জিসানের সহযোগী শাকিল তিন দিনের রিমান্ডে

প্রকাশিতঃ 8:27 pm | February 23, 2020

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

দুবাইয়ে অবস্থানরত বাংলাদেশের শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান আহমেদ ওরফে মন্টির সহযোগী মো. মাজহারুল ইসলাম শাকিল ওরফে শাকিল মাজহারের অস্ত্র মামলায় তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।

রোববার(২৩ ফেব্রুয়ারি) সাত দিনের রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মো. শাহিনুর রহমান এ রিমান্ডে আদেশ দেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহাম্মাদপুর থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) মোর্শেদ আলম এই আসামিকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়, গত শনিবার ভোর ৫টার দিকে র‌্যাব-২ মোহাম্মাদপুর থানাধীন বাসবাড়ী এলাকার ৮২৪নং হোল্ডিংয়ের শাহাবুদ্দিন কনফেকশনারির সামনে বছিলা থেকে ধানমনন্ডি জিগাতলাগামী রাস্তায় চেকপোস্টে যানবাহন তল্লাশিকালে এক সিএনজির যাত্রী চেকপোস্টের সামনে থেকে সিএনজি থেকে নেমে পালানোর চেষ্টাকালে আটক হয়। এরপর সাক্ষীদের সামনে তার দেহ তল্লাশি করে তার পরিহিত ট্রাউজারের কোমরে পেছনে গোজা ম্যাগাজিন সংযুক্ত ছয় রাউন্ড গুলিসহ দুটি অবৈধ বিদেশি পিস্তল পাওয়া যায়। জিজ্ঞাসাবাদে এজাহারে উল্লিখিত নাম ঠিকানা প্রকাশ করেন। গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান যে, দীর্ঘদিন যাবৎ শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানের পক্ষে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি সংক্রান্ত অপরাধ সংঘটিত করে আসছেন। দেশে তার সন্ত্রাসী কার্যক্রম নতুন করে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে ও আন্ডারওয়ার্ডের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তিনি উদ্ধারকৃত আগ্নেয়াস্ত্র হেফাজতে রেখেছিলেন।তাই তার সঙ্গে আর কে কে জড়িত আছে এবং তার আর কী উদ্দেশ্য ছিল তা জানার জন্য রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।

আসামি পক্ষে অ্যাডভোকেট হায়দার আলী হাওলাদার শুনানিকালে রিমান্ড বাতিল করে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।

রিমান্ড আবেদনের শুনানিকালে এক প্রশ্নের জবাবে শাকিল জানান, তিনি দুবাইতে জিসানের কোম্পানিতে কাজ করতেন, এটা ঠিক। এক মাস আগে দেশে এসেছেন। তিনি কোনো খারাপ কাজে যুক্ত নন।

এদিকে গ্রেপ্তারের পর সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের দাবি টানা ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডে অস্থিরতার সুযোগে দুবাই থেকে ঢাকায় আসেন শাকিল। শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানের সঙ্গে মোবাইলে তার কথোপকথনের বিভিন্ন তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি সন্ত্রাসী জিসানের পক্ষে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি করে আসছেন। ২০১৫ সালে যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূইয়ার সঙ্গে রেলওয়ের টেন্ডার নিয়ে বিরোধে জড়ান শাকিল। ২০১৬ সালের জুনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সহসম্পাদক রাজিব হত্যার এজাহারে নাম আসায় চীনে চলে যান। ২০১৭ সাল পর্যন্ত দেশটিতে কার্গো সার্ভিসের কাজ করে ২০১৮ সালে দুবাই যান। সেখানে শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানের সঙ্গে পরিচয় হয়। ধীরে ধীরে বিশ্বস্ত হয়ে ওঠেন তিনি। পরবর্তী সময়ে লেবার জোগাড়ের দালালি শুরু করেন। একপর্যায়ে জিসান তার সব ব্যবসা দেখার দায়িত্ব দেন। তারা একই আবাসিক ভবনে থাকতেন। সেখান থেকেই বিভিন্ন সহযোগীর মাধ্যমে বাংলাদেশে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। চাঁদাবাজির জন্য টার্গেট করা হতো সুনির্দিষ্ট ব্যক্তিকে। টার্গেট করে জিসানের নামে হুমকি পাঠানো হতো শাকিলের মোবাইল নম্বর থেকে।

কালের আলো/বিএমএ/ওআর

Print Friendly, PDF & Email