শান্তিতে নোবেল পেলেন ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিতঃ 3:46 pm | October 11, 2019

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, কালের আলো:

চলতি বছর শান্তিতে নোবেল পেয়েছেন ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ। তিনি প্রতিবেশী ইরিত্রিয়ার সঙ্গে দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব ও দেশটির মধ্যে জাতিগত সংঘাত নিরসনের কারিগর হিসেবে পরিচিত।

শুক্রবার(১১ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টায় রাজধানী অসলো থেকে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি শান্তিতে নোবেল বিজয়ী হিসেবে আবি আহমেদের নাম ঘোষণা করে।

নোবেল শান্তি পুরস্কারের ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্য মতে, এ বছর নোবেল পুরস্কারের জন্য ৩০১টি মনোনয়ন জমা পড়েছে। যার মধ্যে ২২৩ জন ব্যক্তি এবং বাকি ৭৮টি প্রতিষ্ঠান। তবে গত ৫০ বছর ধরে বিজয়ীর নাম ঘোষণা করার আগে মনোনীতদের তালিকা প্রকাশ করে না নোবেল প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ।

নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি শান্তিতে নোবেল বিজয়ী হিসেবে আবি আহমেদের নাম ঘোষণা করে বলে, এবার শততম নোবেল শান্তি পুরস্কার পেলেন আবি আহমেদ। শান্তি এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য চলতি বছর তাকে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করা হলো।

২০১৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি জোটের নেতা হেইলেমারিয়াম হঠাৎ জোটের প্রধান ও প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়ার ঘোষণা দেন। তিন বছর ধরে দেশটির আদিবাসী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। হেইলেমারিয়াম রাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে ছয় মাসের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করেছিলেন।

হেইলেমারিয়ামের পদ ছাড়ার পরই তার উত্তরসূরি হিসেবে ক্ষমতা পান ওরমো ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ৪২ বছর বয়সী আবি। মানবাধিকার লঙ্ঘন, ভিন্নমতাবলম্বীদের দমন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোেগ রয়েছে ইথিওপিয়ার সরকারের বিরুদ্ধে।

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণের পর সরকারে বেশ কিছু পরিবর্তন আনেন আবি আহমেদ। এর মধ্যে কিছু ওয়েবসাইট ও টেলিভিশন চ্যানেলও অবরোধমুক্ত করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রতিজ্ঞা করেন, তিনি একটি নতুন ইথিওপিয়া উপহার দেবেন। সব জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধি নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনায় সমতা আনবেন।

গত বছরের এপ্রিলের আগে দেশজুড়ে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস, গুম, হত্যা ও নির্যাতন এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে ইথিপিয়ার মানুষ তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বাধ্য হয়। মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ, সামাজিক যোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ, ভিন্নমত দমন, জাতিগত দাঙ্গায় উসকানি—এসব ছিল গত এক দশকের ইথিওপিয়ার চালচিত্র

২০১৯ সালের নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা শুরু হয়েছে গত ৭ অক্টোবর থেকে। ওইদিন স্টকহোম ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট থেকে চিকিৎসাবিদ্যায়, দ্য রয়াল ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স থেকে ৮ অক্টোবর পদার্থবিদ্যায়, ৯ অক্টোবর রসায়নবিদ্যায় এবং ১০ অক্টোবর সাহিত্যে নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়।

গত বছর যৌন সহিংসতা ও হয়রানির ব্যাপারে বিশ্বজুড়ে সচেতনতা তৈরির আন্দোলন করে শান্তিতে নোবেল পেয়েছিলেন কঙ্গোর ধাত্রীবিদ্যাবিশারদ ডেনিস মুকওয়েজি এবং জঙ্গিদের হাতে ধর্ষণের শিকার ইয়াজিদি নারী নাদিয়া মুরাদ।

কালের আলো/এনআর/এমএম

Print Friendly, PDF & Email