ইরানের সাথে পারমাণু চুক্তি থেকে সরে গেলেন ট্রাম্প

প্রকাশিতঃ 9:12 am | May 09, 2018

বিশ্ব ডেস্ক, কালের আলো:

ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে।

মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ ঘোষণা দেন।

একই সাথে ইরানের ওপর পারমাণবিক এবং অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণাও দিয়েছেন ট্রাম্প। বিবিসি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, “ইরানের সঙ্গে যে পরমাণু চুক্তি করা হয়েছে সেটি বজায় থাকলে দেশটি পারমাণবিক শক্তি অর্জন করবে। এ ধরনের চুক্তি কখনোই করা উচিত হয়নি।”

ইরান সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন দিচ্ছে। লেবাননের হেজবুল্লা, ফিলিস্তিনের হামাস এবং আল-কায়েদাকে ইরান সমর্থন দিচ্ছে বলে ট্রাম্প মন্তব্য করেন।

ট্রাম্প বলেন, “আমরা যদি এখন কিছু না করি, তাহলে আমরা জানি ভবিষ্যতে কী হবে।”

ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি আমেরিকার একজন হিসেবে তার জন্য ‘বিব্রতকর’ বলে মনে করেন ট্রাম্প।

২০১৫ সালে পৃথিবীর বৃহৎ শক্তিগুলো- যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, চীন, রাশিয়া এবং জার্মানি পারমাণবিক চুক্তি করেছিল ইরানের সঙ্গে।

বারাক ওবামা যখন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ছিলেন সে সময় ইরানের সঙ্গে পৃথিবীর বৃহৎ শক্তিগুলো পরমাণ চুক্তি করেছিল।

সে চুক্তির মূল বিষয় ছিল- ইরান পরমাণু কার্যক্রম বন্ধ রাখবে এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি কমিশন ইরানের যে কোনো পরমাণু স্থাপনায় যে কোনো সময় পরিদর্শন করতে পারবে।

অর্থাৎ ইরান যাতে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে না পারে সেজন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইরানকে নজরদারির মধ্যে রাখতে পারবে।

এর বিনিময়ে ইরানের ওপর থেকে অর্থনৈতিক অবরোধ তুলে নেয়া হয়েছিল।

কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার পক্ষ থেকে আবার নতুন করে অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করেছেন ইরানের ওপর।

ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি থেকে আমেরিকা যাতে সরে না যায় সেজন্য ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং জার্মানি গত বেশ কিছুদিন ধরে ট্রাম্পকে বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু আমেরিকার মিত্র দেশগুলোর আহবানে কোনো গুরুত্ব দেননি ট্রাম্প।

তিনি এতোদিন ধরে যুক্তি তুলে ধরেছেন যে ইরানের সঙ্গে যে চুক্তি করা হয়েছে সেটি শুধু দেশটির পারমাণবিক কার্যক্রমের ওপর এবং এ চুক্তি মাত্র সাত বছরের জন্য।

সে চুক্তিতে ইরানের ব্যালিস্টিক মিসাইল কার্যক্রম বন্ধের বিষয়ে কিছু নেই বলে তিনি উল্লেখ করেন।

ট্রাম্প এ চুক্তিকে ‘ত্রুটিপূর্ণ’ এবং ‘একপেশে’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি মনে করেন, এর মাধ্যমে ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা অর্জন থামানো যাবে না।

ইরানের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, “যেসব প্রতিষ্ঠান এখনো ইরানের সঙ্গে ব্যবসা করছে তাদের ছয়মাস সময় দেয়া হয়েছে যাতে তারা সেসব ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ করে।”

সেটি না করলে কঠোর ‘পরিণতি ভোগ’ করতে হবে বলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সতর্ক করে দেন।

কোনো দেশ যদি ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির প্রচেষ্টাকে সহায়তা করে তাহলে আমেরিকা তাদের ওপরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে বলে ডোনাল্ড ট্রাম্প উল্লেখ করেন।

কালের আলো/এসআর

Print Friendly, PDF & Email