যুক্তি দিয়েই মিথিলার পক্ষে নারীরা!

প্রকাশিতঃ 10:29 pm | November 05, 2019

কালের আলো ডেস্ক:

নির্মাতা ও পরিচালক ইফতেখার আহমেদ ফাহমির সঙ্গে অভিনেত্রী রাফিয়াত রশিদ মিথিলার অন্তরঙ্গ মুহূর্তের কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে চলছে নানা তর্ক-বিতর্ক।

আরও পড়ুন: ভাইরাল হওয়া ছবিতে ‘মানহানি’র বিষয়ে মিথিলার মামলা ও বক্তব্য

বিষয়টিকে যেমন অস্বাভাবিক বলছেন না মিথিলা, তেমনি তার পাশে দাঁড়িয়েছেন নারী নেত্রীরাও। মিথিলার পক্ষে তারা লিখেছেন যুক্তিদিয়েই।

এ বিষয়ে লেখক শিল্পী জলি তার ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। যেখানে তিনি লিখেছেন, মিথিলার তাহসানের সাথে ছাড়াছাড়ি হয়ে গিয়েছে। আপাতত সে সিঙ্গেল এবং সে যে বয়সী তাতে তার আরও প্রেম বা বিয়ে হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। এখন কাউকে ভালোবেসে সে যদি অন্তরঙ্গ হয়, জড়িয়ে ধরে, অথবা চুমু খায় এগুলো তার বয়সী একজন মানুষের অতি সাধারণ আচরণ।

তিনি আরও লিখেছেন, আবার প্রেম, চুমু, বা আরও কিছু হবার পরও যে মানুষের তার সাথে বিয়ে হতেই হবে তেমনও কোন যুক্তি নেই। বিয়ে একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং প্রতিটি মানুষেরই অনেক ভেবে-চিন্তে-বুঝে বিয়ে করা উচিত।

‘তাঁর একটি সন্তানও আছে তাই তাকে এমন একজন মানুষকে খুঁজে পেতে হবে যার উপর সে তার সন্তানকেসহ নির্ভর করতে পারে। দুঃখজনক হলেও সত্যি যে আমাদের দেশে তেমন একজন বর খুঁজে পাওয়া আসলেই কঠিণ–কেননা দেশের খুব কম পুরুষই আছেন যারা মেয়েদেরকে সন্মান করতে শেখেন।’

তিনি লিখেছেন, প্রেমের মাধ্যমে একটি মানুষকে চেনার সুযোগ সৃষ্টি হয় মাত্র যদিও অধিকাংশেরই চাওয়া থাকে কারও সাথে একবার প্রেম হলে তাকে বিয়ে করার বাধ্যবাধকতা থাকবে যেহেতু মানুষের মনের চাওয়াটি তেমনই ।

‘বিয়ের পরই ছাড়াছাড়ির বিধান রাখা হয়েছে সেখানে প্রেমের সময়ই যদি একপক্ষ মনে করে অথবা টের পেয়ে যায় ‘তাকে আর চাই না আমার জীবনে’ তাহলে ওখানেই বিষয়টির ইতি টানা জরুরী।

ভালোবাসা আর অনুভূত না হলে অথবা দু’জন দু’জনের সাথে আজীবন থাকতে না চাইলে সেই প্রেমকে টেনে নিয়ে বিয়েতে গড়ালে ফলাফল আরও খারাপ হবার সম্ভাবনা। কেননা সময় গেলে, পার্টনার আরও পুরোনো হলে প্রেমের ঘোর যত কাটে তার দোষগুলোও তত প্রকট হতে থাকে।’

শিল্পী জলি লিখেছেন, মানুষের জীবনে একটি প্রেম, একটি বিয়ে, একজনকেই চুমু, তার সাথেই সহবাস, পরিণামে একটি ছেলে একটি মেয়ে– মোট দু’টি সন্তান, এবং আজীবন ভালোবাসায় ভরপুর একটি ঘর…. জীবনের অংক এমন সরল নয়।

‘জীবন বাঁকে বাঁকে বাঁক নেয়। কারও জীবনই প্লানমাফিক আগায় না। মিথিলার জীবন তার নিজের–তার জীবনকে সে তার নিজের মত করেই যাপন করবে এটাই সহজ হিসেব। বাইরে থেকে কোন তৃতীয় পক্ষ তাকে জাজ করলে সেই হিসেবে অনেক গলদ থেকে যাবে। তার ব্যক্তিগত ছবিগুলো ওভাবে ছড়িয়ে দেয়া খাঁটি শয়তানের কর্ম বই আর কিছু নয়।

মানুষই মানুষকে ভালোবাসে। সেও হয়ত ভালোবেসেছে, ভবিষ্যতেও ভালোবাসবে– সে ভালোবাসা টিকতেও পারে আবার নাও টিকতে পারে ! তাই বলে কারও জীবন কী থেমে থাকে?’

শিল্পী জলির মতো আরেকজন অনলাইন অ্যাক্টিভিটিস ও ৭১ ফাউন্ডেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রীতি ওয়ারেসাও মিথিলার পক্ষে যুক্তি দিয়েছে।

তিনি একটি ছবি পোস্ট করে তার সাথে লিখেছেন, এটি একজন নারীর ছবি। ছবিটাকে যদি বেদনাক্রান্ত দেখাতো তাহলে আপনারা যারপর নাই খুশি হতেন। কেন বলছি? নিজেকেই প্রশ্ন করুন উত্তরটা সহজ। আচ্ছা, বহুল আলোচিত সাম্প্রতিক একটি ঘটনা প্রসঙ্গেই বলি। ধরে নেই একজন নারী তার বিশেষ কোন পুরুষকে নিয়ে সুখী। সেটা জানামাত্র বিষয়টা আপনাদের বুকে শূলের মত বিঁধতে থাকবে।

‘নারীটি তার পছন্দের পুরুষকে চুমু খেতে পারবে কীনা, তার সাথে শুতে পারবে কীনা সেটার নীতি নির্ধারণকারী হিসেবে দাঁড়িয়ে যাবে নিখিল বঙ্গ। অবিবাহিত, ডিভোর্সি কিংবা একাকী নারীর যৌনজীবনের কোন অধিকার নেই। নারী যতবেশী অসুখী সমাজে ততবেশীই সতী, আপনারাও খুশি। সমাজে নারীর যৌন অবদমন প্রক্রিয়াকে তুমুলভাবে অভিনন্দিত করা হয়েছে। যারা এই প্রক্রিয়াকে অভিনন্দিত করছে তাদের গোপন সঙ্গ প্রসঙ্গে নাই-বা বলি। তাদের নিজের জীবনে এসব সঙ্গ কোন ব্যাপারই না। সঙ্গ গ্রহণের পরে সেই নারীকে সমাজে বেশ্যা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করাও সামাজিকতা।’

তিনি লিখেছেন, ভাবছেন ঘটনা শেষ! জ্বী-না। সঙ্গসুখ না পেলেও জাতির অবচেতন সুখপ্রক্রিয়া কিন্তু চলমান। চলমানতার অংশ হলো কারো ব্যক্তিগত জীবনকে আলোচনার বিষয়বস্তু করা। যত বেশি রসিয়ে রসিয়ে আলোচনা তত বেশি সুখ। ..’

কালের আলো/ডিআর/এমও

Print Friendly, PDF & Email