সড়কে আইন প্রয়োগ করলে কোন কর্মকর্তা বদলি হবেন না : আইজিপি

প্রকাশিতঃ 3:47 pm | November 21, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

সড়কে আইন প্রয়োগ করলে কোন কর্মকর্তা বদলি হবেন না বলে জানিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, বিপিএম (বার)। তবে পুলিশ কর্মকর্তাদের এভাবে আশ্বস্ত করে আবার শর্তও দিয়েছেন পুলিশ প্রধান। বলেছেন, ‘তবে এই আইন প্রয়োগ করার সময় বিনয়ী হতে হবে।’

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর শান্তিনগরে রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ট্রাফিক সচেতনতামূলক পক্ষ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

আরও পড়ুন: সন্তানেরা ফের রাস্তায় নামলে কারো পিঠের চামড়া থাকবে না: ডিএমপি কমিশনার

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)- এর উদ্যোগে বৃহস্পতিবার(২১ নভেম্বর) থেকে শুরু হয়েছে ট্রাফিক সচেতনতামূলক পক্ষ। এটি আগামী ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স মাঠে বেলুন উড়িয়ে এর উদ্বোধন করেন।

সড়কে আইন প্রয়োগ করতে গেলে পুলিশকে অনেক কর্মকর্তা বস পরিচয় দেয় এবং বদলির হুমকি দেয় বলেও অভিযোগ করেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী।

আইজিপি বলেন, সড়কের সবস্থানে ‘বাস-বে’ না থাকলেও বাস থামার নির্দিষ্ট স্থান রয়েছে। কিন্তু চালকরা সেটা না মেনে বাসস্টপের আগে পরে থামে। এতে পথচারী ও যাত্রীর সমস্যা হয়। এর জন্য সবাইকে আইন মেনে চলতে হবে।

ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, ট্রাফিক শৃঙ্খলা একটি সভ্য জাতির প্রতীক এই স্লোগানে আমরা সবাইকে সচেতন করার লক্ষে ট্রাফিক সচেতনতামূলক পক্ষ শুরু করেছি।

ডিএমপি খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি সময়ে ট্রাফিক সচেতনতামূলক পক্ষ পালন করতে যাচ্ছে বলেও জানান আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী।

তিনি বলেন, বিশ্বের উন্নত শহরগুলোতে ট্রাফিক একটি অন্যতম বড় সমস্যা। অনেক কারণে ঢাকা শহরে ট্রাফিক প্রকট আকার ধারণ করছে। ট্রাফিকের ক্ষেত্রে প্রধানত ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়ারিং, ট্রাফিক এডুকেশন, ট্রাফিক ইনভারমেন্ট ও ট্রাফিক ইনফোর্সমেন্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পুলিশ ট্রাফিক ইনফোর্সমেন্টের একটি অংশ পালন করে থাকে।

‘সড়কে কোন কিছু হলে আমরা ট্রাফিক পুলিশকে দোষারোপ করে থাকি। আমরা যারা রাস্তা ব্যবহার করি, আমাদেরও কিছু দায়িত্ব রয়েছে। আমাদের সকলের মধ্যে যেন আইন না মানার সংস্কৃতি কাজ করে।’

যুক্তি উপস্থাপন করে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, আন্তর্জাতিক নিয়মানুযায়ী একটি দেশের মোট আয়তনের ২৫ ভাগ রাস্তা থাকার দরকার। সেখানে আমাদের দেশে রাস্তা রয়েছে মাত্র ৮ ভাগ। ড্রাইভার, মালিক- শ্রমিক ও পথচারী সকলকে আইন মেনে চলতে হবে। বর্তমানে সারা বাংলাদেশের পেট্রোল পাম্পগুলোতে নো হেলমেট, নো ফুয়েল নীতি পালন করছে। আমরা চাই সড়কে একটি জীবন যেন হানী না হয়, প্রতিটি জীবনই অমুল্য। আমাদের মনে রাখতে হবে একটি জাতিকে চেনা যায় তার ট্রাফিক শৃংখলা দেখে। আসুন আমরা ট্রাফিক শৃংখলা বজায় রাখি।

এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম, বিপিএম(বার)।

তিনি বলেন, সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে না পারলে আমাদের যাওয়ার কোনো পথ থাকবে না। এটিই শেষ সুযোগ। এবার আমাদের সন্তানেরা মাঠে নামলে পিঠের চামড়া থাকবে না। কাজেই সবাইকে শৃঙ্খলা মানতে হবে। যার যার জায়গা থেকে এগিয়ে আসতে হবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, আমরা কেউ আইন মানতে চাই না, আইন মেনে চললে সম্মানবোধ হয় এবং সম্মানিত হওয়া যায়। ২০১৮ সালে আমরা সড়ক পরিবহন আইন পাশ করেছিলাম যেটা ইমপ্লিমেন্ট করার সময় কয়েকটি যৌক্তিক জটিলতা দেখা দিয়েছিল।

‘সমস্যা সমাধানে গতকাল (২০ নভেম্বর) মালিক শ্রমিক নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে যে সকল গাড়ির চালক লাইটের লাইসেন্স নিয়ে মিডিয়াম, মিডিয়ামের লাইসেন্স নিয়ে হেভি গাড়ি চালাচ্ছেন তাদেরকে ২০২০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছে ড্রাইভিং লাইসেন্স আপডেট করে নেয়ার।’

এ সময় পরিবহন মালিক-শ্রমিক, চালক, বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থী, ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগে কর্মরত পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

কালের আলো/এনআর/এমএম

Print Friendly, PDF & Email