প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দলে ‘শুদ্ধি অভিযান’ অব্যাহত থাকবে

প্রকাশিতঃ 10:01 pm | September 23, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, চলমান অভিযানে যারা গা-ঢাকা দিয়েছে তাদেরও খুঁজে বের করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে অভিযান অব্যাহত থাকবে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সবাই ধোয়া তুলসীপাতা নয়। দলে শুদ্ধি অভিযান চলছে, চলবে।

সোমবার(২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৩তম জন্মবার্ষিক উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ৭৩ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি প্রদান উপলক্ষে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটি ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

দুর্নীতিবাজদের নিয়ে বিএনপির বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, যা অতীতের শাসকরা করতে পারেনি, খালেদা জিয়া পারেননি, আজকে জননেত্রী শেখ হাসিনা করতে পেরেছেন। অপকর্ম, সন্ত্রাস, দুর্নীতি, চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা দেশে যে বার্তা দিয়েছেন, বিএনপি আজকে এর বিরূপ মন্তব্য করছে। তাদের শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ দেওয়া উচিত ছিল।

বিএনপির উদ্দেশে সেতুমন্ত্রী বলেন, আপনাদের আমলে বিএনপির কোনো স্তরের নেতাকর্মীদের কোনো অপরাধের জন্য শাস্তি পেতে হয়নি। আমাদের অনেক নেতাকর্মী আজকে জেলে। অনেক নেতা, এমপি, মন্ত্রী দুদকের মামলায় হাজিরা দিচ্ছেন। আওয়ামী লীগের মেয়র জেলে, এমপি-মন্ত্রীরা আদালতে হাজিরা দিচ্ছেন। আর আমাদের দলের নেতারা দুদকের মামলায় জড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে যাওয়ার পর তিনি বলে দিয়েছেন, ‘আমি দুদকের ওকালতি করি না’।

আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে অনেকেই নানা অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন- এমনটা স্বীকার করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তবে আওয়ামী লীগ ধোয়া তুলসীপাতা না, এখানে কেউ অপকর্ম, চাঁদাবাজি, গডফাদারি করে না- এটা বলছি না। বিএনপি শুরু করেছিল হাওয়া ভবন সংস্কৃতি। এই হাওয়া ভবন ছিল দুর্নীতির আখড়া, হাওয়া ভবন খাওয়া ভবনে পরিণত হয়। এই হাওয়া ভবন ছিল লুটপাটের খাওয়া ভবন। এই বিএনপি নেতাদের মুখে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলা ভূতের মুখে রাম রাম ছাড়া আর কিছুই না।

জুয়া, ক্যাসিনোর টাকা কোন কোন নেতার কাছে যেত, তা খুঁজে বের করা হচ্ছে জানিয়ে সরকারের এই মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা কাউকে ছাড় দিবেন না। শেখ হাসিনার অ্যাকশন শুরু হয়ে গেছে। অনুপ্রবেশকারীরাও এখানে আছে, খুঁজে খুঁজে অপকর্মকারীদের, সন্ত্রাসীদের, দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজদের বের করবেন। খুঁজে বের করা হচ্ছে। অন্যায়ভাবে অর্জিত অর্থ কোন কোন নেতার কাছে যেত তা বের করা হচ্ছে। অনেক বিএনপি নেতার কাছেও এই ক্যাসিনোর টাকা গেছে, এই খবর গণমাধ্যমে বেরিয়ে আসছে। এই প্রশ্নেরও জবাব বিএনপিকে দিতে হবে। শেখ হাসিনা ঘর থেকে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছেন। সারা দেশের মানুষ অ্যাপ্রিশিয়েট করছে। আর বিএনপি আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিবাজ, আত্মস্বীকৃত সন্ত্রাসী দল। এটা তাদের দলীয় গঠনতন্ত্র থেকে সাত ধারা বাদ দেওয়ার মধ্য দিয়েই প্রমাণিত।

ছাত্রলীগকে সুনামের ধারায় ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়ে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ছাত্রলীগের দায়িত্ব পরিবর্তন হয়েছে, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে আমি এখানে দেখতে পাচ্ছি। তাদের উদ্দেশে বলতে চাই, রাজনীতিকে বঙ্গবন্ধুর চির বিজয়ী আদর্শে ফিরিয়ে আনতে হবে। ছাত্রলীগকে সুনামের ধারায় ফিরিয়ে আনতে হবে। শেখ হাসিনার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে হলে, তোমাদের খারাপ খবরের শিরোনাম হওয়া যাবে না। ছাত্রলীগ ভালো খবরের শিরোনাম হবে—এটাই আমরা আশা করি।

আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটির চেয়ারম্যান এ এফ ফখরুল ইসলাম মুন্সীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান, জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান ও রফিকুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক সামসুন্নাহার চাঁপা, কেন্দ্রীয় সদস্য আনোয়ার হোসেন, ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য প্রমুখ।

কালের আলো/এনএল/এমএইচএ

Print Friendly, PDF & Email