আ.লীগ ৪৭ থেকে ৯৪ শতাংশ জনগণকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এনেছে

প্রকাশিতঃ 9:37 pm | November 11, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

বিদ্যুৎ জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ ৪৭ শতাংশ থেকে ৯৪ শতাংশ জনগণকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এনেছে। আগামী জুনে শতভাগ জনগণ বিদ্যুৎ সুবিধার আসবে। দেশে বিদ্যুতের উৎপাদন ৩ হাজার ৪শ’ মেগাওয়াট থেকে ২১ হাজার মেগাওয়াটে পৌছেছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

সোমবার(১১ নভেম্বর) বিকেলে সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এতথ্য জানান। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে এসংক্রান্ত সম্পুরক প্রশ্নটি উত্থাপন করেন বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য মো. হারুনুর রশীদ।

তিনি বিএনপি-জামায়াতের উপর অহেতুক দোষ চাপানোর চেষ্টা চলে উল্লেখ করে বলেন, রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বালিশ কাণ্ড, হাসপাতালে সর্বোচ্চ দামী পর্দা কেনা ও সর্বশেষ ক্যাসিনোর কথা সকলেরই জানান। এই অবস্থায় বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়লেও ভোল্টেজ উঠানামা করে। এটা বন্ধের বিষয়ে সরকারের পরিকল্পনা কি?

জবাবে প্রতিমন্ত্রী আরো জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দায়িত্ব গ্রহণের আগেও দেশে গ্যাস ছিলো। কিন্তু কোন পরিকল্পনা ছিলো না। এখন বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মাষ্টার প্লান তৈরি করে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। বর্তমানে রাজধানীতে বিদ্যুতের ভোল্টেজ উঠানামা করে না। বরং অতিরিক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। আগামী ২/৩ বছরের মধ্যে দেশের সর্বত্র নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

বিএনপি’র গোলাম মোহাম্মদ সিরাজের লিখিত প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার সবার জন্য বিদ্যুৎ সুবিধা ও ভবিষ্যতে বিদ্যুতের চাহিদার কথা বিবেচনা করে উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধির মহাপরিকল্পনা নিয়েছে। বিভিন্ন মেয়াদে ৮৭টি নতুন কেন্দ্র হতে ৩৯ হাজার ৮৬২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

সংসদে দেওয়া তথ্যানুযায়ী, গ্রীষ্মকালীণ সময়ে দৈনিক বিদ্যুতের গড় চাহিদা প্রায় সাড়ে ১২ হাজার মেগাওয়াট হতে ১৩ হাজার মেগাওয়াট। এর বিপরীতে বর্তমানে মোট স্থাপিত উৎপাদন ক্ষমতা ক্যাপটিভ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ ২২ হাজার ৫৬২ মেগাওয়াট। উক্ত উৎপাদন ক্ষমতার বিপরীতে দেশের চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে।

বিভিন্ন মেয়াদে সরকারের নেওয়া পরিকল্পনার তথ্য তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী জানান, বর্তমানে মোট ১৫ হাজার ৯৩৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৪৮টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণাধীন রয়েছে। এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো ২০১৯ হতে ২০২৭ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে চালু হবে। এছাড়া ৩ হাজার ২৭৭ মেগাওয়াট ক্ষমতার ১৪টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের চুক্তি সাক্ষর প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো ২০২১ হতে ২০২৪ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে চালু হবে। অন্যদিকে এক হাজার ১৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৮টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের লক্ষ্যে দরপত্র প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

‘এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো ২০২১ সাল হতে ২০২৪ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে চালু হবে। এছাড়াও ১৯ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ১৭টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ পরিকল্পনাধীন রয়েছে। এনিয়ে মোট ৮৭টি কেন্দ্র হতে ৩৯ হাজার ৮৬২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। এছাড়াও আঞ্চলিক সহযোগিতার ভিত্তিতে ভারত হতে ২ হাজার ৮৩৬ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎ আমদানি কার্যক্রম অব্যহত রয়েছে। যা ২০২২ সালের মধ্যে চালু হবে। বর্তমানে (২০১৮-১৯ অর্থ বছরে) প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের গড় উৎপাদন ব্যয় ৬ দশমিক ০১ টাকা।’

একই সংসদ সদস্যের অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানান, বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর হতে বিগত ১০ বছরে ৬ বার বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এরমধ্যে ২০১১ সালে দুই বার এবং ২০১২, ২০১৪, ২০১৫ এবং ২০১৭ সালে একবার করে। এই মুহুর্তে বিদ্যুতের মূল্য কমানোর কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই বলেও তিনি জানান।

কালের আলো/এনআর/এনএল

Print Friendly, PDF & Email