আফিফ-মোসাদ্দেকের ব্যাটে বাংলাদেশের রোমাঞ্চকর জয়

প্রকাশিতঃ 11:41 pm | September 13, 2019

স্পোর্টস ডেস্ক, কালের আলো:

বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যানরা সব হতাশ করে বিদায় নিয়েছিল। সাকিব, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহর মতো ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা যখন দারুণ হতাশার জন্ম দিল বাংলাদেশের ক্রিকেট সমর্থকদের হৃদয়ে, তখন সেটাকে নিমিষে দূর করে দিলেন আফিফ হোসেন ধ্রুব।

বয়স মাত্র ২০ ছুঁই ছুঁই। মোসাদ্দেক হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে এই বয়সে দলকে নিশ্চিত হার থেকে রক্ষা করলেন এই তরুণ ক্রিকেটার। বাংলাদেশকে এনে দিলেন ৩ উইকেটের এক লজ্জা এড়ানো জয়।

ক্যারিয়ারের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে হাফ-সেঞ্চুরি নিয়ে ৫২ রান করেন আফিফ। আর ২৪ বলে ৩০ রানে অপরাজিত ছিলেন মোসাদ্দেক।

জিম্বাবুয়ের দেওয়া ১৪৫ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো করলেও মাঝপথে হোঁচট খায় বাংলাদেশ। দ্রুত চার উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় স্বাগতিকরা।

ইনিংসের ৩য় ওভারে বোল্ড হন লিটন কুমার দাস। ফেরার আগে তাঁর ব্যাট থেকে আসে ১৯ রান। টেস্টে ব্যর্থ সৌম্য সরকার টি-টোয়েন্টিতেও ব্যর্থ। সাত বলে ৪ রান নিয়ে চতুর্থ ওভারে বিদায় নেন তিনি। এরপর একে একে ফিরে যান মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ্ রিয়াদ ও সাব্বির রহমান।

৬০ রানে মূল ছয় ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে যায়। চরম চাপে পড়া বাংলাদেশ শিবিরে অষ্টম উইকেটে প্রাণ ফেরান আফিফ ও মোসাদ্দেক। গত বছর অভিষেকের পর নিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে নেমেই দুর্দান্ত ব্যাট চালান আফিফ। ব্যাট হাতে নেমে প্রথম বলেই চার হাঁকান। দুই বল ডট দিয়ে আবারো জোড়া বাউন্ডারি। সঙ্গে হাত খুলে খেলেন মোসাদ্দেকও। দুজন মিলে গড়েন ৮২ রানের পার্টনারশিপ। এরমাঝে ২৪ বলে হাফ-সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন আফিফ। জয় থেকে তিন রান দূরে থেকে ৫২ রানে আউট হন এই অলরান্ডার। এরপর ছক্কা মেরে দুই বল হাতে রেখে দলের জয় নিশ্চিত করেন সাইফউদ্দিন।

এরআগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে রায়ান বার্লের দুর্দান্ত ইনিংসে ম্যাচে ৫ উইকেটে ১৪৪ রান সংগ্রহ করে জিম্বাবুয়ে।

আজ শুক্রবার সকাল থেকে বৃষ্টিতে আচ্ছন্ন ছিল রাজধানী। তাতে নির্ধারিত সময়ে মাঠে গড়ায়নি বাংলাদেশ বনাম জিম্বাবুয়ের মধ্যেকার ম্যাচটি। পর পর দুইবার মাঠ পরিদর্শনের পর রাত আটটায় ম্যাচটি মাঠে গড়ায়। ম্যাচের দৈর্ঘ্য নেমে আসে ১৮ ওভারে।

বিরুপ আবহাওয়া কাজে লাগাতে টস জিতে আগে বোলিং নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। অধিনায়কের সিদ্ধান্ত ভেস্তে যায়নি। বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচটির শুরুতে বল হাতে দাপট দেখান বাংলাদেশি বোলাররা। জিম্বাবুয়ের দ্বিতীয় ওভারেরই বাংলাদেশকে সাফল্য এনে দেন অভিষেক হওয়া তাইজুল ইসলাম। ফিরিয়ে দিলেন প্রস্তুতি ম্যাচে অপরাজিত ফিফটি করা ব্রেন্ডন টেইলরকে। যার মাধ্যমে প্রথম বাংলাদেশি ও বিশ্বের ১৬তম বোলার হিসেবে অভিষেকের প্রথম বলে উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েন তাইজুল।

ষষ্ঠ ওভারে আঘাত হানেন মুস্তাফিজুর রহমান। মোসাদ্দেকের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরান ক্রেইগ আরভিনকে। ফেরার আগে ১১ রান করেন এই টপ ওর্ডার। এরপর একে একে জিম্বাবুয়ে শিবিরে আঘাত হানেন সাইফউদ্দিন ও মোসাদ্দেকরা। তাতে ৬৩ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে অথিতিরা।

দ্রুত উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া জিম্বাবুয়ের হয়ে হাল ধরেন রায়ান বার্ল। ১৬তম ওভারে বাংলাদেশি অধিনায়ক সাকিবের উপর ঝড় তোলেন তিনি। সাকিবকে ওই এক ওভারে তিনটি চার ও তিনটি ছয় হাঁকান এই ব্যাটসম্যান। তুলে নেন টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ-সেঞ্চুরি। তাঁর ব্যাটে ভর করে নির্ধারিত ওভারে বাংলাদেশের সামনে ১৪৫ রানের টার্গেট রাখে জিম্বাবুয়ে। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩২ বলে ৫৭ রান করেন বার্ল। ৩৪ রান করেন অধিনায়ক মাসাকাদজা। আর ২৬ বলে মাতুমবোডজি করেন ২৭ রান।

বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে ৪৯ রান দিয়ে উইকেট শূন্য ছিলেন সাকিব আল হাসান। সমান একটি করে মুস্তাফিজুর রহমান, তাইজুল ইসলাম, সাইফউদ্দিন ও মোসাদ্দেক হোসেন।

এর মাঝে জিম্বাবুয়ে ইনিংসের ১৭তম ওভার শেষ হওয়ার পরপরই হঠাৎ করে নিভে যায় মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সব ফ্লাডলাইট। আট মিনিট পর খেলা পুনরায় মাঠে গড়ায়।

কালের আলো/এনআর/এমএম

Print Friendly, PDF & Email