নিরাপত্তা দেবে যারা, তারাই তো লুট করে যাচ্ছে!
প্রকাশিতঃ 7:59 am | August 18, 2019
কালের আলো ডেস্ক:
বেনাপোল বন্দরে অনিয়ম ও হয়রানি নিয়ে বিভিন্ন সময়ে অনেকেই মুখ খুলেছেন। কতৃপক্ষ বারবার ব্যবস্থা নিলেও বন্ধ হয়নি সেসব অনিয়ম।
সম্প্রতি বেনাপোল বন্দরে এমন হয়রানির শিকার হন শামীমা তুষ্টি নামের একজন সাংস্কৃতিক কর্মী। পরবর্তীতে তিনি তার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা ফেসবুকে শেয়ার করেছেন।
কালের আলোর পাঠকদের জন্য শামীমা তুষ্টির ফেসবুক স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হলো- ‘প্লেনে ও ট্রেনের টিকিট না পাওয়ার কারণে কলকাতা আসতে হলো বাসে, কিন্তু সেই যাত্রা মোটেও আরামের ছিল না, রাত ১০:৪০ মিনিটে বাস ছাড়লো কলা বাগান থেকে, বেনাপোল বর্ডারে পৌঁছালাম ভোর ৪:৫০ মিনিটে, তারপর শুরু হলো অব্যবস্থাপনার চূড়ান্ত কার্যক্রম।
– যে ভবন এর ভেতর দিয়ে ইমিগ্রেশন করে বের হতে হবে সেখানে অগোছালো বিশাল লাইন বিশাল, তার আগা এবং মাথা কোথায় কেউ বলতে পারে না।
-যাক কোন একটাকে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকলাম, পাসপোর্ট কখন আসবে এবং কখন ইমিগ্রেশন এর দরজা কখন খুলবে কেউ জানে না, অপেক্ষার পালা শেষ হয় না, অবশেষে সকাল ৭টায় দরজা খোলা হলো তার পরবাকিটা ইতিহাস।
-কোথায় গেলো সেই লাইন আর কোথায় কি, বাঙ্গালি আমরা তো সবাই আগে যেতে চাই, সময় খুবই কম আমাদের, গতকালের চিত্র দেখার পর সেই কবিতাটা আবার মনে পরলো “সাড়ে সাত কোটির হে বঙ্গ জননী, রেখেছো বাঙ্গালী করে মানুষ করনি” যাক ফিরে আসি ভোগান্তিতে।
-দরজা খোলার পর সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়লো, সেই হুমড়িতে কিছু মানুষ ভেতরে ঢুকতে পারলো, হুড়াহুড়ার কারণে আবার দরজা বন্ধ করে দেওয়া হলো।
-হাজার হাজার মানুষ আটকে গেলো বাইরে সাথে আমরাও, আবারও অপেক্ষা, প্রায় ২ ঘণ্টা অপেক্ষা কিন্তু ভেতরের যাবার দরজা খোলা হয় না, চলছে ধস্তাধস্তি নিরাপত্তা কর্মীদের বিকট বাঁশির আওয়াজ।
-এর মধ্যে দেখতে পেলাম নিরাপত্তা কর্মীরা ৩,৪ জন করে নিয়ে আসেন এবং পেছনের দরজা দিয়ে ঢুকিয়ে দিয়ে যাচ্ছেন।
-পরে একজন বললো আপনিও ঢুকতে চাইলেই পারবেন, আমিও রাজি হলাম কারণ সারাদিন পার হয়ে যাবে দাঁড়িয়ে থাকলে।
-৫০০ টাকার বিনিময়ে আমাদের ৩ জনকে বিশেষ এক প্রক্রিয়ায় পেছনের দরজা দিয়ে ঢুকানো হলো।
– ভেতরে আবার লাইন ও ধাক্কা ধাক্কি, যাক এবার ধাক্কাধাক্কিতে পেছনের থাক্কায় এগিয়ে গেলাম, কোন কারণ ছাড়াই শুধু টাকা খাবার জন্য এই ভোগান্তি।
-এবার পাসপোর্টে সিল দিবো কিন্তু সেই বিশাল লাইন আবার টাকা দিলে আগে যাওয়া যাবে।
-এবার আমি টাকা দেইনি ভাগ্যক্রমে আমার চেহারাটা পরিচিত পড়েছে তাই আমাকে একটু এগিয়ে দেওয়া হলো, কিন্তু তখনও বাইরে হাজার হাজার মানুষ।
-পাসর্পোটে সিল লাগিয়ে গেলাম ইন্ডিয়ান বর্ডারে সেখানে লাগেজ চেক করে ঢুকবার সময় একজন এমনভাবে বসেন যাতে ঢুকতে কেউ না পারে, সেখান থেকে পার হতে গিয়ে আপনাকে টাকা দিতে হবে, না দিলে খামাখা ভোগান্তি, একেকজন ১০০ টাকা করে দিতেই হবে।
-নিরাপত্তা কর্মীদের এই অমানবিকতায় মানুষের ভোগান্তি দেখে আজব হলাম।
-পদে পদে টাকা নিচ্ছে আমাদের যারা নিয়ম শেখাবে, নিরাপত্তা দেবে যারা, তারাই তো লুট করে যাচ্ছে…দেখবে কে?
তারা কি বেতন পায় না? এই মানুষ ঠকিয়ে হারাম টাকা খেয়ে সন্তান পরিবার নিয়ে শান্তিতে আছেন? আমি বা আমরা হয়তো আর বাসে ভ্রমণ করবো না কিন্তু সাধারণ জনগণের এই ভোগান্তি কি করে লাগব হবে?
কে দেখবে? সবার তো এখন টাকাই লাগবে, সেটা অসৎ পথে হোক সমস্যা নাই। আমার প্রশ্ন হলো তাহলে আমাদের বর্ডারগুলো কিভাবে নিরাপদ?
কালের আলো/এফডিআর/এমএম