অপেক্ষা শেষ, রাশিয়া থেকে বিজিবির দুই অত্যাধুনিক হেলিকপ্টার আসছে ১৭ জানুয়ারি

প্রকাশিতঃ 10:48 am | December 29, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো :

এবার অপেক্ষার পালা শেষ হচ্ছে। ১০ দিন আগে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) দিবসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছিলেন নতুন বছরের জানুয়ারিতে দু’টি অত্যাধুনিক হেলিকপ্টার বিজিবিতে যুক্ত হওয়ার। তখন থেকেই শুরু হয়েছিল কাউন্ট ডাউন। এখন সেই প্রতীক্ষার অবসান হচ্ছে।

আরও পড়ুন: পাকিস্তানে তৈরি ভারতীয় জাল নোট, বিস্তার রোধে বিজিবির সহায়তা চাইলেন অমিত শাহ

সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে নতুন বছরের দ্বিতীয় সপ্তাহেই প্রায় সাড়ে ৩’শ কোটি টাকা ব্যয়ে দু’টি অত্যাধুনিক হেলিকপ্টার পেতে যাচ্ছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। আগামী ১৭ জানুয়ারি রাশিয়ার কোম্পানি ‘জেএসসি রাশিয়া’ থেকে সরকারি (জি-টু-জি) পর্যায়ে কেনা এ দু’টি হেলিকপ্টার বাংলাদেশে এসে পৌঁছবে বলে জানিয়েছেন বিজিবির মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম।

সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, হেলিকপ্টার দু’টি চালানোর কারিগরি সহযোগিতাও দেবে জেএসসি রাশিয়া। ঘন্টায় সর্বোচ্চ ২৫০ কিলোমিটার গতির হেলিকপ্টার দু’টির প্রতিটির ওজন প্রায় ১৩ হাজার কেজি। দুর্ঘটনায় পড়ার হার কম হওয়ায় দুর্গম পার্বত্য এলাকায় পর্যবেক্ষণ ও নজরদারি বাড়াতে এমআই ১৭১ ই সিরিজের দুই হেলিকপ্টার বিজিবির আধুনিক পথচলাকে নিশ্চিত করবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে (বিজিবি) ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ গ্রহণ করে। সীমান্তরক্ষী এ বাহিনীটির আধুনিকায়নেও সরকার নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করে।

এ উদ্যোগের অংশ হিসেবেই ২০১৮ সালের ১০ মে বিজিবির জন্য রাশিয়া থেকে দু’টি হেলিকপ্টার কেনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সরকার। সেইদিন অর্থনৈতিক বিষয়–সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।

বিজিবি সদর দপ্তর সূত্র জানায়, আধা সামরিক এ বাহিনীটিকে যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে সরকার অত্যাধুনিক অস্ত্র ও সরঞ্জামাদি কিনে দিচ্ছে। সম্প্রতি বিজিবি দিবসেও প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, বিজিবির জন্য কেনা হয়েছে আধুনিক, যুগোপযোগী ও কার্যকর ট্যাংক বিধ্বংসী অস্ত্র।

১২টি আর্মাড পার্সোনেল ক্যারিয়ার (এপিসি) এবং ১০টি রায়ট কন্ট্রোল ভেহিক্যালও কেনা হচ্ছে। সীমান্তের স্পর্শকাতর আইসিপি/এলসিপি সমূহে ভেহিক্যাল এক্স-রে স্ক্যানার মেশিন স্থাপন এবং ‘বিজিবি ডগ স্কোয়াড’ গঠন করা হয়েছে। সেই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী দেশপ্রেম, সততা এবং দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্বপালন করে বিজিবির সুনাম ও মর্যাদা সমুন্নত রাখারও আহ্বান জানান।

বিজিবি সদর দপ্তর সূত্র জানায়, দেশের দুর্গম অঞ্চলে জরুরি ভিত্তিতে সেনা মোতায়েন, পণ্য পরিবহন, উদ্ধার তৎপরতা, মুমূর্ষু রোগী যাতায়াত ও দুর্গম পার্বত্য এলাকায় পর্যবেক্ষণ অথবা নজরদারি বাড়ানোর জন্য অত্যাধুনিক হেলিকপ্টার অপরিহার্য হয়ে উঠায় সরকার সময়োপযোগী এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে মনোযোগী সরকার রাশিয়ার কোম্পানি ‘জেএসসি রাশিয়া’ থেকে সরকারি (জি-টু-জি) পর্যায়ে হেলিকপ্টার দু’টি কিনেছে। এ দুই হেলিকপ্টারের প্রতিটিতে একজন স্টুয়ার্ডসহ ২৬ জন যাত্রী পরিবহন ও পণ্য পরিবহনের সুবিধা রয়েছে।

একই সূত্র জানায়, গত বছরের ১০ ডিসেম্বর বিজিবি সদর দপ্তরে ‘জেএসসি রাশিয়া হেলিকপ্টারস’ এর সাথে এই বিষয়ে বিজিবির মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম ও জেএসসি রাশিয়া হিলকপ্টারসের আন্দ্রে ফোর্তে নিজ নিজ পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

বিজিবি সদর দপ্তর জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার বিজিবিকে ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে কার্যকর নানা উদ্যোগ গ্রহণের পাশাপাশি বাস্তবায়ন করছে। এ হেলিকপ্টার দু’টি পার্বত্য চট্টগ্রামের দুর্গম পাহাড়ী অঞ্চলে বিওপি নির্মাণে সহায়তা, রেশন দ্রব্য ও লজিস্টিক সহায়তা পৌঁছাতে, বাহিনীর অসুস্থ সদস্যদের হাসপাতালে পৌঁছানো, জরুরি উদ্ধার অভিযান ও অপারেশনাল সক্ষমতা বাড়াতে বিজিবির এয়ার উইং গঠিত হয়েছে।

কালের আলো/এনএল/এমএইচএ

Print Friendly, PDF & Email