্তিরা যেন মসজিদে যাওয়া থেকে বিরত থাকেন। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গণবিজ্ঞপ্তিতে নেই।

বিশ্লেষকরা বলছেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাজে যদি সমন্বয় থাকতো, তাহলে হালনাগাদ করে এই গনবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হতো। তাহলে আর কোনো বিভ্রান্তি থাকতো না।

আরেকটি বিষয় হলো, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ক্লিশে এই গণবিজ্ঞপ্তি গত কিছুদিন ধরেই বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিকগুলোতে প্রকাশিত হচ্ছে। অথচ পত্রিকাগুলো নিজেরাই বিজ্ঞাপন দিয়ে জানাচ্ছে যে, তাদের পাঠক আশঙ্কাজনক হারে কমে যাচ্ছে। তারা সীমিত আকারে পত্রিকা প্রকাশ করছে। সেই সীমিত আকারে প্রকাশিত পত্রিকায় লাখ লাখ টাকা খরচ করে গনবিজ্ঞপ্তি প্রচারে কার উপকার হবে সেই প্রশ্ন উঠেছে। অথচ সাধারণ মানুষকে সচেতন করার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে আরও অনেক উপায় ছিল। সেগুলো না করে কাদের খুশি করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই ক্লিশে গণবিজ্ঞপ্তি প্রচার করছে সেটি একটি বড় প্রশ্ন।

কালের আলো/এমএইচএ

Print Friendly, PDF & Email