ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আগামী সাত দিন চ্যালেঞ্জিং : অধ্যাপক সানিয়া
প্রকাশিতঃ 7:45 am | August 18, 2019
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
ঈদের ছুটি শেষে সবাই ঢাকায় ফেরা শুরু করেছে। তাই ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় আগামী সাত দিনকে চ্যালেঞ্জিং বলেছেন সরকারের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক সানিয়া তহমিনা।
শনিবার ( ১৭ আগস্ট) স্বাস্থ্য অধিদফতরে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
অধ্যাপক সানিয়া তহমিনা বলেন, আগামী সাতটা দিন আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং। আবহাওয়া আমাদের অনুকূলে নয়। আমরা যদি এডিসের দুর্গে আঘাত হানতে না পারি, তাহলে পরিস্থিতি কী হবে বলা মুশকিল। এই সাত দিন অবজার্ভ করতে হবে, তারপরই এর ট্রেন্ড বলা যাবে। যতক্ষণ না এটা প্রাক্টিক্যালি দেখা যাবে, ততক্ষণ নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।
তবে স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন্স সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের হিসাব অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় (১৬ আগস্ট সকাল ৮টা থেকে ১৭ আগস্ট সকাল ৮টা) নতুন করে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন এক হাজার ৪৬০ জন। যার মধ্যে ঢাকার ভেতরে ৬২১ জন আর বাইরে ৮৩৯ জন; যা গতকালের তুলনায় ১৫ শতাংশ কম। আবার ঢাকায় নতুন ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৬২১ জন; যা গতকালের তুলনায় ১৮ শতাংশ কম। একইসঙ্গে ঢাকার বাইরের রোগীর সংখ্যাও গতকালের চেয়ে ১৩ শতাংশ কম।
তবে শুধু এই মাসের প্রথম থেকে আজ শনিবার (১৭ আগস্ট) পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৩ হাজার ১৫ জন, গত মাসে এই সংখ্যা ছিল ১৬ হাজার ২৫৩ জন। সংখ্যার হিসেবে আগস্টের অর্ধেকে জুলাইয়ের পুরো মাসের চেয়ে দ্বিগুণ সংখ্যক মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন।
কন্ট্রোল রুমের হিসাব থেকে জানা যায়, এ বছরের জানুয়ারিতে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ছিল ৩৮ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১৮ জন, মার্চে ১৭ জন, এপ্রিলে ৫৮ জন, মে মাসে ১৯৩ জন, জুনে এক হাজার ৮৮৪ জন, জুলাইয়ে ১৬ হাজার ২৫৩ জন এবং এ মাস অর্থাৎ আগস্টের ১৭ দিনে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৩৩ হাজার ১৫ জন। আরও জানা যায়, বর্তমানে দেশের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা সাত হাজার ৮৫৬ জন। এর মধ্যে ঢাকার ৪১টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে রয়েছেন চার হাজার ৪৩ জন, আর ঢাকা শহর ছাড়া ঢাকা বিভাগসহ মোট আট বিভাগে ভর্তি রোগীর সংখ্যা তিন হাজার ৮১৩ জন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গু কর্মসূচির প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. এমএম আক্তারুজ্জামান বলেন, আমরা দেখছি হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে কমছে। আর সম্প্রতি দেশে সিঙ্গাপুর থেকে একজন বিশেষজ্ঞ এসেছেন, তিনি বলেছেন ‘ম্যান অ্যান্ড মসকুইটো কন্ট্রাক্ট’ যেন না হয়। অর্থাৎ নিজেদের মশার কামড় থেকে রক্ষা করতে হবে। হাফ হাতা জামা পরতে হবে। একইসঙ্গে পারসোনাল প্রটেকশান নিশ্চিত করতে হবে। যারা প্রথমবার আক্রান্ত হয়েছেন, তারা যেন দ্বিতীয়বার আক্রান্ত না হন সেজন্য নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।
প্রসঙ্গত, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা আগের দিনের চেয়ে ২৫৯ জন কম। আগের দিন ১ হাজার ৭১৯ জন রোগী ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।
কালের আলো/বিআর/এমএ