উন্নত দেশ হতে দরকার শতবছরের পরিকল্পনা: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী

প্রকাশিতঃ 7:33 pm | October 05, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

উন্নত দেশ হতে শতবছরের পরিকল্পনা দরকার বলে মনে করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

তিনি বলেছেন, উন্নত রাষ্ট্রে যেতে সাড়ে ১২ হাজার ডলারের বেশি মাথাপিছু আয় হতে হবে। অর্থাৎ ওই সময়ে মানুষের আয় বাড়বে। আর হাতে টাকা থাকলেই মানুষ উন্নত জীবন চাইবে। তখন গ্রামের মানুষও ব্যাপকভাবে গাড়ি কিনবে। অথচ বিদ্যমান গ্রামের যে সড়ক অবকাঠামো, তা দিয়ে জীবনযাপন সম্ভব হয়ে উঠবে না। তাই বিদ্যমান গ্রামগুলোকে এখন থেকেই শহরের আদলে গড়ে তুলতে হবে।

‘গতানুগতিক বাড়িঘর নয়, বরং বহুতল ভবন তৈরি করে অনেক পরিবারকে একটি ভবনে থাকার সুযোগ দিয়ে রাস্তা এবং চাষের জমি বৃদ্ধি করতে হবে। এজন্য ২০ বছরের পরিকল্পনা দিয়ে হবে না, দরকার একশত বছরের পরিকল্পনা এবং তারপরেও কী হবে তার পরিকল্পনাও আপনার থাকতে হবে।’

শনিবার(০৫ অক্টোবর) বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) আয়োজিত ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন আরবান অ্যান্ড রিজিওনাল প্লানিং ২০১৯’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিআইপি সভাপতি এ কে এম আবুল কালামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য বিআইপি বোর্ড সদস্য গোলাম রহমান।

মন্ত্রী বলেন, ‘২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশের রূপান্তরিত হতে হলে ওই সময়ে দেশের জনসংখ্যা কত হবে, তাদের জীবনধরণ কি হবে, প্রত্যেকটি গ্রামকে কিভাবে শহরে উন্নীত করা যায়, কৃষিকাজ কিভাবে হবে, মানুষের কর্মসংস্থান কি হবে, ওই সময়ের উপযোগী শিক্ষা এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা কিভাবে গড়ে তুলতে হবে- এসব বিষয়ে পরিষ্কার একটি পরিকল্পনা থাকতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে প্রতি একর জমি থেকে কৃষক লাভ করতে পারে চার হাজার টাকার মতো। তখন পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে কৃষিকাজের মাধ্যমে খরচ কমে যাবে। তখন প্রতি একরে ২৪ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভের সুযোগ তৈরি হবে।’

“আবার চাষির সন্তান চাষি হতে চায় না। তাই বিপুল ফলন ফলিয়ে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প গড়ে তুলতে হবে। যাতে কৃষকের সন্তানের ওই জায়গায় কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়।”

এজন্য মন্ত্রী প্রত্যেক উপজেলা পর্যায়ে একজন করে পরিকল্পনাবিদের প্রয়োজন রয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।

এ পরিকল্পনা সারা দেশে শুরু করার আগে মডেল হিসেবে একটি গ্রামকে শহর করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানান তিনি।

“গ্রামকে শহরে উন্নীত করার একটি মডেল ঢাকার উত্তরে করার জন্য একজন অতিরিক্ত সচিবকে প্রধান করে একটি কমিটি করেছি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে সামারি পাঠিয়েছি। উনি অ্যাপ্রুভ করেছেন, শিগগিরই আপনারা একটা কিছু দেখতে পারেন।”

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে গোলাম রহমান বলেন, “দেশ গড়তে সুদুর প্রসারী পরিকল্পনা নিতে হবে। সরকারের ইশতেহার অনুযায়ী সারা দেশকে শহরে উন্নীত করতে প্রথমে রাজধানী তারপর বিভাগীয় শহর এরপর জেলা শহর এভাবে ক্রমান্বয়ে হবে না।”

এজন্য নিজস্ব সংস্কৃতি, মানুষের আয় ও জীবনযাপন এবং সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা নিয়ে এগোনর পরামর্শ দেন তিনি।

কালের আলো/এনআর/এমএম

Print Friendly, PDF & Email