লঘুচাপে ঝড়-শিলাবৃষ্টি, কৃষকের মাথায় হাত

প্রকাশিতঃ 7:22 pm | March 30, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ঝড়, শিলাবৃষ্টি হচ্ছে। আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিম বঙ্গ এবং এর আশে পাশের এলাকায় অবস্থান করছে। আর মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

আবহাওয়াবিদ মিজানুর রহমান বলেন, এটা কালবৈশাখীর লক্ষণ। রাতে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় আরও বৃষ্টিপাত হতে পারে।

শুকবার (৩০ মার্চ) বিকেলে দমকা বাতাস বয়ে যায় রাজধানী ঢাকাসহ কয়েকটি জেলায়। এয়ারপোর্ট এপিবিএন-এর অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আসলাম শাহজাদা সারাবাংলাকে বলেন, প্রচণ্ড বাতাস আর বৃষ্টির কারণে প্রায় আধা ঘণ্টা যাবৎ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ ওঠানামা বন্ধ রয়েছে। আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে ফের ফ্লাইট চলাচল শুরু হবে।

এদিকে ঝড়ের প্রভাবে বিকেলেই যেন রাত নেমে আসে ঢাকায়।

এর আগে দুপুরে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী ও ফুলবাড়ী উপজেলায় বয়ে যায় দমকা বাতাস। সঙ্গে শিলাবৃষ্টি। এতে বসতবাড়ি, বোরো ধান এবং মৌসুমী ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। প্রায় ২০ মিনিট স্থায়ী বৃষ্টি। স্থানীয়রা জানান, ২৫০ গ্রাম ওজনের শিলাবৃষ্টি হয়েছে।

নাগেশ্বরী, রামখানা, রায়গঞ্জ, নেওয়াশী, সেনপাড়া, বামনডাঙ্গা, গাগলা ও কালিগঞ্জের কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এছাড়াও ফুলবাড়ী উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের কদমেরতল, বালাবাড়ী ও অনন্তপুরে ব্যাপক শিলাবৃষ্টি হয়েছে।

দুই উপজেলার প্রায় শতাধিক ঘর-বাড়ির পুরনো টিন নষ্ট হয়ে গেছে শিলাবৃষ্টিতে। ভুক্তভোগীরা জানান, শিলাবৃষ্টির সঙ্গে ছিল দমকা বাতাস। ঝড়ে উড়ে গেছে বেশ কিছু ঘরের চাল। এসময় ভেঙে পড়ে গাছপালা।

নাগেশ্বরী এলাকার গোলাম কিবরিয়া জানান, শিলাবৃষ্টিতে ঘরের চাল নষ্ট হয়েছে। ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। নাগেশ্বরী উপজেলার নেওয়াশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন জানান, তার এলাকায় কৃষকদের মাথায় হাত। মাঠের ফসল পুরো নষ্ট হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ঘর-বাড়ি।

রায়গঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল্ল্যা আল ওয়ালিদ জানান, তার এলাকায় আগাম বোরো ধান, সুপারি বাগান ও মৌসুমী সবজি-ফল নষ্ট হয়ে গেছে। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে।

নাগেশ্বরী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শামসুজ্জামান বলেন, শিলাবৃষ্টিতে বোরো ধানের পাতায় কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে ফসলে এর তেমন প্রভাব পড়বে না।

সিলেট আবহাওয়া অধিদফতরের উচ্চ পর্যবেক্ষক সাজেদুল ইসলাম সারাবাংলাকে জানান, বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২২.৮ মি.মি. বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে সিলেট সদরে বিকেল ৪টা ২৮ থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত দুই মিনিট ঘূর্ণিঝড় বয়ে যায়। এ সময় বাতাসের গতি ছিল ঘণ্টায় ৭৮ কিলোমিটার।

পঞ্চগড়ে সকাল ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ঝড়ো হাওয়া সহ শিলাবৃষ্টি হয়েছে। পরে আবার ঘণ্টাব্যাপী বৃষ্টি হয়েছে। শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

 

কালের আলো/ওএইচ

Print Friendly, PDF & Email