শিগগিরই এমপিওভুক্ত হচ্ছে ২৭৪৩ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

প্রকাশিতঃ 9:24 am | August 13, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

শিক্ষা মন্ত্রণালয় এমপিওভুক্তির জন্য বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা চূড়ান্ত করেছে। মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মিলিয়ে ২ হাজার ৭৪৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিগগির এমপিওভুক্ত হচ্ছে। এর বাইরে অনুদান পেয়ে আসা ১ হাজার ৫১৯টি ইবতেদায়ি মাদ্রাসাকে পুরোপুরিভাবে এমপিওভুক্ত করা হচ্ছে।

এই এমপিওভুক্তির ঘোষণা চলতি মাসের শেষে অথবা সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে আসতে পারে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব সোহরাব হোসাইন বলেন, এমপিওভুক্ত ঘোষণার জন্য তাদের প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে।

তিনি বলেন, সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে এই জায়গাতে কোনো ছাড় দেওয়া সম্ভব নয়। যেভাবে কাজ এগিয়ে চলছে তাতে মনে হচ্ছে ঈদের পর কিছুদিনের মধ্যেই এমপিও পাওয়া প্রতিষ্ঠান গুলোর তালিকা প্রকাশ সম্ভব।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, মন্ত্রণালয়ে ৯ হাজার ৬১৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তির আবেদন জমা পড়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে যাচাই-বাছাই করে ২ হাজার ৭৪৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্তির জন্য যোগ্য বিবেচনা করা হয়েছে। ঈদ পরবর্তী এক মাসের মধ্যেই এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকা প্রকাশ করা হবে।

কর্মকর্তারা জানান, যতগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন করেছে, তাদের সবার আবেদন গ্রহণ করলে সরকারের খরচ পড়বে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা। তবে মন্ত্রণালয় যাচাই বাছাইয়ে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে সেগুলোর এমপিওভুক্তি বিপরীতে খরচ হবে দেড় হাজার কোটি টাকা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, আগস্ট মাসের মধ্যেই এমপিও পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম প্রকাশ করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। এ জন্য বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোতে এমপিওর খসড়া তালিকা নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দীপু মনির উপস্থিতিতে একাধিক বৈঠকও করেছেন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

এমপিওভুক্তির কাজের সঙ্গে জড়িত ব্যানবেইসের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, জুলাই মাসেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির কাজ শেষ করতে শিক্ষামন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন কারণে কাজটি শেষ করা যায়নি। তবে এমপিও পাওয়া প্রতিষ্ঠানের তালিকা তৈরির কাজ শেষ হয়ে গেছে বলা যায়। নতুন করে কোনো ঝামেলা না বাঁধলে আগস্ট শেষ হওয়ার আগে এমপিও পাওয়া প্রতিষ্ঠান তালিকা প্রকাশ করা সম্ভব।

জানা গেছে, এমপিওভুক্তির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদনের জন্য এরইমধ্যে তালিকা তৈরি করে রেখেছে মন্ত্রণালয়। তিনি অনুমতি দিলেই তালিকা প্রকাশ করা হবে। সেক্ষেত্রে এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো ১ জুলাই থেকে এমপিওভুক্ত বলে বিবেচিত হবে।

এবার চারটি মানদণ্ড বিবেচনা করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমপিওভুক্ত করা হচ্ছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রতিষ্ঠানের একাডেমিক স্বীকৃতি, শিক্ষার্থীর সংখ্যা, পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এবং পরীক্ষায় পাসের হার। প্রতি বিষয়ে ২৫ নম্বর করে ১০০ নম্বরে মার্কিং করা হয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলোকে।

তবে যেসব এলাকায় যোগ্য প্রতিষ্ঠান পাওয়া যায়নি সেখানে অপেক্ষাকৃত যোগ্য প্রতিষ্ঠানকে এমপিও দেওয়া হবে বলে আগেই জানিয়েছেন ডা. দীপু মনি। এ জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগ আলাদাভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা করছে।

এদিকে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট পরবর্তী ভাষণে সংসদে তিন হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ঘোষণা দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। ফলে বিবেচনায় থাকা ২ হাজার ৭৪৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিও পেলেও বাদ থাকবে আরও ২৫৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানের হাওর, বাওর, পাহাড় অধ্যুষিত দুর্গম ও অনগ্রসর এলাকা থেকে বাছাই করা হবে।

প্রসঙ্গত, এমপিও পাওয়ার অপেক্ষায় থাকা এই তিন হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাইরেও ১ হাজার ৫১৯টি ইবতেদায়ি মাদ্রাসাকে এমপিও দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

কালের আলো/বিও/এমএম

Print Friendly, PDF & Email