ইলেক্ট্রিক বাসের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পরামর্শ মেয়র খোকনের

প্রকাশিতঃ 5:30 pm | September 07, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেছেন, পৃথিবীর আধুনিক শহরগুলো যেখানে পরিবেশবান্ধব গণপরিবহন ব্যবস্থা চালুর চেষ্টা করছে, সেখানে বাংলাদেশকে এখনও শৃঙ্খলা আনার চেষ্টা করে যেতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, কার্বন নিঃসরণ কমাতে ডিজেল বা অকটেনচালিত বাসের বদলে ইলেক্ট্রিক বাস আনার জন্য তারা কাজ করছে। বিষয়টি আমরাও ভেবে দেখতে পারি, কারণ বর্তমানে বিদ্যুতে আমাদের দেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ। আমরা যদি ইলেক্ট্রিক বাস চালু করতে পারি, কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ অনেক কমে আসতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বিষয়টি ভেবে দেখবেন।

শনিবার(৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারস ইনস্টিটিউশনে ‘ঢাকার গণপরিবহনে শৃঙ্খলা রক্ষায় করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

ইঞ্জিনিয়ারস ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের (আইইবি) পুরকৌশল বিভাগ এবং নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরাম যৌথভাবে এ গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে।

মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, সম্প্রতি ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট বাসযোগ্যতার বিচারে বিশ্বের ১৪০টি শহরের যে তালিকা প্রকাশ করেছে, সেখানে ঢাকার অবস্থান দেখানো হয়েছে ১৩৭তম।

“কিন্তু অনেকেই ঢাকাকে বসবাসের অযোগ্য তৃতীয় শহর বলছেন। তা না বলে বসবাসের যোগ্য শহরের মধ্যে ১৩৭তম বললেও তো হয়।”

সমালোচকদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়ে খোকন বলেন, আমরা যখন অস্ট্রিয়ার ভিয়েনার কথা বলি তখন বলি বাসযোগ্য শহরের তালিকার ১ নম্বর। আবার একই তালিকায় থাকা ঢাকাকে বলি বসবাসের অযোগ্য তৃতীয় শহর। এটা কেন?

“একই জরিপে কেউ প্রথমে আছে কেউ শেষের দিকে আছে। তাহলে আমরা এমনভাবে বলি না কেন যে ভিয়েনা বসবাসের অযোগ্য শহরের মধ্যে ১৪০তম…।”

রাজধানীর গণপরিবহন ব্যবস্থায় আগামী দুই বছরের মধ্যে ‘ইতিবাচক পরিবর্তন’ আসবে বলে আলোচনা সভায় আশ্বাস দেন দক্ষিণের মেয়র।

ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (ট্রাফিক, উত্তর) প্রবীর কুমার রায় পথচারীদের ‘অসচেতনতাকে’ রাজধানীর ৯০ শতাংশ দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে চিহ্নিত করে বলেন, ফুটব্রিজ থাকার পরও নগরবাসী তা ব্যবহার করছে না। সেজন্য বনানীতে একটি ‘মডেল’ চালু করা হয়েছে।

“কেউ যদি ওই সড়কে ফুটব্রিজ ব্যবহার না করে পায়ে হেঁটে সড়ক পারাপারের চেষ্টা করে; তবে তাকে এক ঘণ্টা আটকে রাখা হয়। ৫ মিনিট সময়ের চেয়ে যে জীবনের মূল্য বেশি, সে বিষয়ে ওই এক ঘণ্টা তাকে বোঝানো হয়। ট্রাফিক আইনের গুরুত্ব বুঝিয়ে সচেতন করা হয়।”

গণপরিবহনের সমস্যা সমাধানে কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা বা এসটিপি করা হলেও তার কোনো বাস্তবায়ন নেই বলে অভিযোগ করেন পরিবহন বিশেষজ্ঞ এস এম সালেহ উদ্দিন।

তিনি বলেন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের পর প্রধানমন্ত্রী কয়েকটি নির্দেশনা দিলেও তার বাস্তবায়ন হয়নি।

“শহরে সিটি টার্মিনাল নেই। কেন্দ্রীয় ট্রাফিক সিস্টেম এখনো গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। দেশে ভাল ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়ার বা ট্রাফিক ইকোনোমিস্ট নেই।”

গণপরিবহনের বিদ্যমান সমস্যাগুলোর সমাধান করতে হলে দুর্বলতাগুলোর সমাধান করে পরিকল্পিতভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করার ওপর জোর দেন তিনি।

আইইবির পুরকৌশল বিভাগের সভাপতি মো. হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে এ বৈঠকে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) সাবেক নির্বাহী পরিচালক এস এম সালেহ উদ্দিন আহমেদ, আইইবির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. নুরুজ্জামান, সম্মানীয় সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মনজুর মোর্শেদ, পুরকৌশল বিভাগের সম্পাদক শেখ তাজুল ইসলাম তুহিন, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সাধারণ সম্পাদক আদিল মুহাম্মদ খান এ আলোচনায় অংশ নেন।

কালের আলো/এআর/এমএইচএ

Print Friendly, PDF & Email